ইন্ডিগোর বিমান বিপর্যয়ে নাজেহাল যাত্রীরা। গত বুধবার লাগাতার ফ্লাইট বাতিলে হয়রানি শিকার হতে হচ্ছে সবাইকে। তার উপর যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার এবং থাকার ব্যবস্থা না করার অভিযোগ উঠেছে। ইন্ডিগোর বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে কেন্দ্র। এরই মধ্যে বিস্ফোরক চিঠি প্রকাশ্যে এল। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর জেরে সংস্থার সিইও-সহ অন্যান্য শীর্ষকর্তাদের উদ্দেশে ‘খোলা চিঠি’ লিখে ক্ষোভ উগরে দিলেন ইন্ডিগোর এক কর্মী।
চার পৃষ্ঠার ওই চিঠি ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। যদিও ভাইরাল হওয়া চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি দৈনিক স্টেটসম্যান। বিমানসংস্থাটির পতনের জন্য সংস্থার সিইও পিটার এলবার্স এবং অন্যান্য শীর্ষকর্তাদের চিঠিতে দায়ী করা হয়েছে। চিঠির শুরুতে নিজেকে ‘ইন্ডিগোর দীর্ঘ দিনের কর্মী’ হিসাবে পরিচয় দিয়ে সংস্থার অন্দরের নানা অব্যবস্থাও প্রকাশ্যে এনেছেন ওই কর্মী। চিঠিতে ইন্ডিগোর আট শীর্ষকর্তার নাম উল্লেখ করে তাঁদের বিরুদ্ধে নানা বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ঔদ্ধ্বত্যের পতন ঘটেছে। আমরা জানতাম, এমনই দুর্দিন আসবে ইন্ডিগোতে।’
Advertisement
নিজের নাম প্রকাশ না করে চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘আমি ইন্ডিগোর কোনও মুখপাত্র নই, একজন সামান্য কর্মী। এতদিন ধরে পরিষেবা দিয়েছি ইন্ডিগোকে। অসংখ্য নিদ্রাহীন রাত, অসম্ভব রস্টার, অপমান সহ্য করেছি। ইন্ডিগোর এই বিপর্যয় এখন আর কোনও আভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। গোটা দেশ ভুক্তভোগী। ফলে একজন ভারতীয় হিসেবেই এই চিঠি লিখছি আমি।’ এরপরই তিনি লেখেন, ‘যা ঘটেছে তা রাতারাতি ঘটেনি। এই দুর্দিন যে আসবে তা আমরা জানতাম। এটা একদিনের সমস্যা নয়। বছরের পর বছর ধরে এটা ঘটে চলেছে।’
Advertisement
চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, ‘অযোগ্য কর্মীরা উঠে আসেন শীর্ষ পদে। নয়া ব্যবস্থায় কর্মীদের কার্যত শোষণ করা হয়, অপমান চরম আকার নেয়। প্রবল কাজের চাপে ক্লান্ত কর্মীদের কথা শোনার পরিবর্তে তাঁদের ডেকে ভয় দেখানো হয় ও জঘন্য ভাষায় অপমান করা হয়। সমস্যা কথা বলার জায়গা নেই। সর্বত্র ভয়ের পরিবেশ। কিছু বললেই রাতের শিফট বাড়িয়ে দেওয়া, ছুটি বাতিল করা ছিল এখানে স্বাভাবিক ঘটনা। আচরণ এমন ছিল যে আপনি এখানে চাকরি পেয়েছেন ফলে আপনি ভাগ্যবান। ভিক্ষুকদের বাছবিচার থাকতে পারে না।’
চিঠিতে সিইও-সহ মোট ৮ জন শীর্ষকর্তার নাম উল্লেখ করেছেন। দাবি করা হয়েছে, এই যাবতীয় সংকটের জন্য এই ৮ জন দায়ী। এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সিইও পিটার এলবার্স। বাকিরা হলেন, জেসন হার্টার, অদিতি কুমারী, তাপস দে, রাহুল পাতিল, ইসিডোর পোরকেরাস, অসীম মিত্র এবং অক্ষয় মোহন।
গত পাঁচ দিনে অসংখ্য উড়ান বাতিল হয়েছে। রবিবারও দিল্লি এবং মুম্বই বিমানবন্দর থেকে ২২০টি উড়ান বাতিল করেছে বিমানসংস্থাটি। মুম্বই বিমানবন্দর থেকে বাতিল হয়েছে ইন্ডিগোর ১১২টি উড়ান। দিল্লি থেকে বাতিল হয়েছে ১০৯টি। শনিবারই এ নিয়ে ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষকে শোকজ করেছে দেশের উড়ান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ। তবে ইন্ডিগো জানিয়েছে, রবিবার মোট ৬৫০টি উড়ান বাতিল হলেও ১,৬৫০টি উড়ান নির্ধারিত সূচি মেনেই চলছে। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার দাবি করেছে ইন্ডিগো।
Advertisement



