• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

বেআইনি জলের লাইন কাটতে তৎপরতা জেলা প্রশাসনের

কেউবা গরুর গোয়ালে জলের লাইন করেছেন, বাগানের গাছে জল দেবার কাজে এই জল ব্যবহার করছেন। তিনি সকলকেই আগে সচেতন করেন পিএইচই এর জল অপচয় বন্ধ করে পানীয় হিসাবে ব্যবহার করার জন্য। অন্য কাজে নষ্ট করার জন্য নিষেধ করেছেন।

নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ মেনে বেআইনি ভাবে জলের লাইন চালানোর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার থেকে জোরদার তৎপরতা শুরু হলো পূর্ব বর্ধমানে। সূত্রের খবর এই জেলাতে জল চুরি নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। আর সে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা শুরু হলো। জামালপুর সহ বিভিন্ন ব্লকে এরই মধ্যে অভিযানে নামলেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এই অভিযান চলবে পিএইচই ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েষা রানী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সোমবারই ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠিয়েছেন।

পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে অবাধেই জল চুরি ও অপচয় চলছে। এই অভিযোগ পেয়ে সব রকমের ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। খোদ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলাতে ১২৯২টি অভিযোগ রয়েছে। যার জন্য তিনি জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের আধিকারিকদের কঠোর হতে নির্দেশ দেন। অনান্য জেলার সঙ্গে বর্ধমানের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার কে এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেন। এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে জেলায় এ পর্যন্ত ২৬ টি অঞ্চলে জল চুরি বন্ধে জিডি করা হয়েছে। পুলিশ সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখবে। সবকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার থেকে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ শুরু করলেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা । জেলার জামালপুর, বর্ধমান-১, ভাতার, কালনা-১, আউশগ্রাম, পূর্বস্থলী, গলসী, কাটোয়া, কালনা, খন্ডঘোষ সব ব্লকেই অভিযোগ রয়েছে। এমনকি বাড়ি গুলোতে জল চুরি ও অপচয় নিয়ে অভিযোগ অনেক। জেলাশাসক বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের আগে পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলায় জল চুরি নিয়ে একাধিক অভিযোগ এর আগে কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হয় নি বলে জানা গেছে। এ নিয়ে গ্রামীন এলাকায় এক শ্রেনীর মানুষের ক্ষোভ তুঙ্গে। কোথাও পাইপ ফাটিয়ে জল বের করে নেওয়া তো কোথাও আবার পানীয় জল চাষের কাজে লাগানো, বাগানে জল দেওয়া সবই চলছে। বড়ো বড়ো বাড়ি গুলোতে, গ্যারেজে বিনামূল্যে সরবরাহ করা পানীয় জল চুরির অভিযোগ আছে পূর্ব বর্ধমানে। এগুলোর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের বর্ধমান ডিভিশনের এক আধিকারিক গোপেন পাল বলেন, যে সব অঞ্চলে বেশি অভিযোগ সেই সব এলাকায় বেশি সংখ্যক দল গঠন করে একটানা অভিযান চলবে।

Advertisement

জানা গেছে, প্রয়োজনে অবৈধভাবে জল চুরি হলে ফৌজদারি মামলা করা হবে। এদিকে মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরর বিডিও নিজে অভিযানে নামেন। পিএইচই থেকে খবর পেয়েছিলেন বিডিও যে তাঁর ব্লকে প্রায় ৫০৪টি মত বেআইনি জলের লাইন রয়েছে। সেই খবরের ভিত্তিতে জামালপুরের বিডিও পার্থ সারথী দে পাড়াতল-১ পঞ্চায়েতের হিরণ্যগ্রামে তিনি নিজে জামালপুর থানার পুলিশ কে নিয়ে সরজমিনে দেখতে যান। সঙ্গে ছিলেন ওসি কৃপাসিন্ধু ঘোষ। প্রায় ৩০টি বাড়ি তিনি ঘুরে দেখেন। পরে বিডিও বলেন, অনেক বাড়িতে পিএইচই র জল মোটরের সাহায্যে ট্যাংকে জমা করছেন। কেউবা গরুর গোয়ালে জলের লাইন করেছেন, বাগানের গাছে জল দেবার কাজে এই জল ব্যবহার করছেন। তিনি সকলকেই আগে সচেতন করেন পিএইচই এর জল অপচয় বন্ধ করে পানীয় হিসাবে ব্যবহার করার জন্য। অন্য কাজে নষ্ট করার জন্য নিষেধ করেছেন। তিনি সকলকে বলে আসেন আজকের মধ্যে এই অবৈধ লাইন নিজেরা কেটে না দিলে কালই তিনি কেটে দেবেন। এছাড়াও তিনি জানান পুরো ব্লক জুড়ে এই ধরনের কাজের বিরুদ্ধে একটানা অভিযান চালাবেন।

Advertisement