অষ্টম বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে (বিজিবিএস) মোট ৪ লক্ষ ৪০ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এই দাবি করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এত বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব বিজিবিএস-এর আগের কোনও সংস্করণে আসেনি। সপ্তম বিজিবিএস-এ ৩.৭৬ লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছিল। এ বছর সেই টাকার অঙ্ক অনেকাংশে বৃদ্ধি পেল। গত সাতটি বাণিজ্য সম্মেলন মিলিয়ে মোট ১৯.৫ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছিল। তারমধ্যে ১৩ লক্ষ কোটি টাকার কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। আরও ৬ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। এই আবহে এ বছরের বাণিজ্য সম্মেলনে মোট ৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব এল।
এছাড়া আরও বিনিয়োগ আসছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি অষ্টম বাণিজ্য সম্মেলনে ২১২টি মউ স্বাক্ষর করা হয়েছে। এদিন মমতা আরও জানান, রাজ্যের ১ কোটি ৭২ লক্ষ মানুষ দরিদ্র সীমার উপরে এসেছে।
মমতার দাবি, বুধবার বাণিজ্য সম্মেলনের প্রথম দিন শিল্পপতিরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেগুলি আপাতত না ধরেই হিসাব করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ কোটি টাকার লগ্নি প্রস্তাব এসেছে। তাঁর কথায়, ”মুকেশ আম্বানি নিজেই বলেছেন, ১ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ করবেন। মুকেশজি ও সজ্জন জিন্দলের সঙ্গে পৃথকভাবে আমার কথা হয়েছে। সজ্জন জিন্দল আরও একটি বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের কথা জানিয়েছেন। অন্ডাল বিমানবন্দরের ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্টেও তাঁদের আগ্রহ রয়েছে।”
এদিন মমতা জানান, বিজিবিএস ২০২৫ দারুণ সফল হয়েছে। এখানে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা হয়েছে। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের মানুষজন। এখানে এক্সিবিশন সেন্টার, কনভেনশন সেন্টার, ক্ষুদ্র থেকে বড় শিল্প, পর্যটন থেকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা থেকে কৃষি সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
মমতা আরও জানান, বাংলায় প্রচুর নতুন প্রজেক্ট হবে। অশোকনগরে ওএনজিসিকে ৫০ একর জমি দেওয়া হয়েছে। সেখানে দ্রুত বাণিজ্যিকভাবে তেল উৎপাদন হবে। এছাড়াও তাঁর দাবি, বাংলার ১ কোটি ৭২ লক্ষ মানুষ দারিদ্র্যসীমার বাইরে এসেছেন। এ বছর দেশ বিদেশের মোট ৫ হাজার জন বিনিয়োগকারী ও প্রতিনিধি বাণিজ্য সম্মেলনে যোগদান করেছেন। ২১২টি মউ ও আগ্রহপত্র স্বাক্ষর করা হয়েছে। রিলায়েন্স, ইমামি গ্রুপ, জিন্দল গ্রুপের মতো বড় বড় সংস্থা বাংলায় বড় অঙ্কের বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। বৃহস্পতিবার বাণিজ্য সম্মেলনের দ্বিতীয় তথা শেষ দিনে ব্যবসায়িক সংগঠনের মধ্যে এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও সরকারের প্রতিনিধিদের মধ্যে কয়েকটি পার্শ্ব বৈঠক হয়েছে। এরপর মউ স্বাক্ষর হয়।