বেঙ্গালুরুতে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। এখানেই শেষ নয়, ন্যক্কারজনক এই ঘটনার পর নির্যাতিতাকে ফোন করে অভিযুক্ত যুবক জানতে চান, তাঁর কোনও ‘পিল’ (গর্ভনিরোধক বড়ি) লাগবে কি না। দক্ষিণ বেঙ্গালুরুর এই ঘটনার পাঁচদিন পর, ১৫ অক্টোবর হনুমন্থনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে। বুধবার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁকে আদালতে হাজির করানো হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতিতা তরুণী ও অভিযুক্ত যুবক একই কলেজের ছাত্রী। বেঙ্গালুরুর ওই বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সপ্তম সেমেস্টারের ছাত্রী নির্যাতিতা। একটা সময় অভিযুক্ত তাঁর সঙ্গেই পড়তেন। একটি সেমেস্টারে ফেল করায় অভিযুক্ত যুবক বর্তমানে ষষ্ঠ সেমেস্টারের ছাত্র। সম্প্রতি নির্যাতিতাকে বিরক্ত করছিলেন প্রাক্তন সহপাঠী। গত ১০ অক্টোবর দুপুরে তরুণীকে বার বার ফোন করেন অভিযুক্ত যুবক। ক্যাম্পাসে দেখাও করতে বলেন। তরুণী দেখা করতে আটতলায় গেলে তাঁকে জোর করে চুম্বনের চেষ্টা করেন অভিযুক্ত। এরপর তরুণীকে সাত তলায় পুরুষদের শৌচালয়ে টেনে নিয়ে যান।
Advertisement
অভিযোগ, ওই শৌচালয়েই তরুণীকে ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত। এমনকী তাঁর ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়। নির্যাতিতা পুলিশকে জানান, দুপুর ১টা ৩০ মিনিট থেকে ১টা ৫০ মিনিটের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরে তিনি বাড়ি ফিরে যান। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন নির্যাতিতা। এই সময় অভিযুক্ত তাঁকে ফোন করে গর্ভনিরোধক বড়ির প্রয়োজন আছে কি না, জানতে চান বলে অভিযোগ। ঘটনার পাঁচদিন পর ১৫ অক্টোবর থানায় অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতার পরিবার।
Advertisement
বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে করে পুলিশ। কলেজের যে অংশে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই বলে অভিযোগ। এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কলেজের পড়ুয়ারা। নিরাপত্তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই ফরেন্সিক এবং ডিজিটাল নমুনা সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। কর্ণাটকের বিরোধী দল বিজেপির অভিযোগ, ‘রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। দুষ্কৃতীরা আর ভয় পাচ্ছে না।’ এর জন্য কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকারের দিকেই তারা আঙুল তুলেছে।
কর্ণাটকের বিরোধী দলনেতা আর অশোকা সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা একেবারে ভেঙে পড়েছে। গত চার মাসে ৯৭৯টি যৌন হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে। শুধু বেঙ্গালুরুতেই ১১৪টি। মহিলা এবং শিশুরা ভয়ে আছেন।’ যদিও কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সম্প্রতি দিল্লি সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে চারজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছিলেন এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রী। তারপরেই কর্ণাটকের ঘটনা প্রকাশ্যে এল। একের পর এক পড়ুয়াদের নিগ্রহের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
Advertisement



