সিমলা, ২৯ ফেব্রুয়ারি: গতকাল কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের হস্তক্ষেপে হিমাচলের কংগ্রেস শাসিত সরকারের রাজনৈতিক সঙ্কট কাটতে চলেছে। তাঁর পাঠানো তিনজন দলীয় পর্যবেক্ষকের মাধ্যমে কংগ্রেস সঙ্কটকে অনেকটা মেরামত করতে পেরেছেন।
প্রসঙ্গত সরকারের ভিতরে প্রবল বিদ্রোহের আবহে গতকাল পদত্যাগ করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দার সিং সুখুর মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য বিক্রমাদিত্য সিং। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংয়ের পুত্র বিক্রমাদিত্য গতকালই সেই পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তিনি সুখু সরকারের পিডব্লিউডি বিভাগের মন্ত্রী। বুধবার দলের বৃহত্তর স্বার্থে তাঁর পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। গতকাল বিক্রমাদিত্য “অপমান” ও “অবহেলা” বলে মন্তব্য করার কয়েক ঘন্টা পরে পদত্যাগ করেন।
বিক্রমাদিত্য আজ বলেন,’ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। দলের ঐক্য ও বৃহত্তর স্বার্থে তিনি পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আমি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পাঠানো পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। ব্যক্তিগত স্বার্থের চেয়ে দল শক্তিশালী হওয়াটা জরুরি। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী যে পদত্যাগপত্র প্রত্যাখ্যান করেছেন, তা গ্রহণের জন্য আমি চাপ দেব না।’
সরকারের সঙ্কট শেষ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,’কোনও সঙ্কট ছিল না। এটা তৈরি করা হয়েছিল। যদি সবাই একসঙ্গে ইতিবাচক চিন্তাভাবনা নিয়ে কাজ শুরু করে, তাহলে নিশ্চয় সমাধানসূত্র পাওয়া যাবে। আমরা এখানে মানুষের সেবা করতে এসেছি। সরকার হল সেই সেবা করার পন্থা। সরকারকে শক্তিশালী রেখে মানুষের সেবা করা প্রত্যেকের দায়িত্ব।’
বিক্রমাদিত্য আরও বলেন, গতকাল মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দার সিং সুখু ফোন করে জানান, তাঁর পদত্যাগপত্র প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে। তাঁর দাবি শোনা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। প্রসঙ্গত বিক্রমাদিত্যের পদত্যাগপত্র প্রদানের পর কংগ্রেসের অন্দরে প্রবল ঝড় ওঠে। এমন সময়ে এই ঘটনা ঘটে, যখন ৬জন বিধায়কের বিদ্রোহের মুখে পড়ে রাজ্যসভার নির্বাচনে দলের শোচনীয় পরাজয় হয়। সেই সঙ্কট মেরামতির জন্য দলের শীর্ষ নেতৃত্ব গতকালই তিনজন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষককে রাজ্যে পাঠায়। এবং দলের সমস্ত বিধায়কদের কথা শুনে রাজ্যের মানুষের দাবি-দাওয়ার ওপর গুরুত্ব দিতে বলেন। এই তিনজনের পর্যবেক্ষক দলে ছিলেন কর্ণাটকের উপ মুখ্যমন্ত্রী ডি.কে শিবকুমার, বর্ষীয়ান নেতা ভূপিন্দর সিং হুডা এবং ভূপেশ বাঘেল।
গতকাল দলের শীর্ষ নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, হিমাচলে বিজেপি পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, “হিমাচলে কংগ্রেসের সরকার ফেলার জন্য একটি ষড়যন্ত্র চলছে। বিজেপির ‘অপারেশন লোটাস’-এর মোকাবিলা করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে, কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি এই তিন বর্ষীয়ান নেতাকে তার উপায় বাৎলে দিয়েছেন।”