কেন্দ্রীয় বাহিনীদের দিয়ে ভােট দিতে বলাচ্ছে বিজেপি, অভিযোগ মমতার

বুথে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়ে ভোটারদের ভোট দিতে বলাচ্ছে বিজেপি। নির্বাচন কমিশনের কাছে এই নিয়ে নালিশ করবেন বলে সতর্ক করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Written by SNS Arambagh | April 24, 2019 11:04 am

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo: IANS)

বুথে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়ে ভোটারদের ভোট দিতে বলাচ্ছে বিজেপি। নির্বাচন কমিশনের কাছে এই নিয়ে নালিশ করবেন বলে সতর্ক করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরামবাগে জনসভা করতে এসে কার্যত বিজেপিকে তুলোধনা করলেন তিনি। তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের খতিয়ানের পাশাপাশি তিনি আক্রমণের নিশানা করেন নরেন্দ্র মোদিকে। তাঁর কথায়, ‘পাঁচ বছর আগে উনি বলেছিলেন, চাওয়ালা আছি। এখন সেই চাওয়ালা বলছেন, চৌকিদার আছি। ‘এইটুকু বলার পরই দর্শক আসন থেকে স্লোগান উঠল ‘চৌকিদার চোর হ্যায়।’

মমতার বক্তব্য, ‘কোনও দেশের প্রধানমন্ত্রী এত মিথ্যা কথা বলেন আগে শুনিনি। ওদের মুখে লিউকোপ্লাস্ট এটে দিন।’ নোট বাতিল, এনআরসি থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বিজেপিকে কাঠগড়ায় দাড় করান।

মঙ্গলবার আরামবাগ পারুল মাঠ ও খানাকুল বিপিনবিহারি পাঠাগারের মাঠে দলীয় প্রার্থী অপরূপা পোদ্দারের সমর্থনে জনসভা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুর ১টা নাগাদ আরামবাগে নামেন তাঁর কপ্টার। এরপর সেখানে জনসভা করে খানাকুল মাঠে নামেন দুপুর ২টো নাগাদ। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের কথা বলতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, ‘খানাকুল, উদয়নারায়ণপুর, পুরশুড়া প্রতি বছরই বন্যার জলে ডুবে যায়। মানুষের দুর্দশার সীমা থাকে না। আমরা আরামবাগের জন্য একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছি। এতে ৪০ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ হলে এই এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। আমরা লোয়ার দামোদর বেসিন প্রোজেক্ট নামে আরও একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। বাজেট ধরা হয়েছে তিন হাজার কোটি টাকা। মূলত বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচের ব্যবস্থা, কালভার্ট উন্নয়ন ইত্যাদি হবে। কাজ শুরু হয়েছে সড়ক নির্মাণের। মেদিনীপুরের কোলাঘাট থেকে এই পথটি দাসপুর হয়ে জয়রামবাটি-কামারপুকুর হয়ে উত্তরবঙ্গে যাবে। এটি তিন হাজার দুশো কোটি টাকার প্রোজেক্ট।’ তিনি উল্লেখ করেন, রামমোহনের বসতবাড়ি এলাকায় উন্নয়নের জন্য ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে।

নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘বন্যা বা খরার সময় কখনও তাদের এখানে আসতে দেখেছেন? এরা বসন্তের কোকিল। ভোট এলেই আসে তারপর আর দেখতে পাওয়া যায় না। এদের কোনও সংস্কৃতি নেই। এরা রবীন্দ্রনাথকে মানে না, নজরুলকে মানে না, গান্ধিজিকে তো এরা খুন করেছে। আম্বেদকরের সংবিধান এরা বদলে দেবে। এরা আমাদের দেশপ্রেম শেখাবে? ওরা বকধার্মিক, ধর্মের নাম করে রাজনীতি করে। গদাপার্টি গদা নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। মোদি নোট বাতিল করে ক্ষমতা দেখিয়েছেন, এনআরসি করে ক্ষমতা দেখিয়েছেন। এবার আপনারা ওকে বাতিল করে ক্ষমতা দেখান, একটা একটা করে অন্যায়ের উত্তর দিন। বাংলা মোদির জন্য মাটির রসগোল্লা বানিয়ে রেখেছে তাতে আবার কাঁকর। খেলেই দাঁত ভাঙবে। বাংলার কোথাও ওদের পায়ের ছাপ ফেলতে দেবেন না।’

খানাকুলের সভায় সচেতনভাবেই তিনি তৃণমূলের পুরনো কর্মীদের কথা উল্লেখ করলেন। শৈলেন সিংহের সঙ্গে উঠে এল শিপ্রা মুখার্জি, অসিত সিংহ রায়েরও নাম। পুরশুড়ার প্রাক্তন বিধায়ক পারভেজ রহমানের নামও উঠে এল তাঁর বক্তব্যের মধ্যে। প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার ছাড়াও আরামবাগের সভায় বিধায়ক ডা. এম নুরুজ্জামান, রচপাল সিং ও কৃষ্ণপদ সাঁতরা, পুরপিতা স্বপন নন্দী এবং খানাকুলের সভায় মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, অসীমা পাত্র, বিধায়ক প্রবীর ঘােষাল, ইকবাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।