২৬/১১ হামলার মূল চক্রী তাহাউর রানার বিচারবিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ বাড়ল। দিল্লির এক আদালতে শুক্রবার ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হাজির করানো হয় রানাকে। বিশেষ বিচারক চন্দ্রজিৎ সিং ৯ জুলাই পর্যন্ত তাহাউর রানার বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন। এদিনের শুনানিতে রানার আইনজীবী তাঁর মক্কেলের স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। এরপর পাটিয়ালা কোর্ট তিহার জেল কর্তৃপক্ষকে ৯ জুনের মধ্যে একটি বিস্তারিত মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
এদিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুমতি চেয়েছেন রানা। সেই সংক্রান্ত বিষয়টিও ওইদিন শুনবে বলে জানিয়েছে আদালত। এর আগে রানা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার আবেদন জানালেও এনআইএ-র তরফে সেই আবেদনের বিরোধিতা করা হয়। এনআইএ-র তরফে বলা হয়, বর্তমানে এই মামলাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তরে রয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ হলে রানা সংবেদনশীল তথ্য ছড়িয়ে দিতে পারেন। রানার আইনজীবী পাল্টা যুক্তি দেন, তাঁর মক্কেল বিদেশি নাগরিক। তাঁর পরিবারের সদস্যরা স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। আদালত শেষ পর্যন্ত আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে দেয়।
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর ১০ জন পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীদের একটি দল আরব সাগর হয়ে মুম্বইয়ে ঢোকে। একটি রেলস্টেশন, দুটি বিলাসবহুল হোটেলে হামলা চালায় এই দলটি। প্রায় ৬০ ঘণ্টা ধরে চলা এই হামলা ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়। একমাত্র জীবিত অবস্থায় ধরা পড়েন আজমল কাসভ। ২০১২-র ২১ নভেম্বর ফাঁসির এক দিন আগে পর্যন্ত আর্থার রোড জেলের ১২ নম্বর ব্যারাকের ‘আন্ডা সেল’ ছিল কাসভের ঠিকানা। ফাঁসির আগের রাতে বোরখা পরিয়ে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল পুণের ইয়েরওয়াডা জেলে। সেখানেই ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল কাসভকে।
প্রসঙ্গত, তাহাউর রানার জন্ম পাকিস্তানে। পরবর্তীকালে তিনি কানাডার নাগরিকত্ব লাভ করেন। ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার অন্যতম প্রধান ষড়যন্ত্রকারী ডেভিড কোলম্যান হেডলি ওরফে দাউদ গিলানির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন রানা। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক ডেভিড কোলম্যানের সঙ্গে এক ব্যবসার সূত্রে আলাপ হয় রানার। জঙ্গিরা কোন পথে এ দেশে ঢুকে হামলা চালাবে তাঁর রোডম্যাপ তৈরি করেছিলেন তাহাউর। পরে আমেরিকায় গ্রেপ্তার হন তিনি। চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুতে ভারত হাতে পায় রানাকে। তারপর থেকে তাঁকে একটানা জেরা করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি।