কাতারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নৌ সেনার প্রাক্তন আট কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন বিদেশমন্ত্রী

Written by SNS October 30, 2023 5:23 pm

India's Foreign Minister Subrahmanyam Jaishankar delivers a speech during the Association of Southeast Asian Nations (ASEAN) Post Ministerial Conference with India at the ASEAN Foreign Ministers' meeting in Jakarta on July 13, 2023. (Photo by BAY ISMOYO / POOL / AFP)

দিল্লি, ৩০ অক্টোবর – গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ভারতীয় নৌ সেনার প্রাক্তন আট কর্মীকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে কাতার৷ ভারতীয় নৌ সেনার এই কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর৷ এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে নিজেই একথা জানান বিদেশমন্ত্রী৷ ওই আটজনের মুক্তির বিষয় সরকার সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি৷
মাইক্রো ব্লগিং সাইটে জয়শংকর লিখেছেন, ‘পরিবারের উদ্বেগ ও বেদনা ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করেছি৷ কেন্দ্র যে আট জনের মুক্তির জন্য নিরলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাবে, তা তাঁদের বলা হয়েছে৷ পরিবারের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রেখে চলছে সরকার৷’
উল্লেখ্য, কাতারে মৃতু্যদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছে আট ভারতীয়৷ এই ঘটনার পরই ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল, এই রায়ে তারা হতবাক৷  আট ভারতীয়র ফাঁসির সাজার খবর প্রকাশ্যে আসতেই নডে় চডে় বসে নয়াদিল্লি৷ এই পরিস্থিতিতে সাজাপ্রাপ্ত ৮ ভারতীয়কে কাতার থেকে দেশে ফেরানোর জন্য ভারতের তরফে চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে জানা ষায়৷ এই রায়ের আইনগত বিকল্প খোঁজার কাজ চালাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক৷
এদিকে দেশের রাজনৈতিক জগতের নেতারা সরকারের কাছে আবেদন করেছেন, যেভাবেই হোক এই ৮ ভারতীয়কে যেন দেশে ফেরানো হয়৷ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, শশী থারুর, মণীশ তিওয়ারি, জয়রাম রমেশ, অরবিন্দ কেজরিওয়ালরা সরব হয়েছেন এই ইসু্যতে৷ তাঁদের সাজা মকুব ও দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে ভারত সরকার৷
এদিকে সাজা মকুবের জন্য কুয়েতের আমিরের কাছে অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এমনটাই চাইছেন পরিবারের সদস্যরা৷
বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই আট জনকে বাঁচানোর ক্ষেত্রে মোট তিনটি বিকল্প রয়েছে৷  প্রথমত, রায়ের বিরুদ্ধে কাতারের উচ্চ আদালতে আপিল করা যেতে পারে৷ সেক্ষেত্রে ১৫ দিনের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে দিল্লিকে৷ তবে এখনও কাতারি আদালতের রায়ের কপি বিদেশ মন্ত্রক হাতে পেয়েছে কিনা জানা যায়নি৷
দ্বিতীয়ত, কাতার কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা ভিক্ষার পথে হাঁটতে পারে মোদি সরকার৷ সেক্ষেত্রে কূটনীতিকে হাতিয়ার করে এগোতে হবে নয়াদিল্লিকে৷  তৃতীয়ত আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে ভারত৷
এদিকে ২০১৫ সালে ভারত ও কাতারের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল৷ সেই চুক্তি ছিল, ভারতের কোনও নাগরিক যদি কাতারে গ্রেফতার হয় বা কাতারের নাগরিক ভারতে গ্রেফতার হয়, তাহলে নিজেদের দেশে সেই ধৃতকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে৷ সাজার বাকি কাল নিজের দেশের জেলেই কাটাবে সেই অপরাধী৷ এদিকে এই চুক্তি অনুযায়ী ৮ ভারতীয়কে ফেরানো না গেলে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কথাও ভাবছে ভারত৷ এর আগে কূলভূষণ যাদবের ক্ষেত্রেও এমন পদক্ষেপ করেছিল ভারত৷

যে আটজনকে কাতারের আদালত ফাঁসির সাজা দিয়েছে, তাঁরা হলেন ক্যাপ্টেন নভতেজ সিং গিল, ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্র কুমার ভার্মা, ক্যাপ্টেন সৌরভ বশিষ্ঠ, কমোডর অমিত নাগপাল, কমডোর পূর্ণেন্দু তিওয়ারি, কমডোর সুগুনাকর পাকালা, কমোডর সঞ্জীব গুপ্ত ও নাবিক রাগেশ৷
এরা প্রত্যেকেই কাতারের একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন৷ প্রতিষ্ঠানটি কাতারি নৌসেনাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করত৷ আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ইজরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করেছেন৷ ডুবোজাহাজের তথ্য পাচারের মতো মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে৷