• facebook
  • twitter
Tuesday, 19 August, 2025

সরকারি চাকরি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়ার অধিকার নয়: সুপ্রিম কোর্ট

ঘটনাটি ২০১৫ সালের। সেন্ট্রাল এক্সাইজ বিভাগের প্রধান কমিশনার পদে কর্মরত এক আধিকারিকের মৃত্যু হয়। তাঁর জায়গায় চাকরির আবেদন জানান তাঁর ছেলে রবি কুমার।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

উত্তরাধিকার সূত্রে সরকারি পাওয়ার দিন এবার শেষ হতে চলেছে। সরকারি চাকরি থেকে পরিবারের একজন সদস্যের অবসর বা মৃত্যুর পর বাড়ির অন্য কারও সেই চাকরি পাওয়ার অধিকার জন্মায় না। রাজস্থানের এক বাসিন্দার করা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, চাকরি দেওয়ার একমাত্র ভিত্তি হতে পারে আর্থিক দুর্দশা ও পরিবারের আপৎকালীন পরিস্থিতি। সুতরাং সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরি পাওয়াটা কারও ব্যক্তিগত অধিকারের পর্যায়ে পড়ে না। বিশেষ পরিস্থিতিতে সেটা বিবেচনার বিষয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আদালত আরও জানিয়েছে, পরিবারে সরকারি কর্মীর মৃত্যুই সেই পরিবারের অন্য কোনও সদস্যের সরকারি চাকরি পাওয়ার কারণ হিসেবে যথেষ্ট নয়। বরং দেখতে হবে ওই সরকারি কর্মীর মৃত্যুর ফলে তাঁর পরিবারে চরম আর্থিক সঙ্কট নেমে এসেছে কিনা।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায় শুধু এক মামলার নিষ্পত্তি নয়, ভবিষ্যতে বহু মামলার ক্ষেত্রে পথ দেখাবে। কারণ, এতদিন বহু ক্ষেত্রেই সরকারি চাকরিকে পারিবারিক অধিকারের মতো দেখা হচ্ছিল। এই রায় সেই সব পরিবার বা ব্যক্তিদের একটি স্পষ্ট বার্তা দিল বলে মনে করা হচ্ছে।

ঘটনাটি ২০১৫ সালের। সেন্ট্রাল এক্সাইজ বিভাগের প্রধান কমিশনার পদে কর্মরত এক আধিকারিকের মৃত্যু হয়। তাঁর জায়গায় চাকরির আবেদন জানান তাঁর ছেলে রবি কুমার। রবি তাঁর বাবার দপ্তরেই সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরির আবেদন করলে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়। তাঁর এই আবেদন মঞ্জুর না করার কারণ হিসেবে রবি কুমারের পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতাকে উল্লেখ করা হয়। কারণ, তাঁদের দুটি বাংলো ও ৩৩ একর জমি রয়েছে। এছাড়া বাবার মৃত্যুর পর প্রতি মাসে ৮৫ হাজার টাকার পেনশন পাচ্ছে পরিবার। ফলে চাকরির জন্য ‘সহানুভূতি’ দেখানোর মতো কোনও পরিস্থিতি নেই।

কিন্তু বিভাগীয় দপ্তরের ওই যুক্তি মানতে নারাজ ছিলনা রবি কুমার। তিনি বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। কিন্তু আদালতও একই রায় দেন। এই মামলায় বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, ‘সরকারি চাকরি উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়ার বস্তু নয়। এটা কোনও নিয়ম বা অধিকার নয়। বরং মৃত্যুর ফলে যদি পরিবারে চরম আর্থিক অনিশ্চয়তা নেমে আসে, তাহলে তা বিবেচ্য হতে পারে। কিন্তু পরিবারের স্থায়ী আয়ের উৎস থাকলে সেই যুক্তি খাটে না।’