বর্তমান সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণের বিকল্প বেছে নিচ্ছেন, বহু মহিলাই। কিন্তু আপনার যদি হৃদরোগ থাকে, বা হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে, তাহলে এটা জানা গুরুত্বপূর্ণ যে গর্ভনিরোধকের ব্যবহার আপনার পক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কারণ কনট্রাসেপটিভ পিল, হৃদরোগের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
এস্ট্রোজেনকে এক্ষেত্রে আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখার প্রয়োজন হতে পারে। আপনি যদি বেশি বয়স্ক মহিলা হন, ধূমপান করেন, বা করোনারি রোগের পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে- তাহলে পিলের মাধ্যমে এস্ট্রোজেন উপাদান যোগ করা হলে ঝুঁকি বাড়ে। বিকল্প হল, শুধুমাত্র প্রোজেস্টেরন-ভিত্তিক গর্ভনিরোধক ব্যবহার না করে, অন্যান্য পদ্ধতি রয়েছে যা সাধারণত এই রোগীদের জন্য নিরাপদ।
অনেকে ঋতুচক্র নিয়ন্ত্রণের জন্য ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন-যুক্ত গর্ভনিরোধক ওষুধের সংমিশ্রণ ব্যবহার করেন। এটি আপনার রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে পারে।
যেহেতু উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল, দুটিই কার্ডিওভাসকুলার রোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানা যায়-তাই আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে গর্ভনিরোধক ব্যবহার করা ভালো। গর্ভাবস্থা নিজেই একটি প্রোথ্রোম্বোটিক অবস্থা। তাই যে-কোনও পূর্ব-বিদ্যমান অসুখ, গর্ভাবস্থাকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত জন্মগত হৃদরোগ, গুরুতর ফুসফুসের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃৎপিণ্ডের পেশী সঞ্চালনে সমস্যা, পূর্ববর্তী হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রেস-প্ররোচিত কার্ডিওমায়োপ্যাথি।
অনেক হরমোন-ভিত্তিক জন্ম নিয়ন্ত্রণের বিকল্প রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে- ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন সংমিশ্রণের জন্ম নিয়ন্ত্রণ, শুধুমাত্র প্রোজেস্টেরনের মাধ্যমে জন্ম নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি। এছাড়াও অ-হরমোন-ভিত্তিক গর্ভনিরোধক বিকল্প রয়েছে যেমন কনডোম, ডায়াফ্রাম, সার্ভিকাল ক্যাপ বা স্পঞ্জের ব্যবহার। কিছু মানুষ প্রাকৃতিক পরিবার পরিকল্পনা বা উইথড্রয়াল পদ্ধতির উপরেও নির্ভর করেন। যদিও প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলি নিশ্চয়তা দেয় না এবং সেগুলির ব্যর্থতার হার খুব বেশি। এগুলি তবু সর্বাধিক ব্যবহৃত পদ্ধতি, বিশেষত যদি রোগীর কার্ডিয়াক জটিলতার উচ্চ ঝুঁকি থাকে।
আরও স্থায়ী বিকল্প রয়েছে যেমন টিউবাল লাইগেশন, ভ্যাসেকটমি। এগুলি আপনি বিবেচনা করতে পারেন, তবে জন্ম নিয়ন্ত্রণের আলোচনায় আপনার সঙ্গীকেও অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না।