গণধর্ষণের ভিডিও তুলে দলিত কন্যাকে ব্ল্যাকমেল, উচিত শিক্ষা দিলেন তরুণী

প্রতি বছর ১৮ ডিসেম্বরকে ন্যাশনাল মাইনরিটিজ রাইটস ডে হিসাবে পালন করা হয়। আমাদের দেশে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার।

Written by SNS Lucknow | December 20, 2020 4:28 pm

প্রতিকি ছবি (File Photo: iStock)

প্রতি বছর ১৮ ডিসেম্বরকে ন্যাশনাল মাইনরিটিজ রাইটস ডে হিসাবে পালন করা হয়। আমাদের দেশে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার। জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে এই দিনটিকে পালন করা হয়ে থাকে। কিন্তু সত্যিই কি দেশের সর্বত্র মানা হয় এই নিয়ম? সকলে সমান গুরুত্ব দেয় বিষয়টিকে? বােধ হয় না আর সে কারণেই আজও দলিত’দের ওপর নানা অত্যাচারের ঘটনা সামনে আসে। 

এই দিনেই এক দলিত মেয়ে তার ওপর হওয়া নির্যাতনের কথা সকলের সামনে তুলে ধরলেন। উত্তরপ্রদেশেই থাকেন তিনি। এখন আইন নিয়ে পড়াশােনা করছেন। কিন্তু কয়েক বছর আগে তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিছুতেই ভুলতে পারেন না তিনি। 

একটি পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই যুবতী বলেছেন, ‘আমার বয়স তখন ১৫ বছর। আমি পড়াশােনায় ভালাে ছিলাম। আমার বাবা দিনমজুর। তবুও কষ্ট করে আমাকে পড়াতেন। একদিন বই আনার জন্য আমি বাড়ি থেকে বাইরে যাই। তখন রাস্তায় একদল ছেলে আমাকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়। আমাকে একটা ধানক্ষেতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে আমি তাদের চিনতে পারি। আমাদের গ্রামেরই উচ্চবর্ণের ছেলে তারা। তিনজন ছিল। আমি তাদের হাতে পায়ে ধরি। বলি, আমি তােমাদের বােনের মতাে। আমাকে ছেড়ে দাও। কিন্তু ওরা আমার কথা শােনে না। গণধর্ষণ করে রেখে যায়’। 

এরপর ওই যুবতী আরও বলেন- আমার যখন জ্ঞান ফেরে তখন দেখি, আমি ক্ষেতের মধ্যে পড়ে রয়েছি। ওই ছেলেগুলাে নেই। কোনও মতে বাড়ি ফিরে এসে আমি বাবা-মাকে সব জানাই। আমার মা আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিল। এরপর দিন আমরা থানায় অভিযােগ জানানাের জন্য বাইরে গেলে ওরা এসে আমাদের একটা ভিডিও দেখায়। ধর্ষণের সময় ওরা ভিডিওটি করেছিল। সেই ভিডিও বাজারে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। সেই ভয়ে আমরা বাড়ি ফিরে আসি। আমার বাবা আত্মহত্যা করেন। তখন আমি নিজেই পুলিশকে সব জানাই। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গ্রামের মােড়লরা তিনজনের মধ্যে একজনকে বিয়ে করে নিতে বলেন। এমনকী পুলিশ বলে, এর এমন কি নতুন ঘটনা? 

সে সময় আমি একাই গ্রাম থেকে চলে এসে আদালতে কেস করি। আমি নিজে আইন নিয়ে পড়াশােনা করছি। নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়েছি। প্রতিবার কোর্টে গিয়ে আমাকে ধর্ষণের ঘটনা বর্ণনা করতে হত। আমার কাছে বিভীষিকার মতাে ছিল দিনগুলাে। তবে শেষ পর্যন্ত ধর্ষণকারীদের গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় পুলিশ। এরপর ধর্ষণকারীদের কারাগারে নিক্ষেপ করার পর আমার শান্তি হয়। 

এই সাক্ষাৎকারটি অফিশিয়ার হিউম্যান্স অব বম্বে তাদের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছে। এই পেজটি থেকে নানা ধরনের ঘটনা তুলে ধরা হয়।