ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির আবহে দেশের বিমানবন্দরগুলিতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে। উত্তর, মধ্য এবং পশ্চিম মিলিয়ে দেশের প্রায় ২৭টি বিমানবন্দর ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরগুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। আগামী ১০ মে অর্থাৎ শনিবার পর্যন্ত বিমানবন্দরগুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বৃহস্পতিবারও ৪৩০টি বিমানও বাতিল করা হয়। জারি করা হয়েছে এনওটিএএম (NOTAM)। বিমান চালনার ক্ষেত্রে এনওটিএএম ব্যবহার করা হয় পাইলট এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের কোনওরকম অস্থায়ী পরিবর্তন বা বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য, যদি সেসব ক্ষেত্রে উড়ান প্রভাবিত হতে পারে এমন আশঙ্কা থাকে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, বেশ কিছু ভারতীয় বিমান পরিবহণ সংস্থা, যেমন এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, স্পাইসজেট, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস, আকাসা এয়ার এবং বেশ কয়েকটি বিদেশি বিমান সংস্থা দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরগুলি থেকে তাদের বিমান বাতিল করেছে। বিমান সংস্থাগুলি মোট ৪৩০টি বিমান বাতিল করেছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর দেশের ১৭টি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বিমান সংস্থাগুলিও একের পর এক বিমান বাতিল ঘোষণা করে। অপারেশন সিঁদুর অভিযানের পর উত্তেজনার আবহে বুধবার ভারতে বাতিল করা হয়েছে প্রায় ২০০টিরও বেশি বিমান । সেই সঙ্গে কমপক্ষে ১৮টি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। বুধবার ভোর থেকে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বেশ কয়েকটি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়। শ্রীনগর বিমানবন্দরও বুধবার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ছিল। কোনও বিমান চলাচল করেনি। সূত্রের খবর, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মূলত উত্তর এবং পশ্চিম ভারতের এই বিমানবন্দরগুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বুধবার সকালেই এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘বিমান পরিবহণ দপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ১০মে ভোর ৫টা ২৯ মিনিট পর্যন্ত শ্রীনগর, জম্মু, লেহ, যোধপুর, অমৃতসর, ভুজ, জামনগর, চণ্ডীগড় এবং রাজকোট বিমানবন্দরে আমাদের কোনও যাত্রীবাহী উড়ান ওঠানামা করবে না।এই অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কারণে তৈরি হওয়া অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত৷’
স্পাইসজেটও বর্তমান পরিস্থিতির কারণে, ধর্মশালা, লেহ, জম্মু , শ্রীনগর এবং অমৃতসর-সহ উত্তর ভারতের কিছু অংশে তাদের পরিষেবা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রেখেছে।
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভারতের পশ্চিম প্রান্ত বিশেষ করে কাশ্মীর থেকে গুজরাত পর্যন্ত এই আকাশপথে বিমান চলাচল প্রায় বন্ধ। ভারতের যে বিমানবন্দরগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে সেগুলি হল—
১. লেহ
২. শ্রীনগর
৩. জম্মু
৪. চণ্ডীগড়
৫. পাঠানকোট
৬. অমৃতসর
৭. জয়সলমের
৮. যোধপুর
৯.বিকানের
১০.জামনগর
১১. ভাটিন্দা
১২. ধর্মশালা
১৩. শিমলা
১৪. রাজকোট
১৫. পোরবন্দর
১৬. ভুজ
১৭. হিন্দন
১৮. কিষাণগড়
১৯. কান্দলা
২০. গোয়ালিয়র
২১. কেশর
২২. ভুন্টার
২৩. গগ্গল
২৪. লুধিয়ানা
২৫. পাতিয়ালা
২৬. মুন্দ্রা
২৭. হালওয়ারা
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গভীর রাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর বুধবার গভীর রাতেও অব্যাহত ছিল অপারেশন সিঁদুর। পাকিস্তানের কয়েকটি জায়গায় এয়ার ডিফেন্স রেডার সিস্টেম ধ্বংস করেছে ভারত।
