শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকলেই সর্দি-কাশির সমস্যায় ভোগেন বহু মানুষ। শীতকালে তাপমাত্রার হঠাৎ পরিবর্তন, শুষ্ক বাতাস, গরম থেকে ঠান্ডা পরিবেশে প্রবেশ- এই ট্রায়ো সর্দিকাশির প্রাদূর্ভাব অতিমাত্রায় বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণের কারণে কাশির প্রকোপ আরও বেড়ে যায়। এই সময়টিতে আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তনে, আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কমে যায়, যা কাশির মতো সমস্যা তৈরি করে। কাশির চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ওষুধ কিন্তু চমৎকারভাবে কাজে আসে। কাশির ধরন, তার কারণ, বাড়া-কমা ও রোগীর অন্যান্য উপসর্গ সমগ্রভাবে মিলিয়ে দেখে, হোমিওপ্যাথি ওষুধ প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।
• অ্যাকোনাইট: শীতের শুরুতে ঠান্ডা, শুষ্ক বাতাস লেগে কাশি ও সঙ্গে শ্বাসনালীতে প্রদাহ, শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় বাঁশির মতো শব্দ হলে, অ্যাকোনাইট ভালো কাজ করে।
• ব্রায়োনিয়া: হঠাৎ ঠান্ডা হাওয়া থেকে শুকনো কাশি, সঙ্গে মুখ-ঠোঁট শুকিয়ে যেতে থাকলে, ব্রায়োনিয়া ভালো কাজ করে।
• কালিবাই: হালকা কাশি সঙ্গে কফ বেরিয়ে আসা এবং কফ যেন দড়ির মতো টানা বেরিয়ে আসতে চায়- এমন উপসর্গ দেখলে তবে কালিবাই-এর কথা ভাবা যেতে পারে।
• স্পনজিয়াটোস্টা: যদি ঘরঘরে শুকনো কাশি যা কথা বলতে, বই পড়তে, গান করতে গেলে বাড়ে এবং গরম খেলে কমে, সে ক্ষেত্রে আমরা স্পনজিয়া খাওয়ার কথা ভাবতে পারি।
• বেলেডোনা: ঠান্ডা লেগে, চোখ-মুখ লাল হয়ে গিয়েছে, সঙ্গে ভীষণ কাশি ও মাথায় দপদপে ব্যথা হলে, বেলেডোনা অব্যর্থ কাজ দেয়।
• হেপারসালফার: যদি দেখেন ঠান্ডা হাওয়ায় গলা ব্যথা, ঢোঁক গিলতে গেলে ব্যথা বাড়ছে, সেই সঙ্গে কাশি হচ্ছে, যদি হাঁটাচলা শুরু করলে কাশি বাড়ে, তবে হেপারসালফার খুব ভালো কাজ দিতে পারে।
• ড্রসেরা: খুশখুশে কাশি এবং খেতে গেলে বা খাবার খাওয়ার পর কাশি বেড়ে গেলে ড্রসেরা চমৎকার কাজ করে।
• রিউমেক্স: শুকনো কাশি সঙ্গে খুব সামান্য কফ বেরিয়ে আসা। গলায় চাপ দিলে, কথা বললে ও ঠান্ডা হাওয়া লাগালেই কাশি কমে যাওয়ার মতো উপসর্গ থাকলে, রিউমেক্সের কথা ভাবা যেতে পারে।
• কস্টিকাম: কাশতে কাশতে কফ বেরিয়ে আসা এবং কিছুটা কফ সব সময় যেন গলায় রয়ে যাচ্ছে এমন মনে হচ্ছে, অথচ ঠান্ডা জল খেলে কাশি কমে যায়। এরকম হলে তবে কস্টিকাম ভালো কাজ দেবে।
• হায়োসায়ামাস: যদি শুয়ে থাকলে শুকনো কাশি বাড়ে ও উঠে বসলে কাশি কমে যায় এবং কিছু খেতে গেলে, কথা বলতে গেলে কাশি আবার বাড়তে থাকে- তাহলে হায়োসায়ামাস কার্যকর হবে।
Advertisement
এছাড়াও ক্ষেত্রবিশেষে উপসর্গের মিল থাকলে পালসেটিলা, ফসফরাস, ন্যাট্রামমিউর, সাইলেসিয়া প্রভৃতি ওষুধও কাশি নিরাময়ে ভালো কাজ দেয়। তবে অবশ্যই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ভেবে হোমিওপ্যাথি ওষুধ কখনওই খাওয়া উচিত নয়। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকলেও, কিছু ক্ষেত্রে রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে সাময়িকভাবে রোগের আকার বৃদ্ধি পেতে পারে।
Advertisement
Advertisement



