ইন্ডিগোর বিমান বিপর্যয়ের জন্য বরখাস্ত করা হল চারজন ফ্লাইট অপারেশন ইন্সপেক্টরকে। ইন্ডিগো ফ্লাইট অপারেশনে নজরদারি সংক্রান্ত দায়িত্ব ছিল এই চার জনের উপরে। তবে তাঁদের বরখাস্ত করার কারণ জানায়নি ডিজিসিএ। তাঁদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে বলে খবর। ফ্লাইট সংক্রান্ত নিয়মনীতি পালন করার বিষয়টি দেখা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থার উপরে নজরদারি চালানোর দায়িত্ব থাকে ফ্লাইট অপারেশন ইন্সপেক্টরের উপরে।
এদিকে বিমান বিপর্যয়ে তদন্তের জন্য পিটার এলবার্সকে বুধবারই নোটিস পাঠিয়ে কমিটির সামনে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশমতো বৃহস্পতিবার তিনি হাজিরা দেন। তাঁকে নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সূত্রের খবর। শুক্রবারও তাঁকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইন্ডিগোর বিমান পরিচালনার তদারকির দায়িত্বে থাকা চারজন ইন্সপেক্টরকে বরখাস্ত করল ডিজিসিএ।
Advertisement
যাত্রীদের ভোগান্তির কথা মাথার রেখে ইন্ডিগোর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ডিজিসিএ। ফ্লাইট বাতিল এবং যাত্রীদের দুর্ভোগের জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের কাউকে রেয়াত করা হবে না বলেও বার্তা দিয়েছিলেন অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী কে রামমোহন নায়ডু। এ বার চার জন ‘ফ্লাইট অপারেশন ইন্সপেক্টর’-কে বরখাস্ত করে কড়া পদক্ষেপ নিল ডিজিসিএ।
Advertisement
গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ইন্ডিগোর একের পর এক বিমান বাতিল হয়েছে। আগের তুলনায় শুক্রবার পরিস্থিতি বেশ কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ইন্ডিগোর ৫৪টি বিমান বাতিল হয়েছে। কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে বেসরকারি বিমান সংস্থা। এই সঙ্কটে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। এই বিপর্যয়ের মূল কারণ খুঁজে বার করা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। পদক্ষেপের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছে সরকার। প্রয়োজনে ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্সকেও বরখাস্ত করা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিমানমন্ত্রী।
গত সপ্তাহে এক দিনে হাজারেরও বেশি উড়ান বাতিল করা হয়। লক্ষ লক্ষ যাত্রীর ভোগান্তি চরমে পৌঁছোয়। দেশের বাজারে প্রায় ৬৫ শতাংশ শেয়ার থাকা ইন্ডিগোর পরিষেবা আচমকাই স্তব্ধ হয়ে যায়। সংস্থাটির ফ্লাইট বাতিলের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে পাইলট-ক্রুর ঘাটতি। গত ১ নভেম্বর থেকে নতুন ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন নিয়ম চালু হওয়ার পর থেকে তা আরও প্রকট হয়ে ওঠে।
ইন্ডিগোর সদর দপ্তরে বসে ডিজিসিএ এখন প্রতিদিন নজরদারি চালাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রতিদিনের রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্র ইন্ডিগোকে সাময়িকভাবে উড়ান সংখ্যা ১০ শতাংশ কমাতে বলা হয়েছে। ইন্ডিগোর দাবি, নতুন এফডিটিএল নিয়মের কারণে রস্টার তৈরি করতে সমস্যা হয়েছে। সংস্থাটি ইচ্ছাকৃতভাবে সংকট বাড়িয়ে সরকারের উপর চাপ তৈরি করে নতুন নিয়ম শিথিল করতে চাইছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
Advertisement



