বিলের টাকা বকেয়া, অসুস্থ বৃদ্ধকে দড়ি দিয়ে বেডের সঙ্গে বেঁধে রাখল হাসপাতাল

আশি বছরের এক বৃদ্ধকে হাসপাতালের বিছানায় দড়ি বেঁধে রাখার ঘটনা ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের শাজাপুরের হাসপাতালে। তিনি চিকিৎসার খরচ মেটাতে পারেননি এটাই তার অপরাধ।

Written by SNS Bhopal | June 8, 2020 9:57 am

বিলের টাকা বকেয়া, অসুস্থ বৃদ্ধকে দড়ি দিয়ে বেডের সঙ্গে বেঁধে রাখল হাসপাতাল। (Screengrap: Twitter / @OfficeOfKNath)

এ লজ্জা রাখবো কোথায়! সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও শোরগোল ফেলে দিয়েছে যা দেখে লজ্জিত হচ্ছে দেশবাসী। আশি বছরের এক বৃদ্ধকে হাসপাতালের বিছানায় দড়ি বেঁধে রাখার ঘটনা ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের শাজাপুরের হাসপাতালে। তিনি চিকিৎসার খরচ মেটাতে পারেননি এটাই তার অপরাধ। তাই কোনভাবেই তিনি যাতে হাসপাতাল থেকে পালাতে না পারেন তাই তাকে বেডের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে।

যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাফাই ওই বৃদ্ধের খিচুনির সমস্যা রয়েছে। তাই তিনি নিজেকে যাতে কোনওভাবে আঘাত করতে না পারেন সে জন্য এমন বন্দোবস্ত করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন বটে কিন্তু আমজনতা মানতে নারাজ। কারণ এই ঘটনায় স্তম্ভিত হয়েছে নেট দুনিয়া।

প্রকৃতপক্ষে ঠিক কি ঘটেছে তা জানার জন্য মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। সেই সঙ্গে টুইটারে ঘটনার তীব্র নিন্দা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপেরও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। শাজাপুরের ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে জেলা হাসপাতালের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে।

এদিকে রোগীর পরিবারের দাবি চিকিৎসা খরচ বাবদ এগারো হাজার টাকা তারা দিতে পারেনি। সে কারণে বৃদ্ধকে বেঁধে রাখা হয়েছে। বৃদ্ধের মেয়ে জানিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি করার সময় পাঁচ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়েছিল। এরপর আরও কিছুদিন যায় চিকিৎসার জন্য। বিল হয়ে যায় এগারো হাজার টাকা। আমাদের কাছে আর কোনও টাকা নেই।

যদিও হাসপাতালের তরফে ডাক্তারের পাল্টা দাবি, দীর্ঘদিন ধরে খিচুনির সমস্যা রয়েছে বৃদ্ধের। কোনভাবে নিজেকে আঘাত করে ফেললে মুশকিল হবে। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত। মানবিকতার কারণে ওই বৃদ্ধের বিল মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও ডাক্তার দাবি করেন। পরিবারের কাছ থেকে কোনও টাকা চাওয়া হয়নি। যদিও ডাক্তারের দাবির কতটা সত্যতা রয়েছে তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা কমলনাথও টুইট করে এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। ঘটনাকে তিনি হিংস্র ও অমানবিক বলেও ব্যাখ্যা করেছেন। ইতিমধ্যে শাজাপুর জেলা প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে। জেলার ডি এস দীনেশ জৈন বলেছেন, এসডিএমের একটি দল এবং একজন ডাক্তারকে ইতিমধ্যেই হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা খতিয়ে দেখে যা রিপোর্ট দেবেন সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে কাউকেই ছাড়া হবে না।