অনলাইনে জুয়া খেলে লক্ষাধিক টাকা হারিয়েছিলেন বুদ্ধদেব সরকার। কিছুদিন যাবৎ মানসিক অবসাদেও ভুগছিলেন। স্ত্রীর সঙ্গে এই নিয়ে প্রায়ই বিবাদ হত। স্বামীর জুয়া খেলা এবং টাকা হারানো মেনে নিতে পারতেন না স্ত্রী জলি সরকার। মাঝে মধ্যেই তিনি প্রতিবাদ করতেন। কিন্তু এর খেসারত যে এভাবে দিতে হবে তা আন্দাজ করতে পারেননি তিনি। জুয়া খেলা নিয়ে অশান্তির জেরে বাঁট দিয়ে স্ত্রীর মাথা থেকে দেহ আলাদা করে দিয়েছেন স্বামী বুদ্ধদেব সরকার।
সুত্রের খবর, দশম শ্রেণির ছাত্রী জলি সরকারকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ভরা সংসার। তাঁরা শান্তিপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুটোপুটি তলারবা সিন্দা। স্বামী বুদ্ধদেব সরকার মোবাইলে জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। এর ফলে লক্ষ লক্ষ টাকা হারিয়ে তিনি দেনার দায়ে ডুবে যান এবং মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন। প্রায়ই স্ত্রী শ্রাবণী সরকারের সঙ্গে অশান্তি হত তাঁর। এর জেরেই মঙ্গলবার রাতে ধারালো বঁটি দিয়ে নৃশংসভাবে স্ত্রীকে খুন করেছেন তিনি। এরপর নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।
মেয়ের বয়ান অনুযায়ী, রাতে টিউশন থেকে বাড়ি ফিরে সে দেখে ঘরের দরজা বন্ধ এবং ভিতর থেকে গান চলছে। এরপর দরজা খুলতেই সে লক্ষ্য করে মেঝেতে রক্তাক্ত বঁটি পড়ে আর খাটের তলায় মায়ের মাথা ও দেহ আলাদা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ভয়ে চিৎকার করে সে আশেপাশের লোকেদের ডেকে পাঠায়।
এরপরই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। শান্তিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহটি উদ্ধার করে। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘরের সিলিং এবং দেওয়ালে রক্তের দাগ দেখা গিয়েছে। অন্যদিকে, স্বামী বুদ্ধদেব সরকার এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ। অভিযুক্ত এবং পরিবারের বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মেয়ে এবং পরিবারের সদস্যরা এই ঘটনায় বুদ্ধদেব সরকারের ফাঁসির দাবি করেছে। বুধবার রানাঘাট মহকুমার আদালতে অভিযুক্তকে পেশ করা হয়।