শুক্রবার সকালে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান এবং সেনা, নৌ ও বায়ুসেনা প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই বৈঠকে পর বড় সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। এখন থেকে টেরিটোরিয়াল আর্মিও সাহায্য করবে ভারতীয় সেনাকে। ভারতীয় সেনাপ্রধানকে এই বাড়তি ক্ষমতা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, টেরিটোরিয়াল আর্মি রুল, ১৯৪৮-এর ৩৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী এবার থেকে সেনাপ্রধান টেরিটোরিয়াল আর্মির প্রতিটি অফিসার এবং নথিভুক্ত সদস্যকে প্রয়োজনে ডেকে পাঠাতে পারবেন। তাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োগ করা হতে পারে। সেনার রসদ পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও পালন করতে হতে পারে তাঁদের।
টেরিটোরিয়াল আর্মির ৩২টি ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের মধ্যে ১৪টি ব্যাটালিয়নকে পুরোপুরি নিযুক্ত করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই ব্যাটালিয়ানগুলিকে ভারতীয় সেনা বাহিনীর দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম, কেন্দ্র, উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম, আন্দামান ও নিকোবর কমান্ড এবং আর্মি ট্রেনিং কমান্ড-এ মোতায়েন করা হবে।
ভারতের টেরিটোরিয়াল আর্মি হল স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গঠিক একটি সামরিক সংস্থা, যা ভারতীয় সেনা বাহিনীকে সহায়তা করে থাকে। এটি অফিসার, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার, নন-কমিশনড অফিসার এবং ভারতীয় সেনা বাহিনীর মতো পদধারী অন্যান্য কর্মীদের নিয়ে গঠিত, যাঁদের বেসামরিক পেশাও রয়েছে।
শুক্রবার সকালে সেনা বাহিনীর তিন প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেনা প্রধান অনিল চৌহান ছাড়াও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আর্মি চিফ জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং এবং নেভি চিফ অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠী। তার পরই এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়।
এই বৈঠকের একটি ছবি ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, সকলের মুখেই রয়েছে মৃদু হাসি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও বড় প্রত্যাঘাতের ছক কি তৈরি? সেনার তরফে কি বড় কোনও পদক্ষেপ করা হবে? এরকমই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, মূলত ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্য এবং পাকিস্তানের পাল্টা আক্রমণের প্রেক্ষিতে সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির মূল্যায়নের জন্যই এই বৈঠক।
এদিকে শুক্রবার সকাল থেকেই একের পর এক বৈঠক করে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আইবি চিফ তপন ডেকা তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল শাহর সঙ্গে বৈঠক করেন। নয়াদিল্লিতে নিজের বাসভবনে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে বিএসএফ এবং সিআইএসএফের প্রধানদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন শাহ।
প্রসঙ্গত, বুধবার ভোররাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জায়গায় ২৪টি মিসাইল হামলা চালায় ভারত। মাত্র ২৫ মিনিটের অভিযানে প্রচুর জঙ্গি হতাহত হয়। এর পাল্টা জবাবে পাকিস্তান নির্বিচারে গোলাবর্ষণ শুরু করে সীমান্তে। ভারতীয় সেনা জানিয়েছে, পাকিস্তানের এই হামলায় জম্মু ও কাশ্মীরে অন্তত ১৬ জন বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
