দিল্লির আদালতে গ্যাংস্টার-পুলিশ যুদ্ধ, নিহত ৩

দিল্লির কুখ্যাত দুষ্কৃতী জিতেন্দ্র গােগীর মৃত্যু হয়েছে গুলির লড়াইয়ে।আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।দুষ্কৃতীরা আইনজীবীদের পােশাক পরে আদালত কক্ষে প্রবেশ করে।

Written by SNS Delhi | September 25, 2021 12:16 pm

দিল্লির আদালতে গ্যাংস্টার-পুলিশ যুদ্ধ (Photo:SNS)

দিল্লিতে কোর্টের মধ্যেই চলল গুলি। শুক্রবার এই ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে। দিল্লির কুখ্যাত দুষ্কৃতী জিতেন্দ্র গােগীর মৃত্যু হয়েছে গুলির লড়াইয়ে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। দুষ্কৃতীরা আইনজীবীদের পােশাক পরে আদালত কক্ষে প্রবেশ করে।

উত্তর দিল্লির রোহিনীতে কোর্টের মধ্যে দু’দলের দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়। গােগীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। গত এপ্রিলে তাকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশের বিশেষ বিভাগ। এরকমই একটি মামলায় তাকে এদিন আদালতে আনা হয়েছিল। তখনই বিরােধী গােষ্ঠীর দুষ্কৃতীরা তার উপর গুলি চালায়।

‘টিল্লু’ দলের দুষ্কৃতীরা গােগীর উপর হামলার ঘটনায় জড়িত বলে পুলিশ সন্দেহ করছে। দুষ্কৃতীদের গুলি চালানাের মধ্যেই পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। সেই গুলিতে দুষ্কৃতী দলের দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, এই ঘটনায় আদালত চত্বরের মধ্যে ৩৫ থেকে ৪০ রাউন্ড গুলি চলেছে। কর্মরত এক মহিলা আইনজীবীও আহত হয়েছেন।

রােহিনীর ডেপুটি পুলিশ কমিশনার প্রণব তয়াল জানিয়েছেন, আইনজীবীর পােশাক পরে আততায়ীরা আদালতের মধ্যে গােগীর উপর গুলি চালায়। এরপর পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। দিল্লির পুলিশ কমিশনার রাকেশ আস্থানা জানিয়েছেন, রােহিনী আদালতে গ্যাংস্টার জিতেন্দ্র গােগীর উপর দুই দুষ্কৃতী গুলি চালায়।

পুলিশের পাল্টা গুলিতে দুই আততায়ীর মৃত্যু হয়। গুলি এবং পাল্টা গুলিতে রােহিনীর আদালত চত্বর রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। শুধু চত্বরই নয়, কোর্টের ঘরও ভেসে গেল রক্তে। ছিটকে পড়ে গেল কুখ্যাত গ্যাংস্টার গােগীর দেহ। মেঝে ভিজে যাচ্ছিল রক্তে। আর ঠিক কিছুটা দূরে আইনজীবীর পােশাক পরা আরও দু’জনের দেহ পড়ে রয়েছে।

মাত্র কয়েক মিনিট গুলির লড়াইয়ে টানটান উত্তেজনার চেহারা দেখা গেল কোর্ট চত্বর। আচমকা এই ঘটনার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিলেন না। এমনটাও হতে পারে দুঃস্বপ্নেও কেউ কখনও ভাবেনি। কিন্তু এমনটাই ঘটল। শুক্রবার দুপুরে দিল্লির রােহিনী আদালত চত্বরে এই দৃশ্য বুঝিয়ে দিল নিরাপত্ত যতই আটোসাঁটো হােক না কেন, দুষ্কৃতীদের দাপট ঠিক কোন উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে।

এদিন দুপুর পৌনে দুটো নাগাদ আদালত চত্বরে পুলিশের একটা প্রিজন ভ্যান আসে। সেই প্রিজন ভ্যান থেকে নামে গ্যাংস্টার গােগী। তার নিরাপত্তায় রয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। কুখ্যাত এই গ্যাংস্টারকে দ্রুত প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে আদালত কক্ষের মধ্যে নিয়ে যায় পুলিশকর্মীরা।

এদিন গােগীর বিরুদ্ধে একটি মামলার শুনানি ছিল। সেই কারণেই তাকে কোর্টে আনা। মামলাটি চলছিল বিচারপতি গগনদীপ সিংয়ের এজলাসে। আদালত কক্ষ তখন অনেকটাই ভরে গিয়েছে। আইনজীবীরা কক্ষের মধ্যে এদিক ওদিক দাঁড়িয়ে রয়েছেন। আইনজীবীদের বেশ ধরেই গােগীর বিরুদ্ধ গােষ্ঠীর লােকেরা কোর্ট চত্বরে ঢুকে পড়ে।

এমনটা যে হতে পারে, আইনজীবীরা তাে দূরঅস্ত পুলিশেরও ভাবনার বাইরে ছিল। আইনজীবীর ভেক ধরে সাক্ষাৎ মৃত্যুদূত যেন কোর্ট চত্বরেই দাঁড়িয়ে ছিল। দুষ্কৃতীরা বুঝে গিয়েছিল আইনজীবীর বেশ ধরে গেলে কেউ সন্দেহ করবে না। হল ঠিক তাই। এছাড়া আদালত কক্ষের মধ্যে প্রবেশ করাটা সােজা ছিল না।

সবার চোখের সামনে দিয়ে আইনজীবীর ভেক ধরা দুষ্কৃতীরা ২০৭ নম্বর ঘরে অনায়াসে পৌঁছে যায়। শিকার পৌঁছনাের আগেই তারা শিকারের জন্য অপেক্ষা করছিল গােগীর বিরােধী গােষ্ঠীর টিল্লুর লােকেরা। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গােগী। সবেমাত্র শুনানি শুরু হয়েছে।

সওয়াল জবাব এগােচ্ছিল অন্যান্য দিনের মতাে। আচমকাই আইনজীবীর বেশ ধরে থাকা ২ দুষ্কৃতী চলে আসে কাঠগড়ার কাছে। তারপর বন্দুক বের করে গােগীকে লক্ষ্য করে একদম কাছ থেকে পরপর গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। নিশানা ব্যর্থ হয়নি। গােগীর শরীর বুলেটবিদ্ধ হয়। তিনটি গুলি লাগে গােগীর শরীরে। গােগীর রক্তাক্ত দেহ লুটিয়ে পড়ে কাঠগড়ার মধ্যে।

ততক্ষণে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল দুই দুষ্কৃতীকে ঘিরে ফেলেছে। আচমকা কোর্ট চত্বরে গুলিবৃষ্টির ঘটনায় যে যেরকমভাবে পেরেছে প্রাণ রক্ষার তাগিদে নিজেদেরকে আড়াল করার চেষ্টা করেছে। কোর্ট কক্ষের বাইরে থেকে পুলিশও দুষ্কৃতীদের কবজা করতে পাল্টা গুলি চালায়।