দুই পায়ে দূর্বলতা সঙ্গে মাংসপেশির সমস্যা

Written by SNS April 15, 2024 4:48 pm

গুলেন ব্যারি সিনড্রোম আক্রানত নন তো!
যে কোনো বয়সের শিশু-কিশোর বা নারী-পুরুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে৷জিবিএসের মূল কারণ জীবাণুঘটিত হলেও প্রকৃতপক্ষে জীবাণু প্রতিরোধী ইমিউন সিস্টেমের অস্বাভাবিক আচরণের ফলে এ রোগের উৎপত্তি হয়৷ গুলেন ব্যারি সিনড্রোম বা সংক্ষেপে জিবিএস নামটি অতি অপরিচিত বৈকল্য ও রোগটির প্রাদুর্ভাব ভারত, বাংলাদেশে, মায়ানমারের নেহায়েত কম নয়৷
‘ক্যাম্পাইলো ব্যাকটর জেজুনি’ দ্বারা আক্রান্ত ‘ডায়রিয়ার রোগী বা ইনফ্লুয়েঞ্জা’ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত সর্দি-জ্বরের রোগীরা সাধারণত ‘জিবিএস’-এ আক্রান্ত হয়৷ ডায়রিয়া বা ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরের প্রায় দুই সপ্তাহ পরে রোগী হঠাৎ ধীরে প্রথমে তার দুই পায়ে দুর্বলতা বোধ করে৷ যা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে এবং উপরের দিকে বিস্তার লাভ করে মেরুদণ্ড, দুই হাত, বুকের মাংসপেশি এমনকি মুখের মাংসপেশিতে ছড়িয়ে পড়ে৷ কখনো কখনো দুবলর্তা এত বেশি হয় যে রোগী হাত পায়ের আঙুলও সামান্য পরিমাণ নাড়াতে পারে না৷
বুকের মাংসপেশির দুবর্লতার কারণে শ্বাসকষ্ট হলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালের আইসিইউ বা ‘নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিটে’ স্থানান্তর করতে হয়৷ নতুবা রোগীর মৃতু্যও ঘটতে পারে৷জিবিএস রোগীর এত দুর্বলতা সত্ত্বেও সাধারণ অনুভূতি, স্মৃতিশক্তি, পায়খানা-প্রস্রাবের কোনো সমস্যা হয় না এবং রোগী কখনো অজ্ঞান হয়ে যায় না৷ এসব রোগীকে সবসময় হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়৷ নিউরোলজিস্ট বা স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগের উপসর্গ, শারীরিক পরীক্ষা, এনসিএস নামক স্নায়ুর পরীক্ষা এবং মস্তিষ্কের রস বিশ্লেষণ করে রোগটি নির্ণয় করেন৷
রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস, নাড়ির গতি, ব্লাড প্রেসার ইত্যাদির প্রতি সার্বক্ষণিক লক্ষ রাখতে হয়৷ যদি শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তবে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীকে আইসিইউতে স্থানান্তর করতে হয়৷ নিয়মিত হাত-পায়ের ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, রোগীকে দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে৷ এ রোগের নির্দিষ্ট চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল যা অতি উচ্চবিত্ত ছাড়া গ্রহণ করতে পারে না৷ প্লাজমাফেরোসিস বা আইভি ইমিউনো গ্লোবিনের খরচ প্রায় ৩ থেকে ১০ লাখ টাকা৷ কোনো কোনো রোগীর পুরোপুরি আরোগ্য পেতে প্রায় এক বছর লেগে যায়৷ প্লাজমাফেরোসিস তুলনামূলকভাবে কম ব্যয়বহুল৷ তবে আইভি ইমিউনোগ্লোবিনের খরচ প্রায় ৩ থেকে ১০ লাখ টাকা৷
উপসর্গ শুরুর দুই সপ্তাহের মধ্যে এ চিকিৎসা দিতে হয়৷ এরপরে ইমিউনোগ্লোবিনের কর্যকারিতা থাকে না৷জিবিএস এর ক্ষেত্রে সাধারণত প্রায় ৮০ ভাগ রোগী সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য লাভ করে, ৫-১০ ভাগ রোগী কিছু না কিছু শারীরিক দুর্বলতা স্থায়ীভাবে থেকে যায় এবং প্রায় ৫-৬ ভাগ রোগী মারা যায়৷সাধারণত কোনো ইনফেকশন যেমন ডায়রিয়া বা শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের দুই বা তিন সপ্তাহ পরে জিবিএসএর লক্ষণসমূহ দেখা দেয়৷ কখনো কখনো ভ্যাকসিন দেওয়ার পরেও জিবিএস হতে পারে৷