বন্যা কবলিত কেরলে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের মতো। নিখোঁজ অসংখ্য। গত শনিবার রাতেই কোয়াট্রাম জেলার কোট্রিকল এলাকা থেকে ধসের খবর মিলেছিল। ৬ জনের মৃত্যুও হয়। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে প্রকাশ, রবিবার সকালে সেখান থেকে আরও তিনটি দেহ উদ্ধার হয়েছে। যার জেরে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯। এখনও নিখোঁজ আরও ১২ জন।
অন্যান্য জেলা থেকে আরও ৯ জনের মৃত্যুসংবাদ মিলেছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৮। যদিও সরকারি তথ্য বলছে, এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যের ছয় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আরবসাগরের দক্ষিণ পূর্বে কেরল উপকূলে অবস্থান করছে একটি নিম্নচাপ। আর তার জেরেই চলছে বৃষ্টিপাত।
Advertisement
রবিবার পর্যন্ত অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এদিন মৌসম ভবন জানিয়েছে, নিম্নচাপের তীব্রতা কমেছে। সোমবার থেকে বৃষ্টি কমবে। আপাতত পাঁচটি জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা ছাড়াও দুটি জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি রয়েছে। আরও সাতটি জেলায় জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা।
Advertisement
গত শনিবারই রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক সারেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। রবিবারও ফের বৈঠকে বসেছিল মন্ত্রিসভা। চলছে উদ্ধারকার্যও। ইতিমধ্যে এনডিআরএফের ১১ টি দল সেনার দুটি দল ও ডিফেন্স কর্পের আরও দুটি নেমেছে উদ্ধারকার্যে। সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে দুর্গতদের উদ্ধারে।
দক্ষিণ ভারতের কেরল রাজ্যের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। ছ’টি জেলায় লাল সতর্কর্তা এবং পাঁচটি জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। জলবন্দি অবস্থা থেকে দড়ি দিয়ে টেনে গাড়ি ডাঙায় তুলছেন দুর্গর মানুষ। পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হওয়ায় ইতিমধ্যে সেখানে পৌঁছে গিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি বিশাল টিম।
এছাড়া উদ্ধার কাজের জন্য কাজ শুরু করেছে সেনা ও বায়ুসেনা। মধ্য, দক্ষিণ কেরলের বিভিন্ন অংশ বৃষ্টির দাপটে প্লাবিত হয়েছে জেলাগুলি। রাজ্যের অনেকগুলি নদীতেই জল বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে। বৃষ্টি আগামী দিনে আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া দফতর।
দিল্লির মৌসম ভবনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণ-পূর্ব আরব সাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের ফলে কেরলের বেশ কয়েকটি জেলায় ১৭ অক্টোবর রবিবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হবে। ১৮ তারিখ থেকে দাপট কমলেও বৃষ্টি চলবে আরও কয়েকদিন।
কেরলে ইতিমধ্যে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে পথখনমখিট্টা, কোট্টায়াম, এর্নাকুলাম, ইদুক্কি, ত্রিচুর, পলক্কড় জেলায়। এছাড়া কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে তিরুঅননতপুরম, কোল্লাম, আলপ্পুঝা, পালাক্কড়, মলপ্পুরম, কোঝিকোড় ও ওয়ানাড়ে। এখানও পর্যন্ত ৩০ টি বাড়ির ক্ষতি হওয়ার খবর মিলেছে।
জেলায় জেলায় ত্রাণশিবির তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে জলাধারগুলির জলের পরিমাণ অত্যাধিক বাড়তে থাকায় চিন্তা আরও বেড়েছে। বৃষ্টির দাপটের কারণে সতর্কতা জারি করা হয়েছে লক্ষদ্বীপেও। কবে মিটবে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ? সেই প্রশ্ন কেরলবাসীর মুখে।
Advertisement



