চাপ বাড়ছিলো বেশ কয়েকদিন ধরেই। সুপ্রিমকোর্টও রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করে বলেছিলো কেন্দ্র কেন কৃষকদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করছে না। অবশেষে টনক নড়লো কেন্দ্রীয় সরকারের। কারণ সামনে দিল্লি বিধাসভা নির্বাচন। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কৃষকদের একরোখা মনোভাবের সামনে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হল কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে কেন্দ্রের এক প্রতিনিধি দল পাঞ্জাবের বিক্ষোভরত কৃষকদের সঙ্গে দেখা করেছে। সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে কেন্দ্রের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন কৃষকেরা। সব ঠিক থাকলে অচলাবস্থা কাটাতে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠক হতে চলেছে কেন্দ্রের।
ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি), কৃষি ঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা এবং বিদ্যুতের বিল না-বাড়ানোর মতো বেশ কয়েকটি দাবিতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লি সংলগ্ন পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার শম্ভু সীমান্তে আন্দোলন শুরু করেছিলেন কৃষকরা। বারবার চেষ্টা করেও তাঁরা রাজধানীতে ঢুকতে পারেননি। এরপর ২৬ নভেম্বর কৃষক নেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল আমরণ অনশন শুরু করলে কৃষক নেতারা নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। দেড় মাস পেরিয়েও অনশন থেকে সরে আসেননি তিনি। এরপরই সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন দেশ জুড়ে ট্রাক্টর মিছিলের ডাক দিয়েছিলো কৃষক সংগঠনগুলি। ফলে এই আন্দোলন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর রীতিমত অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। সেই কারণেই কৃষক আন্দোলনে প্রলেপ দিতেই আলোচনায় বসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে কেন্দ্র।
Advertisement
প্রথমদিকে কৃষকদের এই দাবি দাওয়া নিয়ে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিতে রাজি ছিল না মোদী সরকার। কিন্তু একদিকে শীর্ষ আদালতের চাপ আর অন্যদিকে আন্দোলনের তীব্রতার জেরে অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিলো তারা। অবশেষে শনিবার ভারতের বন পরিষেবা আধিকারিক তথা কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের যুগ্মসচিব প্রিয় রঞ্জনের নেতৃত্বে কেন্দ্রের একটি দল খানাউরি সীমানায় কৃষকদের সঙ্গে দেখা করেছেন। সেখানে অনশনরত কৃষক নেতা জগজিৎ সিং দাল্লেওয়ালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বৈঠকের প্রস্তাব দেন তিনি। অচলাবস্থা কাটাতে কেন্দ্রের তরফে আগ্রহ দেখানো হয়। কৃষকরাও বৈঠকে যেতে আগ্রহী বলে খবর পাওয়া গেছে।
Advertisement
কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর সরকারি চিকিৎসা করতে রাজি হয়েছেন কৃষক নেতা দাল্লেওয়াল। লাগাতার অনশনের কারণে তাঁর স্নায়ুতন্ত্র ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হবে।
Advertisement



