মোদি সরকারের নোট বন্দির সিদ্ধান্ত সম্পর্কে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (আর বি আই) সরকারকে সতর্ক করে বলেছিল, আর্থিক উন্নয়নের উপ্ র এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।তা ছাড়া কালো টাকা উদ্ধারের স্বার্থে যদি নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে , তাহলে এর ফলে সরকারের সেই উদ্দেশ্য সফল হবেনা।তবে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক নোটবন্দির সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাদের চারটি আপত্তির কথা জানালেও প্ রে ‘জনস্বার্থে’ সরকারের নোটবন্দির সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিল বলে সোমবার জানা গেছে তথ্য জানার অধিকারের ( আর টি আই) মাধ্যমে আর বি আই’র কাছ থেকে প্রাপ্ত উত্তরে।২০১৬ সালের ৮নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমুদ্রাকরণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন টেলিভিশনে।তার কয়েক ঘণ্টা আগে আর বি আই বোর্ডের বৈঠক বসে। তার পরই টিলিভিশ্ন সম্প্রচারে মোদি ঘোষণা করে দেন ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট অতঃপ্ র বাতিল করা হল , যার ফলে ৮৬ শতাংশ নগদ টাকা বাজার থেকে উবে যায় এবং প্রধানমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন আর বি আই এর সম্মতি ছাড়াই। ২০১৬ সালের ৮ই নভেম্বর মোদি নোটবন্দির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন এবং ডিসেম্বরের ১৬তারিখে নোটবন্দির সম্মতি দেয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আব ইন্ডিয়া।
সোমবার নোটবন্দি সংক্রান্ত আরটিআই’র মাধ্যমে শীর্ষ ব্যাঙ্কের উত্তর পাওয়ার পরে কংগ্রেস এক সাংবাদিক স্মমেলনের দাবি করে,মোদি সরকার নোটবন্দি নিয়ে যে দাবি করেছিল যে কালো টাকা এর ফলে উদ্ধার করা যাবে,তা আর বি আই’র এই উত্তরের প্ র ধোপে টেকে না। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ ২০১৬ সালের ৮নভেম্বর বিকেল ৫.৩০ মিনিটে (প্রধানমন্ত্রীর নোটবন্দির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে) আরবিআইয়ের বৈঠকের ৫৬১নং মিনিট প্রকাশ করেন। রমেশ জানিয়েছেন যে, বৈঠকের এই মিনিট আরটিআই মারফত পাওয়া গেছে।কংগ্রেস নেতা অভিযোগ করেন, আরবিআইএর বোর্ড অব ডিরেক্টর্স্ নোটবন্দির ফলে সরকারের কালো টাকা উদ্ধারের দাবি নাকচ করে দিয়েছিল। রমেশ সেই মিনিট থেকে উদ্ধৃত করে বলেন, আরবিআইয়ের বক্তব্য ছিল ,বেশির ভাগ কালো টাকা উদ্ধার সম্ভব নয়। সেই বৈঠকে বোর্ড অব ডাইরেক্টরস্ আরো জানিয়েছিল আর্থিক বিকাশের হার প্রকৃত পরিসংখ্যান এবং নগদের বিতরণও স্বাভাবিক।শুধু মুদ্রাস্ফীতির কারণে সেই হারের কিছু পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। এই বক্তব্য তুলে রমেশ বলেন , সরকারের যুক্তি এভাবেই খন্ডন করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে অপরদিকে বোর্ড অফ ডাইরেক্টর্স্ এ মন্তব্যও করে যে নোটবন্দির সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয়, যদিও চলতি আর্থিক বছরে এর স্বল্পমেয়াদী একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সেই মিনিটের অন্য জায়গা থেকে আরবিআই ডাইরেক্টর্সের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে রমেশ বলেন, যাঁরা বেড়াতে বেরিয়েছেন এবং সঙ্গে শুধু ১০০০ কিংবা ৫০০ টাকার নোট রয়েছে,তাঁরা অবশ্যই বিপাকে পড়বেন। প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে বলেন, নোটবন্দি ছিল একটা ‘তুঘলকি ফরমান’ । এর ফলে মানুষ তাদের কাজ হারিয়েছেন, ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে চাকরি গেছে আরও অনেকের বলে অভি্যোগ করেন জয়রাম রমেশ। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরো বলেন , গোটা দেশ মোদির এই তুঘ্নল্কি ফর্মানের জন্য ভুগেছে এবং এখনো ভুগছে। রমেশ আর বি আই এর বৈঠকের মিনিট বুক থেকে তোলা শীর্ষ ব্যাঙ্কের ডাইরেক্ট্রদের ম্ন্তব্য তুলে ধরে অভিযোগ করেন আসলে নোটবন্দি মেনে নিতে বাধ্য করা হয়েছিল আর বিআইকে যার ফলে দেশের অর্থনীতির বেহাল অবস্থা হয়েছে। আমরা এটাও খতিয়ে দেখব , কীভাবে কালোটাকা হাওলার মাধ্যমে পাচার হয়েছে। কংগ্রেস ক্ষ্মতায় এলে গুজরাতের কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে কীভাবে কোটি কোটি টাকা জমা পড়ল নোটবন্দির কিছুদিন আগে , তাও তদন্ত করে দেখা হবে। এই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান হলেন অমিত শাহ। যদি ক্ষ্মতায় আসে, নোটবন্দি যে একটা বিরাট আর্থিক কেলেঙ্কারি, তার তদন্ত করবে কংগ্রেস বলে মন্তব্য করেন জয়রাম রমেশ।
Advertisement
Advertisement
Advertisement



