গত বছর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক তলানিতে। শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া প্রসঙ্গে ভারতের সঙ্গে সু-সম্পর্ক বজায় রাখতে রাজি নয় বর্তমান মুহাম্মদ ইউনূস পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকার। ভারত সম্পর্কে একাধিকবার কটূক্তি করায় পাল্টা জবাব হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে একাধিক চুক্তি বাতিল করেছে ভারত। এবার জানা গেল শেখ হাসিনার আমলে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ১০টি চুক্তি বাতিল করেছে ইউনূস সরকার।
সোমবার বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দাবি করেন, ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ১০টি চুক্তি বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তিনি তাঁর পোস্টে ভারতের সঙ্গে বাতিল ও বিবেচনাধীন চুক্তি-প্রকল্পগুলির একটি তালিকাও প্রকাশ করেন।
Advertisement
এগুলি হল– ত্রিপুরা-চট্টগ্রাম রেল সংযোগ প্রকল্প, অভয়পুর-আখাউড়া রেলপথ সম্প্রসারণ, আশুগঞ্জ-আগরতলা করিডর, ফেনী নদী জল ব্যবস্থাপনা প্রকল্প, বন্দরের ব্যবহার সংক্রান্ত সড়ক ও নৌপথ উন্নয়ন চুক্তি, ফারাক্কাবাদ সংক্রান্ত প্রকল্পে বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতা প্রস্তাব, সিলেট-শিলচর সংযোগ প্রকল্প, পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সম্প্রসারণ চুক্তি, ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল (মিরসরাই ও মোংলা আইইজেড) এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানি জিআরএসইর সঙ্গে টাগ বোট চুক্তির কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
Advertisement
যদিও ভূঁইয়ার এই বিবৃতি নিয়ে বাংলাদেশের প্রশাসনের মধ্যেই শুরু হয়েছে জলঘোলা। ভূঁইয়ার মন্তব্যের ঠিক পরের দিন তাঁকে কটাক্ষ করে বাংলাদেশের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা এম তৌহিদ হুসেন বিদেশ মন্ত্রকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘ আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার এই ধরনের বিবৃতি দেওয়া এড়ানো উচিত ছিল। চুক্তি বাতিলের যে তালিকাটি সামনে এসেছে তা সঠিক নয়। আমি ওই মন্তব্য নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।
তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া যে ১০টি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাতিলের কথা বলছেন তার মধ্যে মাত্র ১টি চুক্তি বাতিল হয়েছে যেটি শেখ হাসিনার আমলে ভারতের সঙ্গে হয়েছিল। সেটি হল ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানি জিআরএসইর সঙ্গে টাগবোট সরবরাহ সংক্রান্ত চুক্তি। তবে ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তি পর্যালোচনা প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন তৌহিদ বাতিল হওয়া চুক্তিকে বাংলাদেশের পক্ষে লাভজনক নয় দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, “ঢাকা এবং দিল্লির মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতেই চুক্তি ভাঙার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই চুক্তি যেমন বাতিল হয়েছে আবার অন্যদিকে সরকার বর্তমানে আদানির কোম্পানির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি এবং ভারতের ঋণের অধীনে চলা আরও কিছু প্রকল্প পর্যালোচনা করছে।’
Advertisement



