কংগ্রেসের অস্তিত্বের লড়াই

“পশ্চিমবঙ্গ, অসম, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি এবং কেরলে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। কিন্তু দল হিসেবে কংগ্রেস নির্বাচনে তাদের প্রস্তুত করতে পারেনি।

Written by SNS Kolkata | March 13, 2021 4:26 pm

কংগ্রেস (Photo: IANS)

“পশ্চিমবঙ্গ, অসম, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি এবং কেরলে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। কিন্তু দল হিসেবে কংগ্রেস নির্বাচনে তাদের প্রস্তুত করতে পারেনি। এক দশক আগেও এই সকল রাজ্যে হয় কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল বা বিরােধী দল হিসেবে তাদের প্রবল উপস্থিতি জাহির করত। আর বিজেপির অস্তিত্ব ছিল নামমাত্র।

কিন্তু বিজেপি এসকল রাজ্যে তার শক্তি যেভাবে বাড়িয়েছে তা উল্লেখযােগ্য। এখন আঞ্চলিক দলগুলিও বিজেপির সঙ্গে এঁটে উঠতে পারছে না। অন্যদিকে একদা প্রধান দল কংগ্রেস তার অনুগামীদের মধ্যে কোনও উৎসাহেরই সঞ্চার করতে পারছে না।

এখন ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেসের সকল স্তরের নেতারা এতটাই দ্বিধাগ্রস্ত যে তারা কি করবে না করবে তা স্থির করে উঠতে পারেছেন না। প্রার্থী মনােনয়ন দেওয়া নিয়ে যে প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতেও চরম বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

বিগত বিহার নির্বাচনে জোট সঙ্গীদের আব্দার মতাে মাত্র ৭৪ আসনে প্রার্থী দিতে সমর্থ হয়েছিল। সেখানে ফলাফলে চরম পরাজয়ের নজির দেখা গিয়েছে। এছাড়া মধ্যপ্রদেশে মাত্র পনেরাে মাস আগেও যেখানে কমলনাথের নেতৃত্বে কংগ্রেসের শাসন ছিল সেখানে শােচনীয়ভাবে দলের পরাজয় ঘটেছে। কর্ণাটকেও জোট সরকারের পরাজয় ঘটে।

এমনকী পুদুচেরিতে নির্বাচনের আগেই কংগ্রেসের সরকারের পতন হয়। তামিলনাড়ুতে ডিএমকে পঁচিশটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। পশ্চিমবঙ্গেও বিহারে নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে। রাজ্যে বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধে দল বিরানব্বইটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কারণ বিহারের আরজেডির মতাে পশ্চিমবঙ্গেও সেকুলার জোটের কাছে অন্যান্য আসনে সমঝােতা করতে হয়েছে। কংগ্রেসকে সেকুলার ফ্রন্ট-এআইএমআইএম দলের কাছ থেকেও অপমানের তেঁতাে পিল গিলতে হয়েছে।

কারণ এরা পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় ফ্রন্টের শরিক। এতে কংগ্রেস দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক চরম হতাশা গেড়ে বসেছে। কেরলে এক সমীক্ষায় ভবিষ্যত্বাণী করা হয়েছে বাম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ আবার ক্ষমতা দখল করবে। যদি এমন ঘটনা ঘটে তবে ১৯৮০ সালের পর একটি জোট পর পর দু’বার কেরলে ক্ষমতায় ফিরে আসার ঘটনা ঘটবে।

এছাড়া কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ জোট তাদের ঘর গােছাতে অসমর্থ এবং শহরাঞ্চলে তাদের শক্তিশালী ঘাঁটিগুলি এখন হাতছাড়া। বিজেপি সেসব জায়গায় তাদের শক্তি বৃদ্ধিতে সমর্থ হয়েছে। পুদুচেরিতে সেদিনও কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার চলছিল ।

কিন্তু অধিকাংশ বিধায়ক দলত্যাগ করায় সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। ফলে কংগ্রেসের ক্ষমতায় ফেরা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অসমে কংগ্রেসের শক্তির কাছে কোনও রাজনৈতিক দলই এঁটে উঠত না।

এখন আদর্শগত বা মতাদর্শগত বিরােধিতা সত্ত্বেও কংগ্রেস আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট বাঁধতে বাধ্য হয়েছে তাদের অস্তিত্ব রক্ষায়। ক্ষুদ্র আঞ্চলিক দলগুলিও মহাজোটে কংগ্রেসকে তেমন পাত্তা দিতে রাজি নয়।

ফলে কতগুলি আসনে কংগ্রেস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাও প্রদেশের দায়িত্বে থাকা নেতারা ঠিক করে উঠতে পারছেন না। অন্য ছােটো দলগুলির ইচ্ছা অনিচ্ছার ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে আসন সমঝােতার ক্ষেত্রে।