দেশজুড়ে বাড়তে থাকা সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার করতে ২০২৬ সালের জন্য বিস্তারিত রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবেই আধুনিক ফরেন্সিক সরঞ্জাম ও তদন্ত কৌশল নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে। কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইবার অপরাধ দমনকে আরও বিজ্ঞানভিত্তিক ও সময়োপযোগী করতেই এই বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, এই প্রশিক্ষণে ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহ, তথ্য বিশ্লেষণ, মোবাইল ও কম্পিউটার ডিভাইস থেকে তথ্য উদ্ধার, অনলাইন আর্থিক প্রতারণার সূত্র খুঁজে বের করা এবং সামাজিক মাধ্যমে সংগঠিত অপরাধ শনাক্ত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আধিকারিকরা ভবিষ্যতে নিজেদের রাজ্য ও জেলার অন্যান্য কর্মীদেরও হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেবেন।
Advertisement
এক আধিকারিকের কথায়, ‘এখন অত্যন্ত দ্রুত পদ্ধতি বদলাচ্ছেন সাইবার অপরাধীরা। সেই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে তদন্তে পিছিয়ে পড়তে হয়। তাই সময়ের দাবি মেনে এখন আধুনিক ফরেন্সিক প্রযুক্তি আয়ত্ত করা খুবই জরুরি।’ তাঁর মতে, এই প্রশিক্ষণের ফলে সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলার তদন্তের গতি যেমন বাড়বে, তেমনই সংগৃহীত তথ্য প্রমাণ সংগ্রহের মান আরও শক্তিশালী হবে।
Advertisement
এই রোডম্যাপে শুধু প্রশিক্ষণই নয়, পাশাপাশি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরে বিশেষ সাইবার অপরাধ তদন্ত ইউনিট গড়ে তোলার পরিকল্পনাও রয়েছে। পরিকাঠামো উন্নয়ন, আধুনিক ল্যাব স্থাপন এবং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান সহজ করাও এই পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন এখন অনেকটাই ডিজিটাল নির্ভর। ফলে অনলাইন প্রতারণা, পরিচয় চুরি কিংবা আর্থিক জালিয়াতির ঝুঁকিও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দক্ষতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। ২০২৬ সালের রোডম্যাপ সেই লক্ষ্যেই এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন তাঁরা।
কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, আগামী দিনে এই ধরনের প্রশিক্ষণের পরিধি আরও বাড়ানো হবে। লক্ষ্য একটাই— সাইবার অপরাধীদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে থেকে নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা।
Advertisement



