• facebook
  • twitter
Monday, 15 December, 2025

কাশির সিরাপের সাম্রাজ্য ফাঁস হতেই বরখাস্ত পুলিশ কনস্টেবল

লখনউয়ে পাঁচ কোটির বাংলোয় ইডির হানা

সামনের উঠোন জুড়ে সাজানো নানা রঙের ফুলের গাছ। চোখ ধাঁধানো আলোয় মোড়া সুদৃশ্য দোতলা বাড়ি। প্রায় সাত হাজার বর্গফুটের সেই বাড়ির অন্দরসজ্জা দেখলে যে কারও চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। অথচ এই বিলাসবহুল বাড়ির মালিক লখনউয়ের এক পুলিশ কনস্টেবল। নিষিদ্ধ কোডিনযুক্ত কাশির সিরাপ পাচারচক্রে নাম জড়াতেই সেই কনস্টেবলকে বরখাস্ত করল পুলিশ বিভাগ। তদন্তে নেমে এ বার তাঁর বাড়িতে হানা দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তল্লাশিতে উদ্ধার হল বিপুল পরিমাণ দামি ও বিলাসবহুল সামগ্রী।

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, মাদকদ্রব্য হিসেবে নিষিদ্ধ কোডিনযুক্ত কাশির সিরাপ পাচারের অভিযোগে প্রায় হাজার কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের তদন্ত শুরু হয়। সেই মামলায় প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় অমিতকুমার সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে। তাঁকে জেরা করতেই সামনে আসে লখনউয়ের পুলিশ কনস্টেবল অলোকপ্রতাপ সিংহের নাম। তদন্তকারীদের দাবি, কাশির সিরাপ পাচারচক্রের অন্যতম মাথা ছিলেন অলোক।

Advertisement

তদন্তে উঠে এসেছে, উত্তরপ্রদেশ ও ঝাড়খণ্ডে কাশির সিরাপের পাইকারি ব্যবসা চালাত এই চক্র। সেখান থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকি সীমান্ত পেরিয়ে নেপাল ও বাংলাদেশেও পৌঁছে যেত নিষিদ্ধ সিরাপ। অভিযোগ, পুলিশ ও রাজনৈতিক মহলে নিজের পরিচিতি ব্যবহার করেই এই পাচারচক্রকে রমরমিয়ে চালাতেন অলোক।

Advertisement

এই চক্রের মূল পাণ্ডা হিসেবে চিহ্নিত শুভম জয়সওয়াল। তদন্তের আঁচ পেতেই তিনি দুবাইয়ে পালিয়ে যান। তবে তাঁর বাবা ভোলানাথ জয়সওয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত সাড়ে তিন লক্ষের বেশি নিষিদ্ধ কাশির সিরাপের বোতল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য সাড়ে চার কোটি টাকা। এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর্থিক লেনদেনের সূত্র ধরেই ইডির তদন্ত চলছে।

সেই তদন্তের অংশ হিসেবেই অলোকপ্রতাপ সিংহের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। সূত্রের খবর, সেখান থেকে নামীদামি ব্র্যান্ডের ব্যাগ, ঘড়ি এবং একাধিক দামি বৈদ্যুতিন সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শুধু অন্দরসজ্জাতেই দেড় থেকে দু’কোটি টাকা খরচ করা হয়েছিল। জমির দাম বাদ দিয়ে বাড়ি নির্মাণে খরচ হয়েছিল অন্তত পাঁচ কোটি টাকা।

অলোক চান্দৌলির বাসিন্দা। প্রায় ২০ বছর আগে পুলিশে যোগ দেন তিনি। ২০০৬ সালে সোনা লুটের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছিলেন। পরে আদালতে মুক্তি পেয়ে পুনর্বহাল হন। কিন্তু ২০১৯ সালে দুর্নীতির অভিযোগে ফের বরখাস্ত করা হয় তাঁকে। গত ২ ডিসেম্বর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি লখনউয়ের জেলে বন্দি। এই মামলার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে ইডি।

Advertisement