সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে কর্মরত কয়েক হাজার গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মী। চাকরিহারা গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য মাসিক ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে ওই ভাতা কার্যকর করা হল। ২০১৬ সালে এসএসসি গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র যে কর্মীরা আদালতের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন, তাঁরা যথাক্রমে মাসিক ২৫ এবং ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। রাজ্যের তরফে এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি ইন্টারিম স্কিম, ২০২৫।’
২০১৬ সালের এসএসসির প্যানেলে থাকা প্রায় ২৬ হাজার প্রার্থীর চাকরি বাতিলের নির্দেশের পর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে আন্দোলনে নামেন গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীরাও। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাজে পুনর্বহাল করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই প্রস্তাবে সায় দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। এর পাশাপাশি নতুন নিয়োগের জন্য রাজ্যকে বেশ কয়েক মাস সময় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য আলাদা কোনও নির্দেশিকা দেয়নি কোর্ট। সেই কারণে প্যানেল বাতিল হওয়ায় তাঁরা স্কুলে কাজে যোগ দিতে পারেননি। সরকারের তরফে বেতনও পাবেন না তাঁরা।
Advertisement
এরপর শিক্ষাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ-সহ একাধিক সরকারি আমলা। চলতি মাসের ১৪ তারিখ নবান্ন সভাগৃহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, চাকরি হারানো গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীরা যথাক্রমে ২৫ ও ২০ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা পাবেন। যতদিন না পর্যন্ত আদালতের পরবর্তী রায় আসছে, ততদিন তাঁরা এই ভাতা পাবেন বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লেবার ডিপার্টমেন্টের অধীনে একটি প্রকল্প তৈরি করে এসএসসি ২০১৬ প্যানেলে চাকরি হারানো গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী।
Advertisement
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এখানে কিছু লোক আছে যাঁরা কথায় কথায় পিল খায় আর কিল মারে। চাকরি দেওয়ার মুরোদ নেই কিল মারার গোসাঁই! আমরা ওয়েস্টবেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি ইন্টারিম স্কিমের মাধ্যমেই চাকরি হারানো গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের অনুদান দেব।’ প্রসঙ্গত, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। কিছুদিনের মধ্যেই এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
এদিকে রাজ্যের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সেখানে বলা হয়, সরকারের এই সিদ্ধান্ত বেআইনি। বিষয়টি নিয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। বিচারপতি মামলা দায়েরের অনুমতি দেন। এর মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে রাজ্য জানাল, চাকরিহারাদের প্রতি সংবেদনশীল সরকার। তাই আদালতে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভাতা হিসাবে এই টাকা দেওয়া হবে।
Advertisement



