আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে যৌন নির্যাতন ও খুনের ঘটনায় হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য এক নির্দেশিকা জারি করে সমালোচনার মুখে বিজেপি শাসিত রাজ্য অসমের শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে । যদিও সেই নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই তা প্রত্যাহার করে অসমের শিলচর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অসমের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে এক ট্যুইটে বলা হল, পূর্ববর্তী বিজ্ঞপ্তি বাতিল করা হচ্ছে। শীঘ্রই একটি নতুন নির্দেশিকা দেওয়া হবে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন এবং সরকারি নির্দেশিকা অনুসরণ করে নয়া পরামর্শবিধি জারি হবে। আগের নির্দেশিকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ‘রাতে হাসপাতালের বাইরে যাবেন না মহিলা চিকিৎসকরা।’ এহেন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক চরম আকার নিয়েছে। চাপের মুখে পড়ে বাধ্য হয়েই ওই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিল অসম সরকার।
হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসক ও পড়ুয়াদের উদ্দেশে বিজ্ঞপ্তি জারি করে অসমের ওই হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, মহিলা চিকিৎসক, পড়ুয়া এবং হাসপাতালের কর্মীরা রাতে বাইরে যাবেন না। নিতান্তই যদি যাওয়ার প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে তাঁরা যেন একা না যান। কম লোকজন রয়েছে এমন জায়গায় না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। অজেনা কারও সঙ্গে কথাবার্তা বলতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পাশাপাশি খারাপ লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষিত হয় এমন কোনও আচরণ না করার নির্দেশ হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে। এই নির্দেশিকা প্রসঙ্গে হাসপাতালের অধ্যক্ষ ভাস্কর গুপ্তা জানান, ‘খারাপ পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় তার জন্য আমার সতর্ক থাকা উচিত। আর আমরা চাই আমাদের চিকিৎসক ও পড়ুয়ারা যেন বিপদের মধ্যে না পড়েন।’
Advertisement
তবে হাসপাতালে এহেন ভাবনা চিন্তা তথা নির্দেশিকা নিয়ে নাক্কারজনক বলেই মত প্রকাশ করেছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। অনেকের প্রশ্ন, মহিলা চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করে মহিলাদের উদ্দেশেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এহেন নির্দেশিকায় কিভাবে জারি করল? আপত্তি চরম আকার নিতেই বাধ্য হয়ে ওই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হয়। এই পরিস্থিতিতে ১২ আগস্ট অসমের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এই নির্দেশিকা বাতিল করা হয়। এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়, ‘যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হল। শীঘ্রই নয়া নির্দেশিকা জারি করা হবে।’
Advertisement
উল্লেখ্য, আর জি কর কাণ্ডে ইতিমধ্যেই উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। মহিলা চিকিৎসককে যৌন নির্যাতন ও খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে পথে নেমেছেন পড়ুয়াদের পাশাপাশি নাগরিক সমাজ। কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা। এহেন পরিস্থিতির মাঝে অসমের হাসপাতালের বিতর্কিত নির্দেশিকায় নতুন করে বিতর্ক তৈরি করে।
Advertisement



