তিন বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে এফআইআর, বাবুলের গাড়ি ভাঙচুর, শূন্যে গুলি

কিছু বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ছাড়া সােমবার চতুর্থ দফার নির্বাচন মােটের উপর শান্তিতেই হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসারকে ফোনে বাবুলের হুমকি, দুবরাজপুরে আধা সেনা জওয়ানদের গুলি এবং বােমাবাজি ছাড়া তেমন কোনও বড় ঘটনা ঘটেনি বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।

Written by SNS New Delhi | April 30, 2019 10:10 am

গাড়ি ভাঙচুরের পর নিরাপত্তা কর্মীর সঙ্গে মুখোমুখি হন বাবুল সুপ্রিয় (Photo: IANS)

কিছু বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ছাড়া সােমবার চতুর্থ দফার নির্বাচন মােটের উপর শান্তিতেই হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসারকে ফোনে বাবুলের হুমকি, দুবরাজপুরে আধা সেনা জওয়ানদের গুলি এবং বােমাবাজি ছাড়া তেমন কোনও বড় ঘটনা ঘটেনি বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।

তবে অশান্তির আবহে ভােটগ্রহণ নিয়ে কড়া সমালােচনায় মুখর হয়েছেন বিরােধীরা। শাসক দলের বিরুদ্ধে ব্যাপক ছাপ্পা ভােট, রিগিং এবং বুথ দখলের অভিযােগ করেছেন তারা।

সােমবার চতুর্থ দফার নির্বাচনের পর পঞ্চম দফা নির্বাচনে ৫৮০ কোম্পানি বাহিনী মােতায়েনের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব। ৬ মে পঞ্চম দফার নির্বাচন। এই দফার নির্বাচনে একশাে শতাংশ বুথে বাহিনী থাকবে বলে জানিয়েছে কমিশন।

এদিকে চতুর্থ দফার নির্বাচনে অশান্তি সৃষ্টির দায়ে ১৪৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসারকে হুমকি দেওয়ার অভিযােগে বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পাল্টা বাবুলও এফআইআর দায়ের করেছেন তার গাড়ি ভাঙচুরের অভিযােগে।

অন্যদিকে দুবরাজপুরে বাহিনীর গুলি চালনার ঘটনা সহ একাধিক ঘটনায় সােমবার মােট ছয়জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কেতুগ্রামের ১০৪ এবং ১০৭ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযােগে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইলামবাজারেও একই অভিযােগে সেখানকার প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিন নির্বাচন শুরু হতেই বিভিন্ন জেলা থেকে গােলমালের ঘটনার খবর আসতে থাকে। কোথাও বােমাবাজি এবং কোথাও আধাসামরিক বাহিনীর গুলি চালানাের অভিযােগ আসে। নানুরে একটি বুথের সামনে দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রবল সংঘর্ষ ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে বাহিনী এলে তাদের লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়া হয় বলেও অভিযােগ।

নির্বাচন কমিশনের বিশেষ আধিকারিক অজয় ভি নায়েক অবশ্য দাবি করেন, সব কুছ ঠিক হ্যায়। ভােট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কমিশনের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন, দুবরাজপুর এবং নদিয়ার হাঁসখালিতে গুলি চালানাের ঘটনা ঘটেছে।

দুটি ক্ষেত্রে বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযােগ এসেছে। বাহিনীর গুলি চালনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাহিনীর অধিকার নিয়েও প্রশ্ন তােলেন। দিল্লিতে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গুলি চালানাের ঘটনা নিয়ে অভিযােগ জানানাে হয়।

নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের দায়ে বিজেপির দুই প্রার্থী কল্যাণ চৌবে এবং দুধকুমার মন্ডলকে শােকজ করা হয়েছে। বীরভূমের জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে এদিন বাহিনীর নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি যেভাবে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে ফোনে কথাবার্তা বলেছেন সেটা ভালােচোখে দেখছেন না নির্বাচন কমিশনের কর্তারা।

সােমবার পাঁচটি জেলার আট বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচন ছিল। এই আটটি কেন্দ্রে গড় ভােটের হার ৭৬.৪৪ শতাংশ। কমিশনসূত্রে জানা গিয়েছে, বহরমপুর ৭৬.১৬, কৃষ্ণনগর, ৭৬.৫৫, রানাঘাট ৭৮.৩৩, বধমান-পূর্ব, ৭৬.৯২, বর্ধমান-দুর্গাপুর ৭৫.৩১, আসানসােল ৭৩.৬৪, বােলপুর ৭৭.৯৫ এবং বীরভূমে ৭৬.৬৯ শতাংশ ভােট পড়েছে।

সােমবার নির্বাচন চলাকালীন কমিশনের অফিসে এসে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযােগ জানায় বিজেপি। বিজেপির জয়প্রকাশ মজুমদার বীরভূমের সমস্ত কেন্দ্রে নতুন করে ভােটের দাবি করেছেন। তিনি ছাপ্পা ভােট এবং রিগিং-এর অভিযােগ তুলে আসানসােল এবং নদিয়ার বেশ কিছু কেন্দ্রে পুননির্বাচনের দাবি করেছেন। অনুব্রত মন্ডলকে আগামী দফার নির্বাচন পর্যন্ত জেলে পাঠানাের দাবিও করেছেন বিজেপি নেতারা।

অন্যদিকে সিপিএমের তরফে চতুর্থ দফার নির্বাচনে ব্যাপক রিগিং এবং ছাপ্পা ভােটের অভিযােগ আনা হয়েছে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য রবীন দেব অবশ্য পুনর্নির্বাচনের দাবি করেননি। তবে মঙ্গলবার স্ক্রুটিনির পরে এ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা বলে জানিয়েছেন তিনি।