সংযুক্তিকরণের পর জোর ধাক্কা, কমল ব্যাঙ্কের শেয়ারের দামও

সপ্তাহে প্রথমার্ধে শেয়ার বাজারে ধস নামল লক্ষণীয় মাত্রায়। পতনের প্রভাব পড়েছে ব্যাঙ্কের শেয়ারে।

Written by SNS New Delhi | September 4, 2019 4:11 pm

বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (File Photo: IANS)

কয়েক দিন আগেই ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের পথে হেঁটেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ আশ্বাস দিয়েছিলেন দেশের অর্থনীতিতে কোনও প্রভাব পড়বে না। সীতারমনের ভবিতব্যকে মিথ্যা প্রমাণিত করে দেশের অর্থনীতিতে কালাে ছায়া নেমে এল। সপ্তাহে প্রথমার্ধে শেয়ার বাজারে ধস নামল লক্ষণীয় মাত্রায়। পতনের প্রভাব পড়েছে ব্যাঙ্কের শেয়ারে।

বিগত ৬ বছরে উল্লেখযােগ্য মাত্রায় কমেছে দেশের জাতীয় গড় আয়। ৫ শতাংশের নীচে এসে দাঁড়িয়েছে জিডিপি। এবার অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়ল দেশের শেয়ার বাজারে। মঙ্গলবার ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটি নেমে আসে ৫০ পয়েন্টে। সেনসেক্স ৮০০ পয়েন্টের বেশি এবং এনএসই নিফটি নেমে দাঁড়িয়েছে ১০,৮০০ নীচে। বিকেল ৩.১৮ পর্যন্ত সেনসেক্স ৭২৭ পয়েন্ট অর্থাৎ ১.৯৯ শতাংশে নেমে হয় ৩৬,৬০৫, নিফটি ১৯ শতাংশ বা ২০৬ পয়েন্ট কমে ১০,৮১৭-এ দাঁড়ায়।

শুক্রবার শেয়ার বাজার বন্ধ হওয়ার পর দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নিমালা সীতারমন। তিনি ঘােষণা করেছিলেন, দশটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে মিশিয়ে দিয়ে চারটি ব্যাঙ্কে পরিণত করা হবে। শুক্রবারের পর থেকে তিন দিন শেয়ার বাজার বন্ধ ছিল। সােমবার তা খুলতেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির শেয়ার মূল্য পড়তে শুরু করে দিল। কর্পোরেশন ব্যাঙ্কের শেয়ার মূল্য প্রায় ৯.৩ শতাংশ পড়েছে। শেয়ার পিছু দাম হয়েছে ১৭.১০ টাকা। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের শেয়ার ৮.৫৪ শতাংশ পড়ে ৫৯.৪০ টাকা হয়েছে। একই সঙ্গে পড়েছে কানাড়া ব্যাঙ্কের শেয়ারের দামও। ৭.৫৪ শতাংশ কমে তা হয়েছে ২০৩.৯০ টাকা। গত এক বছরের মধ্যেই এটাই কানাড়া ব্যাঙ্কের সর্বনিম্ন শেয়ার মূল্য।

একই রকম গতি প্রকৃতি দেখা যায় ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার শেয়ারের দামের ক্ষেত্রেও। গত ৫২ সপ্তাহের মধ্যে এদিন ইউবিআইয়ের শেয়ারের দামও ছিল সর্বনিম্ন ৫৪.৯০ টাকা। এছাড়াও এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের শেয়ারও পতনের ধাক্কা লেগেছে। অন্ধ্র ব্যাঙ্ক এবং সিন্ডিকেট ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম ছিল উর্ধ্বমুখী।

ব্যাঙ্ক মার্জারের সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘ছােট রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা কম। তাদের ব্যবসার আয়তন কম বলে ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতাও কম। সেই কারণেই তাদের মিশিয়ে দেওয়া হল।

কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব রাজীব কুমারের বক্তব্য ছিল, নতুন ব্যবস্থায় পূর্বতন ২৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক কমে ১২ টি ব্যাঙ্ক হবে। এর মধ্যে কয়েকটি ব্যাঙ্ক তৈরি হবে। বড় ব্যাঙ্ক বিশ্ব বাজারে কারবার করবে, মাঝারি ব্যাঙ্ক দেশীয় বাজারে এবং ছােট রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক স্থানীয় বাজারে কাজ করবে।

আজকের শেয়ার বাজারে গতি প্রকৃতি দেখে অর্থমন্ত্রকের কর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার ও রবিবার বাজার বন্ধ থাকে। সােমবার গণেশ চতুর্থীর জন্য শেয়ার বাজার বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার ব্যাঙ্ক মার্জার নিয়ে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। এটা স্থায়ী হবে না। কারণ, মিশিয়ে দেওয়ার ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক কাঠামাে আরও মজবুত হবে। ব্যবসা ও ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা বাড়বে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে তাদের শেয়ার মূল্য বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি।