‘সোনিয়ার সঙ্গে দেখা করতেই হবে, কোথায় লেখা আছে’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সংবিধানের কোন ধারায় আছে, সোনিয়ার সঙ্গে দেখা করতে হবে? দিল্লি এলেই প্রতিবার দেখা করতে হবে, এরকম কোনও বাধ্যবাধকতা আছে?

Written by SNS Delhi | November 25, 2021 7:51 pm

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo: SNS)

দিল্লি সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গেলে প্রায়ই কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে দেখা করতেন মমতা কংগ্রেস সংসদীয় দলের অফিসেই হোক, কিংবা বা ১০ নম্বর জনপথ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে গিয়ে দেখা করতেন সোনিয়ার সঙ্গে।

এবারও তেমনটাই অনেকেই ভেবেছিলেন। কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে মমতা থাকুক না থাকুক, দিল্লি গেলেই সোনিয়ার সঙ্গে মমতার সৌজন্য সাক্ষাতে খুব একটা খামতি ঘটেনি বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এরপর সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা।

সেখানে সাংবাদিকরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করেন, দিদি, এবার সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে দেখা করলেন না কেন? এর উত্তরে মমতা জানান, এঁরা পাঞ্জাব ভোট নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। তাই সময় চাইনি।

কিন্তু ফের একই প্রশ্ন ধেয়ে আসে সাংবাদিকদের তরফে। এবার কিছুটা বিরক্ত হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সংবিধানের কোন ধারায় আছে, সোনিয়ার সঙ্গে দেখা করতে হবে? দিল্লি এলেই প্রতিবার দেখা করতে হবে, এরকম কোনও বাধ্যবাধকতা আছে? আমি তো বললাম, ওঁরা পাঞ্জাবের ভোট নিয়ে ব্যস্ত, তাই সময় চাইনি কেন একই প্রশ্ন বার বার করছেন? আসলে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে গিয়েছে।

একদিন যে কংগ্রেসের হাত ধরে বাংলার প্রশাসনিক ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমুল, সময়ের ব্যবধানে সেই কংগ্রেস এখন বামেদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে। কংগ্রেসের একাধিক বিধায়ক অতীতে নাম লিখিয়েছেন তৃণমূল শিবিরে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসকে শূন্য হতে হয়েছে তৃণমুলের কাছে।

সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে নিজের দলকে বিস্তার করতে মরিয়া মমতা। ফলে কংগ্রেসের জন্য অযথা সময় নষ্ট করতে রাজি নন তিনি, এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, কংগ্রেসকে ছাড়া বিজেপি বিরোধী জোট কখনওই সম্ভব নয়।

রাজনৈতিক মহলের একাংশ যাই বলুক না কেন, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে নিজেদের আধিপত্যকে বিস্তার করতে তৃণমূল একলা চলো নীতি গ্রহণ করেছে। সে কারণেই কংগ্রেসের ভিন রাজ্যের বিধায়ক-সাংসদরা এখন তৃণমূলে ভিড়ছে। এতদিন রাজ্যে কংগ্রেস সাংসদ-বিধায়করা তৃণমূলে নাম লিখিয়েছিলেন।

এবার ভিনরাজ্যে কংগ্রেসের ঘর ভাঙছে তৃণমূল। ফলে আগামীতে কংগ্রেস ও তৃণমূল সম্পর্ক যে অতীতের মতো আর মধুর থাকবে না, তা বলাই বাহুল্য। যদিও গত দিল্লি সফরে ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। সেই সময় বাদল অধিবেশন চলছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে গিয়ে দেখা করেছিলেন সোনিয়া ও রা গান্ধির সঙ্গে।

পরবর্তী সময়ে সোনিয়ার ডাকা বিজেপি বিরোধী নেতানেত্রীদের বৈঠকেও অংশ নিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু রাজনীতির রং দ্রুত বদল হয়েছে। ফলে সোনিয়ার সঙ্গে মমতার এবার সাক্ষাৎ না হওয়ায় অনেক জল্পনা উস্কে দিচ্ছে, যা আগামীতে জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলে মনে হচ্ছে।