বরুণ দাস
মাতৃভাষা নিয়ে গড়পরতা বাঙালিদের মধ্যেই আজ আর কোনও গর্ব বা অহংকার নেই। বরং এদের অনেকেই মাতৃভাষা বাংলা নিয়ে নির্বিকার। বিশেষ করে আজকের নব্য শিক্ষিত ও সচেতন বাঙালিরা। তাঁরা বরং ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে বেশি উৎসাহী। নিজেদের সন্তানদেরকেও মাতৃভাষা থেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে আগ্রহী। তাঁদের কাছে, মাতৃভাষা চর্চা ও চর্যা মানে ‘পিছিয়ে পড়তে হয়।’ এমন একটা ধারণা তাঁরা গেঁথে দিয়েছেন তাঁদের প্রিয় সন্তানদের মনের গভীরে। তাই কাঙ্ক্ষিত গর্বের বদলে অস্বস্তি জাগে মনে।
প্রসঙ্গত, গত বছর বাংলাভাষা ধ্রুপদী স্বীকৃতি পেয়েছে। যদিও অনেক আগেই বাংলাভাষার এই শিরোপা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এদেশে তো আর কোনও কিছুর গুরুত্ব কিংবা স্বীকৃতি তার গুণমানের ওপর নির্ভর করে না৷ নির্ভর করে তার রাজনৈতিক অবস্থানের ওপর। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিই তার মূল্যায়ণ নির্ধারণ করে। তাই ওড়িয়া কিংবা দক্ষিণি রাজ্যের কোনও ভাষা বাংলাভাষার আগে ধ্রুপদী স্বীকৃতি পেলেও আমরা উদাসীন থাকি। ‘পাচ্ছে তাতে আমার কী!’ এমন একটা ভাবনা আমাদের মধ্যে কাজ করে।
তাই আমাদের মাতৃভাষা বাংলা ধ্রুপদী স্বীকৃতি পেলেও এনিয়ে আম বাঙালিদের মধ্যে কিন্তু তেমন একটা আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি। এই বাস্তবতাকে কোনওভাবেই অস্বীকার করা যায় কী! বিষয়টা অপ্রিয় হলেও স্বীকার করতে দ্বিধা নেই আমাদের। কারণ সত্যকে আড়াল করে লাভ কী! দূরদর্শী কবি রবীন্দ্রনাথের কথায় বলতে হয়, ‘মনরে আজ কহ যে/ভাল-মন্দ যাহাই আসুক সত্যেরে লও সহজে।’ যদিও সত্যেরে সহজে লওয়ার ব্যাপারটা মোটেও সহজ নয় একথা আমরা হাড়ে হাড়ে জানি। তাই সত্যকে দূরে রাখতেই আগ্রহী।
অনেকেই হয়তো কমবেশি জানেন, এবছর ধ্রুপদী স্বীকৃতি পাওয়া মাতৃভাষা বাংলায় লেখা কোনও গ্রন্থকে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ খবরেও আমরা তথা বাঙালিরা তেমন একটা ভাবিত নই। আমাদের মধ্যে নেই কোনও হা-পিত্যেশও। এনিয়ে আলাপ-আলোচনা কিংবা তর্ক-বিতর্কও নেই। এক্ষেত্রেও ‘না পাচ্ছে তো কী হয়েছে’ এমন একটা গা-ছাড়া ভাব! একটা নিস্পৃহভাব কাজ করছে আমাদের মধ্যে। এই উদাসীনতা, এই নিস্পৃহতা কেন তা নিয়ে অনেক কথাই হয়তো বলা যায়। কিন্তু থাক সেসব।
ফিরে আসা যাক চলতি বছরে মাতৃভাষা বাংলায় লেখা কোনও গ্রন্থের সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার-সম্মান না-প্রাপ্তির প্রসঙ্গে। এরাজ্য থেকে যাঁরা সাহিত্য অকাদেমির সঙ্গে যুক্ত আছেন, তাঁদের মধ্যে বর্ষীয়ান কথাসাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় অন্যতম। তাঁর সঙ্গে বৈদ্যুতিন মাধ্যমের এক সাংবাদিক টেলিফোনে যোগাযোগ করেছিলেন। কেন চলতি বছর মাতৃভাষা বাঙলায় লেখা কোনও গ্রন্থ সাহিত্য অকাদেমি পুরষ্কার পেল না-তা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টা সম্পূর্ণ এড়িয়ে গেছেন। তাঁর এই এড়িয়ে যাওয়া আমাদেরকে বিস্মিত করেছে।
কথাসাহিত্যিক বাণী বসুও এ রাজ্য থেকে সাহিত্য অকাদেমির সঙ্গে নির্বাচক হিসেবে যুক্ত আছেন। যতদূর জানা গেছে, বেঙ্গল চ্যাপ্টারের আহ্বায়ক হিসেবে যুক্ত আছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। অথচ বাংলা ভাষায় প্রকাশিত কোনও বই নির্বাচিত না হওয়ার পিছনে কারণ কী-তা নিয়ে কেউ মুখ খুলছেন না। সবাই মুখে কুলুপ এঁটে আছেন! ‘স্পিকটি নট’-এর কারণ ঘিরে রহস্য ও সন্দেহ দানা বেঁধেছে। কেউ কেউ তো বলছেন, ‘ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।’ সাহিত্য অকাদেমি-কর্তৃপক্ষও কোনও বিবৃতি দিয়ে ব্যাপারটা এযাবৎ খোলসা করেননি।
সর্বভারতীয় প্রতিষ্ঠান সাহিত্য অকাদেমির ব্যয়ভার চলে দেশের জনগণের প্রদেয় কর-এর টাকায়। সুতরাং তাঁর সন্মাননীয় সদস্যদের দায়ভার আছে জনগণের জিজ্ঞাসার উত্তর দেওয়ার। তাঁরা কোনওভাবেই নিজেদের দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না। সাহিত্য অকাদেমির সঙ্গে যুক্ত বর্ষীয়ান কথাসাহিত্যিকও পারেন না নিজের দায়ভার এড়িয়ে যেতে। আমরা তাঁর কাছ থেকে এটা কখনও আশা করতে পারি না। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, তিনি কী সাহিত্য অকাদেমির ভিতরের কিছু গোপন করতে চান? তাই সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দিতে চাননি?
যাঁরা মাতৃভাষা বাংলা নিয়ে হৈচৈ করেন, প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি এবং উনিশে মে উদযাপন করেন, লেখালেখি করেন- তাঁরাও সাহিত্য অকাদেমির বঞ্চনা নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলেননি। বছরে দু’বার মাতৃভাষা বাংলা নিয়ে নানা অনুষ্ঠান করেই কী তাঁদের দায়দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়! ধ্রুপদী আখ্যা পাওয়া ভাষার প্রতি সাহিত্য অকাদেমির এই নজিরবিহীন বঞ্চনা নিয়ে চুপ করে আছেন কেন? আমরা কী সম্মিলিতভাবে সাহিত্য অকাদেমির কাছে কৈফয়েৎ চাইতে পারি না? জিজ্ঞেস করতে পারি না-কেন তাঁদের এই একপেশে সিদ্ধান্ত তা জানান।
নিয়ম হল, প্রতি বছর প্রতিটি রাজ্য থেকেই সাহিত্য অকাদেমির আঞ্চলিক কমিটি ৩টি করে গ্রন্থ নির্বাচন করে সাহিত্য অকাদেমির দিল্লির সদর কার্যালয়ে পাঠায়। সাহিত্য অকাদেমির সর্বভারতীয় কমিটির ৩ সদস্য সেই প্রেরিত গ্রন্থ থেকে চূড়ান্ত নির্বাচন করেন। সূত্রে জানা গেছে, এবার এরাজ্য থেকে নিয়ম ভেঙে মাত্র ২টো গ্রন্থ পাঠানো হয়েছিল। একই ব্যক্তির। কিন্তু সাহিত্য অকাদেমির প্রচলিত নিয়ম ভেঙে ৩ সদস্যের দুই সদস্য ওই গ্রন্থ থেকে একথানিকে নির্বাচন করলেও তৃতীয় ব্যক্তি বা সদস্য তাতে অনুমোদন দেননি।
যদিও তাঁকে নাকি বারংবার অনুরোধ (পড়ুন চাপ) জানানো হয় দু’টোর মধ্যে একটিকে অনুমোদন দেওয়ার জন্য; কিন্তু তাঁর স্পষ্ট কথা ছিল, ‘এ আমি পারব না। সাহিত্য অকাদেমির মান বা সম্মান নষ্ট হয় এমন কাজে আমার সায় নেই। বরং প্রয়োজনে আমি পদত্যাগে রাজি আছি; আপোসে রাজি নই।’ আসলে ওই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাঁর পদত্যাগের পর নতুন কোনও সদস্য নিয়োগ করে ‘পরিকল্পিত কাজ’ বাস্তবায়িত করার মতো পর্যাপ্ত সময় ছিল না। ফলে বাংলাসাহিত্য বঞ্চিত হয় সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার বা সম্মান থেকে।
দিল্লির সাহিত্য অকাদেমির সঙ্গে কর্মসূত্রে যুক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, যার দুটো গ্রন্থ সাহিত্য অকাদেমির বাংলা কমিটি নির্বাচন করে পাঠিয়েছিল-তিনি রাজ্যেরই এক অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি। ইচ্ছে করেই নাকি দুটো গ্রন্থ পাঠানো হয় যাতে দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তির গ্রন্থ ওই সর্বভারতীয় পুরস্কার না পায়। রাজনীতিকদের এমন অনৈতিক উচ্চাশা সাহিত্য অকাদেমির সাবেকি গৌরব তথা মান-সম্মান ধূলোয় মিশিয়ে দিয়েছে একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু কেউ মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছেন না।
কেন বলতে পারছেন না? কিসের ভয়? কেনই বা এতো গোপনীয়তা? কোথায় এবং কিভাবে জট পাকিয়ে আছে (নাকি পাকিয়ে রাখা হয়েছে?) যা খোলার সাহস দেখাতে পারছেন না কেউ! আনুষ্ঠানিকভাবে বাক স্বাধীনতা তো এখনও কেড়ে নেওয়া হয়নি। তাহলে? আসলে জলে থেকে কুমিরের সঙ্গে লড়াই দেওয়াটা কঠিন কিনা। ক’জন তেমন সাহসী ভূমিকায় নিজেকে বসাতে পারেন? ক্ষমতা ও অর্থের কাছে মেরুদন্ড বেঁকে যাওয়া মেইনস্ট্রিম মিডিয়াও চেপে ধরতে পারছে না সাহিত্য অকাদেমির আঞ্চলিক (রাজ্য) সদস্যদের।
আসলে মুনাফামুখি সংবাদ প্রতিষ্ঠানের অসাধু মালিক কখন কিভাবে কোন অবৈধ সুযোগ নিয়ে মাথা বিকিয়ে আছেন ক্ষমতাসীন শাসক তথা রাজনীতির কাছে-তা বাইরে থেকে উপলব্ধি করা কঠিন! এক জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলেছি আমরা। যেখানে সত্যের স্থান ক্রমশই সঙ্কুচিত হচ্ছে। মিথ্যেটাই প্রধান হয়ে উঠছে। জানি না, এই অন্ধকারময় পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের পথ কোথায়? কোথায় পা রাখলে সামান্য আলোর সন্ধান পাওয়া যাবে! মানুষ তো আসলে অন্ধকারের নয়, তারা আলোর পথযাত্রী।
অনেকের অভিযোগ, সাংবাদিকেরা চোখে চোখ রেখে ক্ষমতাকে প্রশ্ন করাটাই ভুলতে বসেছেন। ফলে মিডিয়া ও তার কর্মীদের ওপর মানুষের ক্রোধ ক্রমশঃ বাড়ছে। তাদেরকে কড়া সমালোচনা তো বটেই, কেউ কেউ ইচ্ছেমত গালাগালও দিচ্ছেন। তাঁদের ভাবখানা এই, মিডিয়াই যত নষ্টের মূলে। সত্যেরে তাঁরা ভুলেই গেছে। মিডিয়া জুড়ে চারদিকে শুধু মিথ্যের বেসাতি। নিজেদের খুশিমতো খবর বানানো হচ্ছে। শাসকের মর্জির বাইরে তাঁরা পা ফেলতে অপারগ। ফলে কৃত্রিম (নাকি ভুয়ো?) খবরে ভরে যাচ্ছে অধিকাংশ সংবাদমাধ্যম।
আজকের বড়ো বড়ো মিডিয়া হাউসগুলি (যাকে আজকের ভাষায় ‘গদি মিডিয়া’ বলা হয়) আসলে নিউজ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি বা এন্টারপ্রাইস হয়ে উঠছে। মালিকের ইচ্ছেমতো সেখানে খবর তৈরি হয়। যে খবরের সংগে বাস্তবের কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যায়না। অনেকেরই অভিযোগ, ‘ক্যাশ অর কাইন্ডস’-এর কাছে মিডিয়া আত্মসমর্পণ করেছে। এমন ভয়ানক পরিস্থিতিতে মানুষ সত্যি খবর পাবেন কিভাবে? হাতে গোনা দু-একটি মিডিয়া হাউস আছে যারা সমস্ত রকম ঝুঁকি নিয়েও সত্য সংবাদ পরিবেশন করে থাকে।
এবার একটু অন্যদিক থেকেও বিষয়টা ভেবে দেখা যেতে পারে। অধিকাংশ সাংবাদিকই কিন্তু এক-একজন সাধারণ কর্মচারি- মিডিয়া-মালিকের আরোপিত গন্ডির বাইরে পা ফেলতে তিনি বা তাঁরা যে একান্তই অপারগ- তা আমরা বেমালুম ভুলে যাচ্ছি। আমরা তো আসলে নিজেদের দোষ-ভুল-ত্রুটি আড়াল করে অন্যদের দোষ-ভুল-ত্রুটি খুঁজে বের করতেই বেশি ব্যস্ত! তাই কোনও কিছু খতিয়ে দেখার চেষ্টাই করি না। এমন কি, কোনও কিছুর গভীরে যাওয়ার শ্রমসাধ্য অভ্যেসটাই হারিয়ে ফেলেছি আমরা। এ এক জটিল সময় বটে।
এমনও দেখা গেছে, এরই মধ্যে দু’একজন ‘বেয়াড়া’ সাংবাদিক প্রশ্ন করলেও তাঁকে ‘অন ক্যামেরা’ চিহ্নিত করে দেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। (উল্লেখ্য, খোদ ‘নবান্ন’তেই গণশক্তির এক সাংবাদিককে প্রশ্ন করার ‘অপরাধে’ তাঁর মিডিয়ার পরিচয় জেনে নেওয়া হয়।) এটা সম্পূর্ণ অনৈতিক কাজ। ফলে কর্মক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। কোথাও বা সংবাদ প্রতিষ্ঠানের মালিক ওই সাহসী সাংবাদিকদকে হয়তো পরদিন কাজে আসতে বারণ করে দেবেন! এবার বউ-বাচ্চা নিয়ে নিয়ে তিনি করবেনটা কী!
বলাবাহুল্য, সমাজে চিকিৎসক, শিক্ষক ও সেবিকাদের (নার্স) মতো সাংবাদিকদের পেশাও আর পাঁচটা পেশার মতো নয়, অনেকটাই আলাদা- একথা শতকরা একশোভাগ ঠিক; এঁদের দায়-দায়িত্ব অন্যান্য পেশার কর্মীদের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু আজকের নোংরা রাজনীতি-নির্ভর সময়ে সত্যের জন্য কী চরম মূল্য দিতে হয় তার সেরা নমুমা দক্ষিণের গৌরী লঙ্কেশ (গৌরী লঙ্কেশ পত্রিকা), কাশ্মীরের সুজাত বুখারী (রাইজিং কাশ্মীর) সহ আরও অনেক সাহসী সাংবাদিক। এনডিটিভি থেকে কাজ হারাতে হয়েছে রাবিশ কুমারের মতো সাহসী সাংবাদিককেও।
তবুও বলব, এবার বাংলা সাহিত্যকে পুরস্কার-সম্মান থেকে বঞ্চিত করার পিছনে সাহিত্য অকাদেমির হাত গুটিয়ে নেওয়ার আসল কারণটা প্রকাশ্যে না-আনার জন্য বাংলা মিডিয়ার দায়সারা ভূমিকা মোটেই কাঙ্ক্ষিত নয়। যেমন কাঙ্ক্ষিত নয় সাহিত্য অকাদেমির বেঙ্গল চ্যাপ্টারের সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন (৩ নির্বাচক এবং আহ্বায়ক) তাঁদের ভূমিকাও। অবক্ষয়িত দলীয় রাজনীতি আমাদের বাঙালি-সত্তাকেও গ্রাস করেছে দেখে বড়ো আশঙ্কা জাগে-এ আমরা কোথায় চলেছি? কিছু ‘প্রাপ্তি’র আশায় নিজেদেরকে ‘আত্মঘাতী’-র দলে ফেলে দিচ্ছি?