• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

জগন্নাথের প্রসাদ নিচ্ছেন মুসলিমরাও, সম্প্রীতির নজির

রথযাত্রা উৎসব শুক্রবার। তার আগে রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ বিতরণ চলছে প্রবল তৎপরতায়।

পূর্ব বর্ধমান জেলাজুড়ে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ দেওয়া চলছে পুরোদমে। রেশন দোকানে সব শ্রেণি ও ধর্মের গ্রাহকদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে, যা সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ মুছে দিয়েছে। জামালপুর, খণ্ডঘোষ, কাটোয়া, কালনা, গুসকরা, মেমারি সব এলাকাতেই কোনও বাছবিচার নেই প্রসাদ নেবার ক্ষেত্রে। এ কথা জানালেন জনপ্রতিনিধিরা। বুধবার একই সঙ্গে এই সম্প্রীতির কথা জানিয়েছেন রেশন ডিলার সংগঠনের কর্তারাও।

রথযাত্রা উৎসব শুক্রবার। তার আগে রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ বিতরণ চলছে প্রবল তৎপরতায়। জেলা শহর বর্ধমানে এক-একটি এলাকায় এক-একদিন করে প্রসাদ দেওয়া হচ্ছে। সব শ্রেণীর গ্রাহকরাই ভিড় জমাচ্ছেন প্রসাদ নিতে। তবে হাতের কাছে জগন্নাথ দেবের প্রসাদ পেতে গ্রামগুলিতে আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। উল্লেখযোগ্য, হিন্দু-মুসলিম সহ সব ধর্মের মানুষই আসছেন প্রসাদ নিতে। ওয়েস্ট বেঙ্গল এম আর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য কার্যকরী সভাপতি পরেশনাথ হাজরা জানান, সব জায়গায় মুসলিম গ্রাহকদের প্রায় ষোলো আনা উপস্থিতি থাকছে।

Advertisement

তিনি জানান, হিন্দুদের প্রসাদ হলেও আগ্রহ ভরেই মুসলিমরা প্যাকেট বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় একই কথা জানিয়েছেন, জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ভূতনাথ মালিক ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মেহেমুদ খান। তাঁরা জানান, আমাদের এখানে সব ধর্মের মানুষজন মিলেমিশে সমস্ত উৎসবে সামিল হন। তাই প্রসাদ নিতে মুসলিমদের কোনও অনীহা নেই। প্রতিটি পরিবারের লোকজন এসে প্যাকেট নিয়ে যাচ্ছেন। খণ্ডঘোষের জনপ্রতিনিধি অপার্থিব ইসলাম বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। মুখ্যমন্ত্রীর এই কথার মিল পাওয়া যাবে এখানকার গ্রামে। শুরু থেকেই মুসলিম গ্রাহকরা জানতে চাইছিলেন কবে থেকে প্রসাদ দেওয়া হবে। প্রসাদ পেয়ে তাই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন দারুণ খুশি।

Advertisement

সব জায়গাতেই প্রসাদের প্যাকেট দেওয়া হচ্ছে দুয়ারে রেশনের পদ্ধতি মেনে। এদিন গুসকরা টাউনে রেশন ডিলাররা প্রসাদ নিয়ে এলে কয়েক জন মুসলিম গ্রাহক ভক্তিভরে প্যাকেট নিয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনের দাবি জগন্নাথ ধামের ছবি যেমন ঘরে রাখা হবে, একই সঙ্গে পরিবারের সকলে প্রসাদের মিষ্টি ভাগ করেই খাব। এখানে এভাবেই সকলের সদ্ভাব বজায় রয়েছে। গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, এখানকার মুসলিমরা কালী-দুর্গার পুজোয় শামিল হন, তাই প্রসাদ তাঁরা নিয়েছেন ভক্তিভরে। শহর বর্ধমান ও রায়ান গ্রামের বাসিন্দা দুই পরিচিত সমাজসেবী মহম্মদ আসরাফউদ্দিন এবং বিশ্বেশ্বর চৌধুরী বলেছেন, মুসলিমরা লাইনে দাঁড়িয়ে প্রসাদ গ্রহণ করছেন এটাই পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য। এর মধ্যে রাজনীতি খুঁজলে ভুল হবে।

Advertisement