দাসত্বের মানসিকতা বহনকারীরা সংস্কৃতকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে

Written by Sunita Das October 28, 2023 5:34 pm

মধ্যপ্রদেশে ‘মামা’কে ব্রাত্য রেখেই হিন্দুত্বের তাস মোদীর
ভোপাল, ২৮ অক্টোবর– আসন্ন বিধাসভা ভোটে মধ্যপ্রদেশ যে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা প্রামণ করেছেন মধ্যপ্রদেশে পরপর প্রধানমন্ত্রীর সফর৷ চলতি মাসে চার দিন, তার মধ্যে কেবল এই সপ্তাহেই দু’দিন সে রাজ্যে গেলেন তিনি৷ শনিবার চিত্রকূটে পরিচিত ভঙ্গিতে হিন্দুত্বের তাস খেলতেই দেখা গেল তাঁকে৷ যদিও রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, গত দেড় দশকে রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তার বিরুদ্ধে লড়তে হিন্দুত্বের তাস কতটা কাজে লাগবে, তা নিয়ে সংশয়ে খোদ বিজেপি নেতৃত্বই৷
এমনিতেই মোদি-অমিত শাহের কাছে কার্যত ব্রাত্য হয়ে পড়া মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চহ্বানকে (যিনি রাজ্যে পরিচিত ‘মামা’ হিসাবে) এ বারের ভোটে এক রকম গুরুত্বহীন করে রাখা হয়েছে৷ এ দিনও তাঁকে কার্যত মঞ্চের বাইরে রেখেই সমস্ত প্রচারের আলোটুকু ফেলা হল সেই মোদীর উপরে৷ বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, মধ্যপ্রদেশের কঠিন লড়াইয়ে তাদের ভরসা তারকা প্রচারক নরেন্দ্র মোদিই৷
এদিন প্রচারে গিয়ে সাতনা জেলার চিত্রকূটে বিখ্যাত রঘুবীর মন্দিরে পুজো করেন প্রধানমন্ত্রী৷ যোগ দেন শ্রী সদগুরু সেবা সংঘ ট্রাস্টের অনুষ্ঠানে৷ তুলসী পীঠে গিয়ে জগদগুরু রামভদ্রচারিয়ার আশীর্বাদ নিতেও দেখা যায় তাঁকে৷ যান কাঞ্চ মন্দিরে৷ একটি অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করেন ‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কি রাষ্ট্রলীলা’, ‘অষ্টধ্যায় ভাষ্য’ প্রমুখ বইয়ের৷ তুলসী পীঠের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অনেক রামমন্দিরে পুজো করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে৷ আজ জগদগুরু রামভদ্রচারিয়ার আশীর্ব্বাদ পেয়েছি৷ চিত্রকূট আমাকে বরাবরই উজ্জীবিত করে৷” অষ্টাধ্যায় সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, “এটি ভারতের ভাষা, মেধাসম্পদ এবং গবেষণার সংস্কতি নিয়ে লেখা হাজার বছরের পুরনো গ্রন্থ৷” এ দিনের অনুষ্ঠানে সংস্কৃতের জয়গান করে মোদীর উক্তি, “হাজার হাজার বছরে কতই না ভাষা এসেছে আবার মুছে গিয়েছে বিশ্বে৷ নতুন ভাষা এসে পুরনোকে সরিয়ে দিয়েছে৷ কিন্ত্ত আমাদের সংস্কৃতি স্থিতধী এবং অটল৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃত আরও সমৃদ্ধ হয়েছে, কিন্ত্ত দূষিত হয়নি৷”
প্রসঙ্গত চিত্রকূটের গুরুত্বপূর্ণ একটি ধর্মীয় এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান এই তুলসী পীঠ, যা ১৯৮৭ সালে রামভদ্রচারিয়া প্রতিষ্ঠা করেছিলেন৷ এখান থেকে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী গ্রন্থ প্রকাশিত হয়৷ এখানে দাঁডি়য়ে সংস্কৃত প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সেই হিন্দুত্বের তাস খেলেই মোদি একই সঙ্গে পূর্বতন মুসলমান শাসক এবং পরবর্তীতে কংগ্রেস জমানাকে নিশানা করেন৷ মোদি বলেন, “সংস্কৃত বহু ভাষার জননী৷ অনেক চেষ্টা হয়েছে গত ১০০০ বছরের দাসত্বের সময় সংস্কৃত ভাষাকে পুরোপুরি শেষ করে দেওয়ার৷ আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, কিন্ত্ত দাসত্বের মানসিকতা বহনকারীরা সংস্কৃত প্রসঙ্গে বিরূপ মনোভাবাপন্ন ছিলেন৷ অন্য দেশের মানুষ যখন তাঁর নিজের ভাষায় কথা বলেন, তখন এরা প্রশংসা করেন৷ অথচ তাঁরা মনে করেন, সংস্কৃত ভাষা পিছিয়ে পড়ার লক্ষণ৷ এই ধরনের মানুষ গত এক হাজার বছরে সফল হননি, ভবিষ্যতেও হবেন না৷”