দিল্লি, ১৮ জানুয়ারি – লোকসভা নির্বাচন আসন্ন। কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তেহারে আমজনতার মতামত চেয়ে শুরু হল ‘ক্রাউড আইডিয়া’। লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহারে কী কী বিষয় থাকা উচিত, তা জানতে ওয়েবসাইট ও ইমেল আইডি প্রকাশ করল এই রাজনৈতিক দল। নাম দেওয়া হয়েছে ‘আওয়াজ ভারত কী’। এই ওয়েবসাইট ও ইমেল আইডিতে নিজেদের মতামত জানাতে পারবেন দেশের আমজনতা। এইসব মতামত থেকে বিষয় এবং দাবি মেনে তৈরি হবে কংগ্রেসের ঘোষণাপত্র, যা আসলে হবে ‘জনগণের ঘোষণাপত্র’। বুধবার দলীয় সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা করেন কংগ্রেসের ম্যানিফেস্টো কমিটির চেয়ারপার্সন পি চিদম্বরম।
রাহুল গান্ধির নেতৃত্বাধীন ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার জন্য ‘ডোনেট ফর দেশ’ শীর্ষক ‘ক্রাউড ফান্ডিং’ চালু করেছে কংগ্রেস। এবার চালু করা হল ‘ক্রাউড আইডিয়া’। কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, এর মাধ্যমে নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরতে পারবেন দেশের সাধারণ মানুষ। যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আসলে দেশবাসীকে নিজেদের কাছে টানাও এর অন্যতম কারণ।
জনসংযোগ বাড়াতে নিচু তলার কর্মী-সমর্থকদের মানুষের ঘরে ঘরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে রেখেছে হাইকমান্ড। এবার ‘আওয়াজ ভারত কী’র মাধ্যমে জেনেক্সকে নিজেদের আরও কাছাকাছি আসার মাধ্যম করছে কংগ্রেস। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষের বার্তা, মতামত চিন্তাভাবনারও কিছুটা আন্দাজ পাওয়া যাবে বলে মনে করছে কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব। ওয়েবসাইট ও ইমেল আইডি প্রকাশ করে চিদম্বরম বলেন, “ঘরের কোণায় বসে নয়, আমরা চেয়েছি আমাদের ইস্তেহার বা ঘোষণাপত্র তৈরি হোক মানুষের মতামত নিয়ে।” এদিন ওয়েবসাইট এবং ইমেল আইডি মারফত নির্বাচনী ইস্তেহারে মতামত চেয়ে শুরু হল ‘ক্রাউড আইডিয়া’।
শুধু অনলাইনে মতামত নয় , প্রতি রাজ্যে অন্তত একটি করে আলোচনা সভার আয়োজন করবে কংগ্রেস। যেখানে সাধারণ মানুষের বক্তব্য শোনা হবে। চিদম্বরম জানান, “প্রত্যেকেই এই সভায় আমন্ত্রিত। তবে শরিকদের সঙ্গে ইস্তেহার সংক্রান্ত আলোচনা দলের সভাপতি করবেন। সেটা অন্য বিষয়।” এই ইস্তেহার শুধুমাত্র কংগ্রেসের। এর সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’র বা তার অভিন্ন ন্যুনতম কর্মসূচির কোনও সম্পর্ক নেই।
কংগ্রেসের এই কর্মসূচির আরও একটি দিক বেশ তাৎপর্যপূর্ণ । বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ নাম রাখতেই বিজেপি ও কেন্দ্র সরকার হঠাৎ করে দেশের ইংরাজি নামের বদলে ‘ভারত’ নামে জোর দেওয়া শুরু করে। সেই কথা মাথায় রেখেই এই কর্মসূচিতে ‘ভারত’ ব্যবহার করা হয়েছে বলে কংগ্রেস সুত্রের খবর। অর্থাৎ ‘আওয়াজ ভারত কী’, কর্মসূচির সঙ্গে যাতে ‘ইন্ডিয়া’ শরিকদের থেকে নিজেদের স্বতন্ত্র রাখা যায় এবং একইসঙ্গে বিজেপির একাধিপত্যেও আঘাত করা যায় এই উভয় লক্ষ্যেই বাজিমাত করতে চায় কংগ্রেস।