• facebook
  • twitter
Sunday, 20 July, 2025

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা

তিনি আরও জানান, মধ্যপ্রদেশের এক ছোট উদ্যোক্তা কুমড়ো ও লাউয়ের গুঁড়ো তৈরি করে দেশ-বিদেশে সরবরাহ করে বছরে ৩০০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিলেন।

নিজস্ব চিত্র

ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স সম্প্রতি এক গুরুত্বপূর্ণ শিল্প বৈঠকের আয়োজন করে। সোমবার কলকাতার এক বেসরকারি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় এই বিশেষ আলোচনা সভা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ভারতের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের সচিব সুব্রত গুপ্ত, যুগ্ম সচিব ডি. প্রবীণ, ইনভেস্ট ইন্ডিয়ার সিনিয়র ম্যানেজার দীপ্তি ঠাকুর, আইসিসি-র কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বিভাগের চেয়ারম্যান শ্রীকান্ত গোয়েঙ্কা এবং পরিচালক ড. রাজীব সিংহ। ভারতের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের উন্নয়ন, কৃষকদের আয় বৃদ্ধি এবং অপচয় কমানোর উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় এদিনের বৈঠকে।

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণকে নিয়ে নানা অবৈজ্ঞানিক অতিকথা প্রায়শই শুনতে পাওয়া যায়। এদিনের বৈঠকে এই সম্বন্ধে আলোচনা করতে গিয়ে সুব্রত গুপ্ত বলেন, ‘খাদ্য প্রক্রিয়াকরণকে অনেক সময় ভুলভাবে দেখা হয়। কিন্তু এটি আমাদের সংস্কৃতিরই অংশ। আমাদের ঠাকুমারা আচারের মাধ্যমে খাবার সংরক্ষণ করতেন। অথচ আজ ভারতে উৎপাদিত খাবারের মাত্র ১০ শতাংশ প্রক্রিয়াজাত করা হয়। যার ফলে প্রচুর অপচয় হয় এবং কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পান না। দুধের ক্ষেত্রে ২১ শতাংশ, মাংসে ৩৬ শতাংশ ও ফল-সবজিতে মাত্র ৩৪ শতাংশ প্রক্রিয়াকরণ হয়। এই ব্যবধান পূরণ করা গেলে কৃষকরা লাভবান হবেন এবং সারা বছর মৌসুমী ফল-সবজি সহজলভ্য হবে।’

তিনি আরও জানান, মধ্যপ্রদেশের এক ছোট উদ্যোক্তা কুমড়ো ও লাউয়ের গুঁড়ো তৈরি করে দেশ-বিদেশে সরবরাহ করে বছরে ৩০০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিলেন। তার মতো আরও অনেক উদ্যোক্তার জন্য খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।

ডি. প্রবীণ বলেন, ‘কলকাতা চাল, আনারস, বেগুন, ফুলকপি এবং দার্জিলিং চায়ের জন্য পরিচিত। কিন্তু ভারত এখনও বিশ্বের অন্যতম বড় খাদ্য অপচয়কারী দেশ। তাই, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে শক্তিশালী করা জরুরি।’ তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গে ১৪০ জন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও ১৮০০ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা ১০ হাজার কোটি টাকার ‘পিএমএফএমই’ প্রকল্পের আওতায় সাহায্য পেয়েছেন। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্পদ যোজনায় ৫০টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। যার মধ্যে ৪০টি প্রকল্প ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এতে মোট ৯০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছিল।

গত বছর বিশ্ব খাদ্য মেলায় (ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া) ৮০৯ জন আন্তর্জাতিক ক্রেতা, ১৫০০ প্রদর্শক ও ১০৯টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছিলেন। দীপ্তি ঠাকুর জানান, ২০২৫ সালে এই মেলা দিল্লির প্রগতি ময়দানে ২৫-২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এবছর এটি আরও বড় পরিসরে ১ লক্ষ বর্গমিটার অঞ্চল জুড়ে হবে।

এদিনের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ভারতের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হয়ে উঠতে চলেছে। সরকার ও উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করলে আগামী দিনে দেশের কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে বিপ্লব আসতে পারে।