সাতসকালে টিটাগড়ের বহুতলে বিস্ফোরণ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিস্ফোরণের অভিঘাতে আবাসনের উপরের তলার ছাদের একাংশ উড়ে যায়। ভেঙে যায় পাশের একটি টালির ঘরের চাল। বিস্ফোরণের তীব্রতায় কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। শুধু তাই নয়, বিস্ফোরণে বহুতলের দেওয়ালেও ফাটল ধরেছে। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে বহুতলের চারপাশ ঘিরে ফেলে পুলিশ। নিরাপত্তার স্বার্থে ওই বহুতলটি খালি করে দেওয়া হয়েছে। কী থেকে এত বড় বিস্ফোরণ ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
টিটাগড়ে পুরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের বাঁশবাগান এলাকা অত্যন্ত ঘণবসতিপূর্ণ। এই বহুতলের নিচের অংশ ভাড়া নিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর আরমান মণ্ডল। তবে যেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেই চারতলার ঘরটি অনিল গুপ্তা নামে একজনের নামে ভাড়া দেওয়া। সোমবার সকালে বিস্ফোরণের সময়ে ঘরটি ফাঁকা ছিল। স্থানীয়রা জানান, অনেক সময়ই ওই ফ্ল্যাটের দরজা খোলা থাকত। বাচ্চারা খেলত। সেই ফ্ল্যাটে কেউ বোমা রেখে গেল কিনা টিটাগড় থানার পুলিশ তার তদন্ত শুরু করেছে।
কাউন্সিলর আরমান মণ্ডল বলেন, ‘কীভাবে ওই ফ্ল্যাটে বিস্ফোরণ ঘটল, তা জানা নেই। ওই ফ্ল্যাট ফাঁকাই পড়ে থাকত।’ সেখানে কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটল তা নিয়ে অন্ধকারে তিনিও। এদিকে আবাসনের প্রোমোটারের দাবি, ফ্ল্যাটটি জবরদখল করে রেখেছিলেন কাউন্সিলর। যদিও এই অভিযোগ মানেননি আরমান। তাঁর দাবি, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ফ্ল্যাটের ভিতর কোনও দাহ্যবস্তু বা বিস্ফোরক মজুত করা থাকতে পারে। সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘরে ক্যারাম বোর্ড ছিল। অর্থাৎ মনে করা হচ্ছে, এখানে ক্যারাম খেলা, আড্ডা এসবই চলত। জনবহুল এলাকায় এমন বিস্ফোরণের ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। টিটাগড় থানার পুলিশের তরফে অবশ্য নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বাস মিলেছে। কাউন্সিলরের ফ্ল্যাটে বিস্ফোরণ ঘিরে রাজনৈতিক টানাপড়েন শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপি নেতা অর্জুন সিং অভিযোগ করেন, ফ্ল্যাটে নিশ্চয়ই বোমা রাখা ছিল। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করলে পুরো বিষয়টি উঠে আসবে।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি(সাউথ) অনুপম সিং বলেন, ‘কী ধরনের বোমা মজুত করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছি আমরা। এই নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং বম্ব স্কোয়াডকে খবর দেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে।’