আচমকাই গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিজয় রূপাণি। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি তার ইস্তফার কথা ঘােষণা করেন। তবে সাংবাদিক বৈঠক করার আগে তিনি রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রতর সঙ্গে দেখা করে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন।
এরপর সাংবাদিকদের মুখােমুখি হয়ে রূপাণি বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বও বদলে যায়। এবার অন্যজনের কাছে দায়িত্ব যাক। আমাকে দল যে দায়িত্ব দেবে, আমি সেই দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রস্তুত। নরেন্দ্র মেদির নেতৃত্বে বিজেপি গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে লড়বে।
Advertisement
উল্লেখ্য, আগামী বছরই গুজরাত বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। নরেন্দ্র মােদি, আনন্দীবেন প্যাটেলের পর ফের গুজরাতের বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীকে পাঁচ বছর মেয়াদের আগে তার পদ থেকে সরে যেতে হল। মােদি যখন প্রধানমন্ত্রী হন ২০১৪ সালে, তারপর আনন্দীবেন প্যাটেল গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হন।
Advertisement
২০১৬-র আগস্ট মাসে তিনি ইস্তফা দেন। বিজয় রূপাণি হন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি রূপাণির নেতৃত্বে ২০১৭ র বিধানসভা ভােটে জয়ী হন। এবার সেই তাকেও বিধানসভা নির্বাচনের এক বছর আগে ইস্তফা দিতে হল।
যতদূর জানা যাচ্ছে, রূপাণি বিভিন্ন সময় সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও সংগঠনকে সেভাবে মজবুত করতে পারেননি এবং নিজের জনভিত্তি আলাদা করে তৈরি করতে পারেননি। সে কারণেই তার উপর চাপ বাড়ছিল। প্রভাবশালী জনগােষ্ঠীর কোনও নেতাকে মুখ করে এগােতে চাইছে গুজরাতের বিজেপি।
নরেন্দ্র মােদি ও অমিত শাহ তাে রয়েছেনই কিন্তু এমন একজন নেতাকে বিজেপি চাইছে, যাঁর নিজস্ব প্রভাব রয়েছে জনগােষ্ঠীর উপর। আর সেই কারণেই ইস্তফা দিতে বলা হয় রূপাণিকে। যদিও রাপাণি এই নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি। পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।
বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ আজ রাতেই গুজরাতে পৌঁছবেন। অন্যদিকে বিদায়ী কৃষিমন্ত্রী আর সি ফালডু, গুজরাতের বিজেপি রাজ্য সভাপতি সি আর পাতিল, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি জিতু বাঘানি, বিদায়ী উপমুখ্যমন্ত্রী নীতিন প্যাটেলের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পুরুষােত্তম রূপালা এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবের নাম নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
বিজেপির ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পি এল সন্তোষের উপস্থিতিতে আজ রবিবার গান্ধিনগরে গুজরাত বিজেপি পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়েছে। প্রবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা এই বৈঠকেই নির্ধারিত হবে বলে জানা যাচ্ছে। সৌরাষ্ট্রের প্রভাবশালী নেতা তথা মন্ত্রী গােধন জাফিয়ার নামও শােনা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে । তবে শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্যে শিকে ছেড়ে তা নিয়েই জল্পনা অব্যাহত।
গুজরাতের কংগ্রেস নেতা হার্দিক প্যাটেল সংবাদমাধ্যমের মুখােমুখি হয়ে রূপাণির পদত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, রাজ্যের অর্থনীতির পরিস্থিতি ভয়াবহ। করােনায় ধাক্কায় অর্থনীতি বিপর্যস্ত। এমনই এক কঠিন সময়ে বিজেপি রাজ্যের কথা না ভেবে, রাজনৈতিক ফায়দা তােলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তন করছে।
Advertisement



