• facebook
  • twitter
Wednesday, 23 April, 2025

ভারতে আরও পরমাণু চুল্লি বসাবে আমেরিকা

১ ফেব্রুয়ারি বাজেট প্রস্তাব পড়ার সময়ে ভারতের এই পারমাণবিক শক্তি আইন এবং পারমাণবিক দায়বদ্ধতা আইন (সিএলএনডিএ) সংশোধনের কথা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা।

প্রতীকী চিত্র

এবারের মোদির আমেরিকা সফরে কাটছে পরমাণু ক্ষেত্রে ১৬ বছরের পুরানো জট। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে হওয়া মোদি-ট্রাম্প বৈঠকে অসামরিক পারমাণবিক শক্তির বিষয়ে নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে আরও বেশি তৎপর হবে দুই দেশ। এদিনের বৈঠকের শেষে যৌথ বিবৃতিতে দুই দেশের তরফে জানানো হয়, ভারতে মার্কিনীদের নকশা করা পরমাণু চুল্লি তৈরির বিষয়ে দুই দেশ নিজেদের মধ্যে সহমত হয়েছে এবং এই ক্ষেত্রে পূর্ণ সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে সম্ভাব্য প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রক্রিয়াও চলবে।

২০০৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। সে সময় অসামরিক পারমাণবিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়েছিল দুই দেশ। দীর্ঘ আলোচনার পরে ২০০৮ সালে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি হয়। সেই সময় মনে করা হয়েছিল, এই চুক্তির ফলে ভারতে অসামরিক পারমাণবিক ক্ষেত্রে আরও বেশি করে বিনিয়োগ করবে আমেরিকা। কিন্তু পারমাণবিক ক্ষেত্রে ভারতের আইন ছিল অত্যন্ত কঠোর। সেই আইনের কারণেই এই বিষয়ে খুব একটা অগ্রগতি হয়নি। এই আইনে পরমাণু চুল্লিতে দুর্ঘটনা এবং তার দায়বদ্ধতা নিয়ে বিভিন্ন ধারা ছিল এই চুক্তির পথের মূল বাধা। তাই বিগত ১৬ বছর ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে অসামরিক পরমাণু ক্ষেত্রে কোনও কাজ হয়নি। পুরনো ওই চুক্তিতে ছিল, দ্বিপাক্ষিক অসামরিক পরমাণু প্রকল্প শুরু হওয়ার বহু বছর পরেও যদি দুর্ঘটনা ঘটে, তা হলেও বিনিয়োগকারী মার্কিন সংস্থা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। সেই কারণে পিছিয়ে যায় আমেরিকা।

প্রসঙ্গত, এবারের বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ‘পরমাণু শক্তি মিশন’ গড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কূটনৈতিক শিবির মনে করেছিল, ওই ঘোষণার মাধ্যমে আসলে আমেরিকাকে ইতিবাচক বার্তা দিতে চেয়েছিলেন তিনি। এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফরে দুই দেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। ভারতে আরও বেশি পরমাণু চুল্লি তৈরি করবে আমেরিকা। এই বিষয়ে সহমত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং মোদী, দু’জনেই। প্রায় ১৬ বছর আগে দুই দেশের মধ্যে হওয়া পারমাণবিক চুক্তি মেনেই এ দেশে আরও বেশি করে নিজেদের তৈরি এবং নকশা করা পরমাণু চুল্লি বসাবে আমেরিকা।

১ ফেব্রুয়ারি বাজেট প্রস্তাব পড়ার সময়ে ভারতের এই পারমাণবিক শক্তি আইন এবং পারমাণবিক দায়বদ্ধতা আইন (সিএলএনডিএ) সংশোধনের কথা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা। মোদী-ট্রাম্পের বৈঠকের পরে যৌথ বিবৃতি দিয়ে ভারতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। সিএলএনডিএ মেনেই দুই দেশ পরস্পরকে সহায়তা করার কথা জানিয়েছে। যদিও ১৯৬২ সালের পারমাণবিক শক্তি আইনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক শক্তি ক্ষেত্রে কোনও বেসরকারি সংস্থা বিনিয়োগ করতে পারবে না। মনে করা হচ্ছে, আইন সংশোধন করে এই ধারাতেও বদল আনবে ভারত।