• facebook
  • twitter
Sunday, 10 August, 2025

কসবাকাণ্ডে সাফাই পুলিসের, পাল্টা চাকরিহারা শিক্ষকরা

চাকরি হারা শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আমাদের হাতে কিছু ছিল না। আমরা সামান্য কয়েকটা দাবি ডি আই অফিসে ক্লিয়ার করতে চাইছিলাম।

গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীর চাকরি বাতিল করা হয়। চাকরি হারানোর প্রতিবাদে জেলায় জেলায় ডি আই অফিস অভিযান করেন চাকরি হারানো শিক্ষকরা। বাকি জেলার মতো কলকাতায় কসবা ডিআই অফিসে গেছিলেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাঁরা চেয়েছিলেন স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে স্মারকলিপি তুলে দিতে কিন্তু স্কুল পরিদর্শক দফতরে অনুপস্থিত ছিলেন। পুলিস সূত্রের খবর তারপরই সেখানে বিক্ষোভ মিছিল এক চরম আকার ধারণ করতে থাকে। শিক্ষকদের সাথে বচসা বাড়তে থাকলে তা পরিণতি পায় হাতাহাতিতে তখনই তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিস। তবে বিক্ষোভকরীদের দাবি পুলিস তাদের ব্যাপক মারধর করে। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটা ভিডিওতে দেখা যায় কাউকে মাটিতে ফেলে আবার কাউকে স্বজোড়ে লাথি মারছে পুলিস। (ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি দৈনিক স্টেটসম্যান)।

এই গোটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতার পুলিস কমিশনার মনোজ ভর্মা সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, পুলিশের কাছে ডিআই অফিসে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার ব্যাপারে আগাম জানানো হয়নি। ‘‘ওই ভাবে লাথি মারা কখনওই কাম্য নয়। পুলিসকর্মীদের বলাই হয়েছিল যাতে এরকম কিছু না ঘটে।’’ সিপি বলেন, যে ছবি-ভিডিয়ো দেখানো হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ নয়। আগে-পিছনে আরও কিছু রয়েছে। পুলিশেরও ছ’জন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চার জন পুরুষ পুলিশকর্মী। দু’জন মহিলা। এক জন সার্জেন্ট গুরুতর জখম। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কমিশনারের সাংবাদিক সম্মেলনের পরেই কলকাতা পুলিসের পক্ষ থেকে সমাজ মাধ্যমে কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ করা হয় যেখানে দেখা যায় যার মধ্যে একটি ভিডিওতে এক প্রতিবাদকারীকে ‘পেট্রল দিয়ে জায়গাটা জ্বালিয়ে দাও’ বলতে শোনা যাচ্ছে।’’

পুলিসের দাবি, ‘‘এই ধরনের অবিরত আগ্রাসী আচরণের মুখোমুখি হয়ে কলকাতা পুলিশ আত্মরক্ষার্থে সামান্য বলপ্রয়োগ করতে এবং উচ্ছৃঙ্খল ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে বাধ্য হয়।’’ চাকরি হারা শিক্ষকরা জানিয়েছেন, “আমাদের হাতে কিছু ছিল না। আমরা সামান্য কয়েকটা দাবি ডি আই অফিসে ক্লিয়ার করতে চাইছিলাম। যেটা কসবায় রয়েছে। আমরা বলতে চাইছিলাম, যোগ্য-অযোগ্য তালিকা আমাদের দিতে হবে। মিরর ইমেজ দিতে হবে। তার থেকেও সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যেটা, আমাদের কাছে খবর ছিল বিভিন্ন স্কুলে নির্দেশ গেছে যে, ২০১৬-র শিক্ষকদের বেতন হোল্ডে রাখার। আমাদের ঢুকতে দিচ্ছিলেন না। যখন আমরা জোরপূর্বক ঢুকি, মেন গেটের সামনে অবস্থান করি, তখন ওরা কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের সরে যেতে বলেন। কিন্তু, সরে না গেলে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পুলিশ সেই সময় নির্বিচারে লাঠিচার্জ শুরু করে। আমার পায়ে লেগেছে।

কসবার ঘটনাকে ‘অনভিপ্রেত’ বলে আখ্যা দিয়েছেন মনোজ পান্থ।তিনি জানান যেন এই ধরণের পরিস্থিতি আর না ঘটে সে দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।কারো উস্কানিতে পা দিয়ে যেন কেউ সরকারি সম্পত্তি নষ্ঠ করা বা তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা না করে, এই ধরণের কাজকে সম্পূর্ণ আইন বিরোধী কাজ বলে মনে বিবেচিত করা হবে।