স্বপনকুমার মণ্ডল
চোখের সামনে প্রতিনিয়ত অন্যায় অবিচার দেখে প্রতিবাদহীন সমাজের বুদ্ধিজীবীদের নীরবতা নিয়ে সীমাহীন অভিযোগ নানাভাবেই প্রকাশমুখর। তাতে জীবিতকালেই মৃতবৎ ভয়ঙ্কর ব্যঙ্গবিদ্রুপ কদর্য ভাষায় প্রকাশিত হয়, ঘৃণার লাভাস্রোত জনমানসে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে সুবিধাভোগী ও সুবিধাবাদী বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে প্রতিবাদী কণ্ঠের তীব্র ধিক্কার নানাভাবে মুখর। সেদিক থেকে সেকালের বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে একালের বুদ্ধিজীবীর তুলনার অবকাশে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের ভয়ঙ্কর নীরবতা খোলা আকাশের মতো নগ্ন মনে হয়। অথচ তার মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা নেই। সময়ের ক্ষরণেই বুদ্ধিজীবীদের অস্তিত্ব সংকট। তার পরিচয়ের জন্য কষ্টকল্পনার প্রয়োজন নেই। বুদ্ধিজীবীদের করুণ পরিণতিতেই তার পরিচয়।
Advertisement
আমরা প্রায়ই বলি, এক ভাষার বুলি অন্য ভাষার গালিও হয়। কিন্তু একটু লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, একই ভাষার বুলি সময়বিশেষে সেই ভাষারই গালিতে পরিণত হয়। একসময়ে ছিল, ‘যার নেই কোনো গতি, সে করে পণ্ডিতি’। তখন দাম না থাকলেও, পণ্ডিতমশাইয়ের মান ছিল। এখন দাম বেড়েছে, কিন্তু মান তলানিতে। তাই ‘পণ্ডিত’ শব্দে পাণ্ডিত্যের ধারক-বাহক ব্যক্তিকে না বুঝিয়ে ‘পণ্ড করার মাস্টার’ অর্থেও ব্যবহার করা হয়। তাই শিয়ালপণ্ডিতের গল্পের সেই শিয়ালটির পাণ্ডিত্য কেউ আর শোনে না। আবার ঊনবিংশ শতাব্দীর ‘বাবু’ সমাজের বনেদি আভিজাত্যও কালের পরিবর্তনে হারিয়ে গিয়েছে। এখন বাবুর গণতন্ত্রীকরণ যেমন হয়েছে, তেমনই সাহেবের মৌরসী পাট্টাও বেদখল হয়ে গেছে। এখন পরাণও বাবু, হাসিমও সাহেব। শুধু তাই নয়, ‘বাবু’ কিংবা ‘সাহেব’ বলতে শিক্ষিত সুধীজনকেই বোঝানো হয় না, বেশভূষার পারিপাট্যে ‘ফুটানি মার্কা’ অশিষ্ট জনকেও নির্দেশ করা হয়। তেমনই ‘বুদ্ধিজীবী’ শব্দটির অর্থ কালের নিকষে আর্থিক কৌলিন্য হয়ে গেছে। বাইরের বিদ্যাবুদ্ধির চাকচিক্যে ধোপদুরস্ত নির্ভেজাল শিষ্ট ভদ্রলোকের বুদ্ধিজীবী অভিধা অনেকদিন থেকেই সমাজের সাধারণ মানুষের চোখে অসাধারণ মনে হয় না। এখন বুদ্ধিজীবী মানেই সমাজের সুবিধাভোগী ধূর্ত মানুষ। তার ফলে এখন কেউ বুদ্ধিজীবী হওয়ার ভান পর্যন্ত করতে চায় না। আর যারা নেহাতই করতে চায়, তারা নিজেরাও উপহাস্য হয়ে ওঠে এবং সেই সঙ্গে বুদ্ধিজীবীসমাজকেও ব্যঙ্গের খোরাকে পরিণত করে। অথচ ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙালি সমাজের ধারক-বাহক ছিল বুদ্ধিজীবী সমাজ। অবশ্য ঊনবিংশ শতাব্দীতে ‘বুদ্ধিজীবী’ শব্দটির প্রচলন ছিল না বললেই চলে। তার পরিবর্তে বিদ্বান, পণ্ডিতজন, বিদ্বজন, সুধীজন প্রভৃতি শব্দের চল ছিল। শব্দটির ব্যবহার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে।
Advertisement
চানক্যর সুভাষিতে ‘বিদ্বান সর্বত্র পূজ্যতে বলে বিদ্বান সমাজের সুমহান ঐতিহ্যের সঙ্গিন অবস্থার কথা নানাভাবেই আমাদের কানে আসে। বিশেষ করে বাঙালি বুদ্ধিজীবীর করুণ পরিণতি মর্মবিদারী।
কুলকৌলিন্যের পরিবর্তে নবযুগের মধ্যবিত্ত মানুষের মধ্যে থেকে অর্থ ও বিদ্যাবুদ্ধির কৌলিন্যে প্রতিষ্ঠিত শক্তিশালী একটি উপশ্রেণী এই বুদ্ধিজীবীসমাজের অবনতি অনেকদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছিল বলে প্রখ্যাত চিন্তক ও লেখক বিনয় ঘোষের ধারণা। ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধ থেকে তা শুরু হয়েছিল এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময় পর্যন্ত যা ‘গুঞ্জনের গাম্ভীর্য’-এ তথা ‘কোলাহল’-এ পৌঁছেছিল, তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ‘সোরগোলে’ পরিণত হয়। ফলে সেই ‘সোরগোলে’ বুদ্ধিজীবী শব্দটির প্রচলন বেড়েই চলেছে। এখন হামেশাই বুদ্ধিজীবী নামধেয় ব্যক্তিরা নানাভাবে আত্মসংকটের মুখোমুখি। সমাজবিচ্ছিন্ন এই বুদ্ধিজীবীরা কীভাবে নিজেদের পায়ের তলার মাটি হারিয়ে অস্তিত্বসংকটে, সে বিষয়ে আমাদের নজর দেওয়ার সময় বয়ে গেলেও আলোচনার অবকাশ হারিয়ে যায়নি। সেজন্য কয়েকটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন। ‘মনুসংহিতা’য় বুদ্ধিজীবী অর্থে ‘বুদ্ধি দ্বারা নিজহিতাহিতজ্ঞানবান্’-কে বোঝানো হয়েছে। নিজের ভালোমন্দের জ্ঞানে বুদ্ধিজীবীরা যে পারঙ্গম তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু বুদ্ধিজীবী সম্পর্কে এরূপ ধারণা জনগণের মধ্যে প্রচলিত হলেও বাস্তবে কিন্তু তা আলাদা। বুদ্ধি বা মননের সাহায্যে জীবিকা সংস্থানকারী ব্যক্তি অর্থে বুদ্ধিজীবী শব্দটির ব্যবহার এখন স্বতঃসিদ্ধ। আমাদের সমাজে বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনই তাদের আত্মিক সংকটের নানা দিক উঠে এসেছে। ফলে বুদ্ধিজীবীসমাজের আত্মিক দৈন্য বেড়েই চলেছে।
বুদ্ধিজীবীদের সবচেয়ে শক্তিশালী আত্মপ্রকাশের মাধ্যম হল যুক্তিসিদ্ধ মননঋদ্ধ বাচনশৈলী। অথচ সেই বাচনশৈলী এখন বাক্সর্বস্ব কথকতায় পরিণত হয়েছে। ফলে ঋজু বক্তব্য খেই হারিয়ে ভোঁতা হয়ে গিয়েছে। একদিন শিয়ালদা থেকে ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’ যাওয়ার সময় বাসে উঠেই একজন মাঝবয়সী ভদ্রলোককে কন্ডাক্টরকে ধমকাতে দেখি। বাসে উঠেই তিনি কন্ডাক্টরকে বেশি স্টপেজ না দিয়ে দ্রুতবেগে গাড়ি চালানোর জন্য তাড়া দিয়েই যাচ্ছেন। সেই তাড়ার তাড়নায় অতিষ্ঠ হয়ে এক ভদ্রলোক বললেন, ‘আরে মশাই ও তো তাড়াতাড়িই করছে। আপনার যদি এতই দরকার থাকে, তাহলে একটু আগেই তো বেরোতে পারতেন।’ এবার তাড়ক ভদ্রলোক কন্ডাক্টরকে ছেড়ে তাঁর বিপক্ষীয়র সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলেন। ‘তাতে আপনার কী? আমি কথা বলছি, আপনার গায়ে লাগছে কেন?’ ‘লাগছে বলেই বলছি। সেই তখন থেকেই গজগজ করেই যাচ্ছেন।’ এতই যদি তাড়া তবে প্রাইভেট গাড়ি করেই আসতে পারতেন। বকবক করেই যাচ্ছেন। একটু থামুনতো মশাই।’ ‘আমি থামব না। আপনি কী করবেন?’ ‘কী করব মানে, কী বলতে চাইছেন আপনি? বেশি বেশি করলে নামিয়ে দেব।’ ‘আমিও আপনাকে ঘাড় ধরে নামিয়ে দেব।’ না, কেউ কাউকে নামিয়ে দিতে পারেননি। কেউ কাউকে নামাতে পারে না। এঁদের শক্তি মুখে, হাতে নেই। যখন সেটা সাধারণ মানুষ বুঝে ফেলে, তখনি তাঁদের বিপত্তি ঘটে। ফলে সেই তাড়ক বুদ্ধিজীবীকে নামার সময় এতক্ষণ ধরে বিড়াল হয়ে থাকা কন্ডাক্টরও বাঘ হয়ে সপাটে বলে, ‘একটু তাড়াতাড়ি নামেন তো।’ আর গাড়ির ভেতরের বুদ্ধিজীবীও কারও প্রত্যাশিত সমর্থন না পেয়ে চুপ করেন। কারণ এঁদের আত্মম্ভরি প্রতিবাদে জনতার আকর্ষণ নেই। থাকার কথাও না।
অসির চেয়ে মসির জোর বেশি, তা আমরা জানি। কিন্তু সময়বিশেষে অসিশক্তির প্রয়োজন হয়। তা না হলে আত্মসম্মান বাঁচানো যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় একদিন আমাদের এক অধ্যাপক দুঃখ করে বলেন, ‘বেঁচে থাকার জন্য কিছু ক্ষমতার প্রয়োজন।’ তার উদাহরণ হিসাবে তিনি জানালেন দিনদুয়েক আগের একটি ঘটনা। তিনি মিনিবাসে শিবমন্দির থেকে শিলিগুড়ি যাচ্ছিলেন। বাসটিতে ভিড় ছিল। অধ্যাপক মহাশয় অত্যন্ত সন্তর্পণে নিজেকে আগলে রড ধরে দাঁড়িয়েছিলেন। হঠাৎ করে একজন যাত্রী তাঁকে পিছন থেকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ এনে বাকবিতণ্ডা শুরু করে দেয়। যতই তিনি বিনয়ের সঙ্গে কথা বলেন, ততই সেই অভিযোগকারী তাঁকে দুর্বল ভেবে নিজের ঝাল মিটিয়ে নেন। পাছে অন্য যাত্রীরা জোরে কথা বললে অধ্যাপক-বিরুদ্ধ আচরণ বলে আরেকবার অপমান করে (বুদ্ধিজীবীদের দুর্বলতার এই সুবিধা নিতে অনেকেই সিদ্ধহস্ত), সেজন্য তিনি নীরবে সমস্ত গালমন্দ হজম করেছিলেন। তাই তাঁর মনে হয়েছিল, যদি তিনি প্রশাসনের কোনো কর্তাব্যক্তি হতেন, তাহলে সেদিন সেই অভিযোগকারীকে বুঝিয়ে দিতে পারতেন। বুদ্ধিজীবীদের এই অসহায়তা এখন নিত্যদিনের ব্যাপার। এই জন্য দায়ী কিন্তু বুদ্ধিজীবীসমাজই। তাঁরাই এই প্রতিবাদহীন সমাজের জন্ম দিয়েছেন। তাঁরাই প্রতিবাদের ভাষা সৃষ্টি করেছিলেন। আবার তাঁরাই প্রতিবাদহীনতার ভাষা গড়ে তুলেছেন। সমাজের সংকটে তাঁরা এগিয়ে আসেন না। অথচ তাঁরা ব্যক্তিগত সংকটে মুখর হয়ে ওঠেন। তখন কেউ মুখ ফিরিয়ে না তাকানোই স্বাভাবিক। সেদিন সেই অধ্যাপক মহাশয় প্রশাসনিক আধিকারিক না হয়েও বাসের অন্য যাত্রীদের পাশে পেলে অভিযোগকারীকে শিক্ষা দিতে পারতেন। আসলে জনগণ এখন বুদ্ধিজীবীকে চিনতে পারে না নয়, চিনতে চান না। আর চিনলেও মানতে চান না। মানলেও বেশি আমল দিতে অনিচ্ছুক। সেক্ষেত্রে একপ্রকার নিস্পৃহতা কাজ করে। জনগণ তাঁদের আপনার জন বলে মনে করেন না। একটু যেন কোথায় আলাদা। এই না মানার জন্যও বুদ্ধিজীবীরা দায়ী। নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করতে গিয়ে তারা একে অপরের প্রতি যে সমস্ত বাক্যবাণ ছুড়ে দেন, তাতে উদ্দীষ্ট বুদ্ধিজীবীদের আহত করার সঙ্গে সঙ্গে আমজনতাকেও সচেতন করে দেয়। ফলে জনতার মনে কারও সম্বন্ধেই ভালো ধারণা গড়ে ওঠে না।
বুদ্ধিজীবীদের গালি দেওয়া অত্যন্ত সহজ। কারণ গালিখাওয়া বুদ্ধিজীবী তো গালিদাতাকে ঋণশোধ করতে পারবেন না। গালি দিলে আবার পাল্টা গালি খাওয়ার ভয় আছে। ফলে একতরফা গালমন্দই শ্রেয় বলে মনে হয় তখন। সেদিন লাইব্রেরিতে শুনলাম, চায়ের দোকানে বসে থাকা এক নামকরা বুদ্ধিজীবীকে দুটি ছেলে এসে অপমান করে চলে যায়। বিষয়টি লক্ষ্য করে এক ব্যক্তি সেই বুদ্ধিজীবীর কাছে এসে তাঁর নীরবতার প্রসঙ্গে জানতে চাইলেন। সেই বুদ্ধিজীবীর নিরুত্তাপ উত্তর, তিনি ছেলে দুটোর কথা গায়ে মাখেননি। এই ঘটনার উল্লেখ করে দু’জন বুদ্ধিজীবীর মধ্যে আলোচনা চলছিল। তাতে এক বুদ্ধিজীবীকে আশ্বস্ত করে অপরজন জানালেন, ‘নিশ্চয় সেই বুদ্ধিজীবীর কোনো দুর্বলতা ছিল। তাই তিনি চুপ ছিলেন।’ কথাটায় যুক্তি থাকলেও যুক্তির ফাঁকও আছে। কারণ শুধুমাত্র বুদ্ধিজীবীরাই নন, যেকোনো মানুষই নিজেদের দুর্বলতা ঢাকার জন্যও মুখর হয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে নীরবতা প্রমাণ করে না যে, তাঁর দুর্বলতা ছিল। এমনও হতে পারে যে, নীরবতা পালন না করলে তিনি আরও বেশি অপদস্ত হতে পারতেন। আসলে বুদ্ধিজীবীদের নানারৈখিক সংকট এখন বুদ্ধিজীবীদেরও ধাঁধায় ফেলে দেয়।
আজকের আধুনিক ভোগবাদী সমাজজীবনে বুদ্ধিজীবীরা বড়ই নিঃসঙ্গ। এই নিঃসঙ্গতাবোধের যন্ত্রণা অত্যন্ত পীড়াদায়ক হয়ে উঠেছে। তার ফলে এই সমাজের কোলাহলময় জীবনেও বড় একা মনে হয় তাঁদের। এত মানুষের মাঝে থেকেও প্রায় প্রত্যেক বুদ্ধিজীবীই আজ নির্জন দ্বীপের বাসিন্দা। এই নির্জনতা অভিশাপ নয়, আশীর্বাদও। যেমন, এক সাক্ষাৎকারে সাহিত্যিক শক্তিপদ রাজগুরু জানিয়েছিলেন, নিঃসঙ্গতা কাটানোর জন্যই তাঁর লেখালেখি। কিন্তু সেটা তো ব্যতিক্রমী। তাতে নিজেকে আড়াল করা যায়, নিঃসঙ্গতার যন্ত্রণা কমানো যায় না। তাই শিল্প-সাহিত্যচর্চা করে বুদ্ধিজীবীরা নিজেদের বিষণ্ণতা কাটাতে পারেন না। মাঝে মাঝে তাঁদের বিবেকদংশন জেগে উঠলেও একাকী আবার বুদবুদের মতো মিলিয়ে যায়।
বুদ্ধিজীবীরা বড় অসহায়। তাঁদের না আছে লোকবল, না অর্থবল। ফলে তাঁদের মনোবল দুর্বল। কোথাও তাঁদের স্থান হয় না। রাজনীতি করলে ব্যক্তিত্ব হারিয়ে ফেলতে হয়। ‘স্যার’ হয়ে যায় ‘দাদা’। সমাজসেবা করতে গেলে সকলের সন্দেহের কারণ হয়ে উঠতে হয়। আবার প্রতিবাদ জানাতে গেলে সমূহ বিপদ। কাউকে বোঝাতে গেলেও ভয়। পাছে সে ভুল বোঝে। আবার সৎ সাহসের অভাবে রাজনীতি নিরপেক্ষ চরিত্র তুলে ধরতে গিয়ে পরোক্ষ নিজের অনুরাগী মানুষকে বিভ্রান্ত করে স্ববিরোধী ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠার প্রবল সম্ভাবনা। সর্বত্রই বুদ্ধিজীবীদের আত্মিক সংকট। শাসকদলের হলে তাঁরা ‘বায়বীয়’, আর বিরোধীদলের কাছে ‘বুদ্ধজীবী’। আবার তাঁরাই শাসকের পরিবর্তনে ‘পরিবর্তনপন্থী বুদ্ধিজীবী’ হয়ে পড়েন। তাঁদের শ্রেণিচরিত্র এখন সংকটের মুখে। শুধুমাত্র চন্দ্রবিন্দুতেই তাঁরা আজ আমজনতা থেকে স্বতন্ত্র। আর শাসকদলের বা শাসকের অত্যাচারের শিকার হলেই শুধু বুদ্ধিজীবীদের কথা মন থেকে মুখে আসে জনতার ।
Advertisement



