গোটা অরণ্য বেমালুম গায়েব। সেখানে তৈরি হয়েছে একটা আস্ত শহর। ১০ বছর ধরে ধীরে ধীরে নিকেশ করা হয়েছে এই বনভূমিকে। নিঃশব্দে পশ্চিমঘাটের জঙ্গলকে গিলে নিয়েছে কংক্রিট। সম্প্রতি স্টেট অফ ফরেস্ট যে রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনেছে তা রীতিমতো চমকে ওঠার মতো। দাবি করা হচ্ছে, গত ১০ বছরে পশ্চিমঘাটের ৫২.২২ বর্গ কিলোমিটার জঙ্গল কেটে সাফ করে গোটা একটা শহর গড়ে তোলা হয়েছে। পাহাড়ি ও উচু জায়গাগুলিতেও নিশ্চিহ্ন সবুজের সমারোহ।
দেশের ৬ রাজ্য গুজরাট, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, কেরল ও গোয়া নিয়ে গঠিত পশ্চিমঘাট পর্বতমালা। বিস্তীর্ণ এই বনভূমি কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করা শুধু নয়,পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার কাজটি করে আসছে সেই সুদূর অতীত থেকে। ভারতের ৩০ শতাংশের বেশি বন্যপ্রাণের নিরাপদ আবাসস্থল এই অরণ্যের আয়তন ১লক্ষ ৬০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা। এহেন বনভূমি এইভাবে ধ্বংস করায় স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন পরিবেশপ্রেমীরা। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রালয়।
Advertisement
প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, পশ্চিমঘাট জঙ্গলের আশপাশের এলাকায় নগরায়ন বেড়েছে ব্যাপকভাবে। এছাড়া কৃষিক্ষেত্র বাড়ানোর জেরে চলছে নির্বিচারে জঙ্গল নিকেশ। এখানেই শেষ নয়, রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি জঙ্গল ধ্বংসে সরকারের ভূমিকাও কম নেই। রেলপথ নির্মাণ ও সড়ক নির্মাণের জন্য বিরাট অংশের বনভূমি বেআইনিভাবে কেটে সাফ করা হয়েছে। এছাড়া জঙ্গল লাগোয়া অঞ্চলে ভারী শিল্প, খনির কারণেও দূষণ ছড়াচ্ছে পশ্চিমঘাটের জঙ্গল।
Advertisement
এছাড়া বনবিভাগের রিপোর্টে জঙ্গল ধ্বংসের যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তা আরও উদ্বেগের। সেখানে দেখা গিয়েছে, তামিলনাড়ুর নীলগিরি অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে জঙ্গল কাটা হয়েছে। জঙ্গল নিধন যজ্ঞে এই তালিকায় যথাক্রমে রয়েছে কেরলের ইডুক্কি, মহারাষ্ট্রের পুণের মতো অঞ্চলগুলি। ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এইসব অঞ্চলে শত শত বর্গকিমি এলাকার জঙ্গল সাফ করা হয়েছে।
Advertisement



