• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে অব্যাহত রেকর্ড

রবিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এক দিনে ১১,৯২৯ জন নতুন করে সংক্রামিত হওয়ায় ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩,২০,৯২২।

সর্বদলীয় বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। (File Photo: Twitter | @HMOIndia)

সংক্রমণের বিচারে ফের রেকর্ড। এ বার মাত্র ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের সংখ্যাটা ১২ হাজারের কাছে চলে গেল। রবিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এক দিনে ১১,৯২৯ জন নতুন করে সংক্রামিত হওয়ায় ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩,২০,৯২২। আর একদিনে ৩১১ জনের মৃত্যুতে করোনায় মোট শিকার ৯,১৯৫।

শুধু মহারাষ্ট্রেই আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ। এর পর রয়েছে তামিলনাড়ু। তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাজধানী দিল্লি। দিল্লি-লাগোয়া গুরুগ্রামে শুধু ৩১ মে থেকে ১১ জুনের মধ্যে রোগীর সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। ইতিবাচক পরিসংখ্যান একটাই।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, উদ্বগজনকভাব বেড়ে চলা দেশের করোনা সংক্রমণ যাতে হাতের বাইরে না বেরিয়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে চাইছেন মোদি। এই লক্ষ্যেই ফেরানো হতে পারে লকডাউন, সব থেকে বেশি করোনা প্রভাবিত রাজ্যগুলির বিশেষ বিশেষ অংশে। ১৬ ও ১৭ তারিখে আবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে মোদির। করোনাভাইরাসে মৃত্যুতেও ভারত অতি দ্রুত বিশ্বের প্রথম নয় দেশের মধ্যে চলে এল। সেইসঙ্গে এশিয়ারও শীর্ষে।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে রবিবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজলের সঙ্গে করোনা মোকাবিলা নিয়ে আলোচনা করবেন অমিত। রাজধানীর তিন পুরনিগমের মেয়রদের সঙ্গেও তাঁর বৈঠকের কথা হয়েছে। রাজধানী দিল্লির করোনা পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এর মধ্যে হাসপাতালে শয্যার অভাব দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কপালে ভঁজ ফেলেছে। যেহারে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে দিল্লির সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে রোগী ভর্তির কোনও ব্যবস্থায়ই থাকবে না। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় রবিবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৈঠক করেন।

সেখানে অমিত শাহ রোগীদের রেখে চিকিৎসার জন্য সাময়িকভাবে ট্রেনের পাঁচশো কামরা দেওয়ার কথা জানান। বৈঠকের পর অমিত শাহ জানান, পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কেন্দ্র দিল্লি সরকারকে সব রকমের সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে বেডের অভাব মেটাতে পাঁচশো ট্রেনের কামরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে পৃথক রাখার ব্যবস্থা হবে। এদিনের বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনও উপস্থিত ছিলেন।

মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লি সরকারকে সবরকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। দিল্লিতে এপর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা আটত্রিশ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে বলে তিনি জানান। গোটা দেশে আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ কুড়ি হাজারের বেশি।

দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া জানান, আক্রান্তের হার এমন চলতে থাকলে দেশে জুলাইয়ের শেষে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। নমুনা পরীক্ষাতেও জোর দেওয়া হচ্ছে দিল্লিতে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, দিল্লিতে দু’দিনের মধ্যে পরীক্ষার সংখ্যা দ্বিগুণ করতে সবরকমের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ছয় দিনের মধ্যে পরীক্ষার সংখ্যা তিনগুণ করা হবে।

রবিবারের বৈঠকে দিল্লি সরকারকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ দেওয়ারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অক্সিজেন সিলিন্ডার, ভেন্টিলেটর, পালস অক্সিমিটার প্রভৃতি সরঞ্জাম কেন্দ্রীয় সরকার দেবে। কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লির বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে সমন্বয় রাখার জন্য এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার জন্য অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল সায়েন্সেসের সিনিয়র চিকিৎসকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করেছে। টেলিফোনের মাধ্যমে পরামর্শ দেবে কমিটি।

দিল্লি সরকার বেডের অভাব মোচনে হোটেল ও অনুষ্ঠান বাড়িগুলিতে বেড পেতে হাসপাতালের পরিকাঠামো গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেজরিওয়াল সরকার। প্রাথমিক পর্যায়ে ৪০ টি হোটেল এবং ৭৭ টি অনুষ্ঠান বাড়িতে হাসপাতালের পরিকাঠামো গড়ে ভোলা হবে। সব মিলিয়ে পনেরো হাজার আটশো বেডের বন্দোবস্ত করা হবে। দক্ষিণ দিল্লির দুটি নামী হোটেল বসন্ত কন্টিনেন্টাল ও হায়াত রিজেন্সি কর্তৃপক্ষকেও বলা হয়েছে জায়গা দেওয়ার জন্য।

দিল্লি সরকারের অধীনে সাতাত্তরটি অনুষ্ঠান বাড়ি রয়েছে, সেখানে এগারো হাজার দুশো উনত্রিশটি বেডের সুযোগ করে দেওয়া হবে। সাড়ে চার হাজারের বেশি বেড পাতা হবে চল্লিশটি হোটেলে। এক সপ্তাহের মধ্যেই এই ব্যবস্থা তৈরি হয়ে যাবে বলে উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া জানিয়েছেন।

Advertisement