দিল্লি, ৮ মার্চ– ২০২৪-এর লোকসভা শিওরে দাঁড়িয়ে। তার জোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দলই। তবে এই ভোটের সাংগঠনিক প্রস্তুতি এক বছর আগেই শুরু করেছে বিজেপি । গত বছর পুজোর পর থেকে পাড়া বৈঠক, জাঠা, জনসভার মতো মাঠে-ময়দানের কর্মসূচিও শুরু করেছে পদ্ম শিবির। সেই ক্রমেই হোলির পর মাঠে নামছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ।
বিজেপি সূত্রের খবর, ২৪-এর প্রচারে ২০১৪-র মতোই প্রধানমন্ত্রী মোদি দেশের কোনায় কোনায় ছুটবেন। যদিও সেবার আর এবারে পার্থক্য আছে। সেবার গিয়েছিলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে। সঙ্গে ছিল গুজরাত মডেল। এবার যাবেন দু’বারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাজের খতিয়ান নিয়ে। গেরুয়া শিবিরের খবর, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বিধানসভা ভোটের কৌশল অবলম্বন করবে দল। বাংলা-সহ অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির জন্য তৈরি করা হচ্ছে উন্নয়ন প্যাকেজ। সেই মতো বেঙ্গল প্র্যাকেজ তৈরির কাজ শুরু করেছে বঙ্গ বিজেপি।
Advertisement
পদ্ম শিবিরের কর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগেই প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের নানাপ্রান্তে একশো সভা করবেন। সভাগুলিতে তিনি বর্তমান সরকারের ভাল কাজের দৃষ্টান্ত তুলে ধরার পাশাপাশি পেশ করবেন স্মার্ট ইন্ডিয়ার পরিকল্পনা। আর তা হবে রাজ্যের চাহিদাকে বিবেচনায় রেখে।
Advertisement
ইতিমধ্যে দলের সংখ্যালঘু ও মহিলা মোর্চা নির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে। সংখ্যালঘু মোর্চা দেশের ৬০টি লোকসভা আসনে বিশেষ প্রচার শুরু করেছে গত সপ্তাহ থেকে। ওই আসনগুলিতে ভোটারের তিরিশ শতাংশ সংখ্যালঘু। সংখ্যালঘু মোর্চা আপাতত বাংলা-সহ ১০টি জেলায় প্রচার চালাবে।
অন্যদিকে, উজ্জ্বলা এবং প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনায় সুবিধাপ্রাপ্ত মহিলাদের কাছে যাচ্ছে বিজেপির মহিলা মোর্চা। সুবিধাপ্রাপ্ত মহিলাদের সঙ্গে সেলফি তুলে দলের সদর দফতরে পাঠাতে বলা হয়েছে মহিলা মোর্চার নেতৃত্বকে। গোটা দেশে এক কোটি মহিলার সঙ্গে সেরফি তোলার কর্মসূচি নিয়েছে মোর্চা।
হোলির পর ময়দানে নামবেন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লির সদর দফতর সব রাজ্য কমিটির কাছে মোদীর সভার পছন্দসই সময় জানতে চেয়েছে। হোলির পর থেকে জুন পর্যন্ত একাধিক রাজ্যে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। জুলাই-অগাস্ট ভরা বর্ষার সময় ময়দানে সভা করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী তখন ভার্চুয়াল মাধ্যমে ভাষণ দেবেন। বাংলায় পুজোর আগে ও পরে মিলিয়ে দু’মাস সভা-সমাবেশ একপ্রকার বন্ধ থাকে। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক-সহ বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষার জন্য অনেক রাজ্যেই একমাস প্রকাশ্যে মাইক বাজানো বন্ধ রাখা হয়। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর সভা বড় স্টেডিয়ামে করা সম্ভব কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিজেপি সূত্রের খবর, বাংলাকে নিয়ে বিজেপির বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ আসন এবার লক্ষ্যমাত্রা বিজেপির। এ জন্য বাংলায় তাদের অন্তত ২৫ আসলে জয় হাসিল করতে হবে। রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, গতবারের জেতা ১৮টি আসন দখলে রাখাই কঠিন চ্যালেঞ্জ। আরও সাতটি আসনে জয় হাসিল কীভাবে সম্ভব তা এখনও স্পষ্ট করেনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
তবে দিল্লির নেতারা মনে করছেন, বাংলার জন্য যে প্যাকেজ তৈরি হচ্ছে তাতেই মোড় ঘুরে যাবে। এক নেতার কথায়, পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়েও আমরা সেভাবে ভাবিত নই। দল মনে করছে, মোদীজির দশ বছরের কাজের জন্যই মানুষ ভোট দেবে। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক প্রত্যাশা পূরণের ঘোষণা তো থাকবেই।
Advertisement



