বার্গার বা পিৎজ়া দেখলেই মন টানে—এটা আজকের দিনে খুবই স্বাভাবিক।ব্যস্ত জীবনে অনেকেই আবার মনে করেন, প্যাকেটজাত ফলের রস, ফ্লেভার দেওয়া দই বা ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল খেলে শরীরের ক্ষতি হবে না। শিশুদের হাতেও নিশ্চিন্তে তুলে দেওয়া হয় এই সব খাবার। কিন্তু এগুলি কতটা স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, আমাদের রোজকার খাবারের মাধ্যমেই ধীরে ধীরে শরীরে ঢুকছে ক্ষতিকর রাসায়নিক।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা যা খাচ্ছি, তার বড় অংশই কোনও না কোনও ভাবে প্রক্রিয়াজাত বা প্যাকেটজাত। চাল-ডাল থেকে শুরু করে বিস্কুট, কুকি, ইনস্ট্যান্ট নুডল, সস, জাঙ্ক ফুড, সব কিছুতেই থাকে নানা ধরনের প্রিজারভেটিভ ও অ্যাডিটিভ গবেষণায় বলা হয়েছে, এই খাবারগুলির মধ্যে থ্যালেট, বিসফেনল, পিএফএস-এর মতো রাসায়নিক পাওয়া যাচ্ছে, যা শরীরের হরমোনের স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। দীর্ঘদিন শরীরে জমতে থাকলে এগুলি ক্যানসার বা প্রজনন ক্ষমতা হ্রাসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
Advertisement
চকোলেট, বিস্কুট, বোতলবন্দী ফলের রস, ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল কিংবা সসে প্রায়ই থাকে সোডিয়াম নাইট্রাইট। এই উপাদান বেশি পরিমাণে শরীরে ঢুকলে ক্যানসার, স্নায়বিক সমস্যা ও মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার আশঙ্কা থাকে। আবার হিমায়িত মাংস বা দোকান থেকে কেনা ভাজাভুজি দীর্ঘদিন ভালো রাখতে ব্যবহার করা হয় এন-নাইট্রাসো যৌগ, যা কোলন ও পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
Advertisement
ডায়েট সোডা, জিরো ক্যালোরি পানীয় বা চিউইং গামেও এমন রাসায়নিক থাকে, যা মূত্রথলির ক্যানসারের কারণ হতে পারে।খাবার প্যাকেট করার জন্য ব্যবহৃত ‘বিসফেনল এ’ বা বিপিএ রক্তে মিশে কিডনি ও প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যার জন্ম দিতে পারে। খুব বেশি তাপমাত্রায় ভাজা বা রোস্ট করা খাবারে তৈরি হয় অ্যাক্রিলামাইড, যা ডিএনএর ক্ষতি করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্যাকেটজাত খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই সবচেয়ে ভালো।প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় মুড়ি, চিঁড়ে, খই, ছাতু, সুজি, ছোলা, বাদামের মতো সহজ ও ঘরোয়া খাবার রাখার চেষ্টা করা উচিত। সবচেয়ে জরুরি হল শিশুদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা। টিফিনে বাড়ির তৈরি খাবার দিলে শুধু অভ্যাসই নয়, তাদের ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্যও অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকবে।
Advertisement



