সােশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর বিকৃত ছবি, লজ্জায় আত্মহত্যা

সােশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল কিশােরীর  বিকৃত ছবি।মেয়ের সম্ভ্রম নষ্টের হুমকি আসছিল।হুমকিকে বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখেছিলেন একাদশ শ্রেণীর ছাত্রীর পরিজনেরা।

Written by SNS Shyamnagar | November 17, 2020 2:59 pm

প্রতিকি ছবি (File Photo: iStock)

সােশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল কিশােরীর  বিকৃত ছবি। তার মেয়ের সম্ভ্রম নষ্ট করার হুমকি আসছিল। সেই হুমকিকে বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখেছিলেন একাদশ শ্রেণীর ছাত্রীর পরিজনেরা। ছুটে গিয়েছিলেন থানায়। জানাতে চেয়েছিলেন অভিযােগ। তবে পুলিশের তরফে কোনও সহযােগিতা করা হয়নি বলেই দাবি ছাত্রীর পরিজনদের। আর অশ্লীল ছবি ভাইরাল হওয়ার লজ্জায় আত্মহত্যার পথই বেছে নিল কিশােরী।

এই ঘটনায় রীতিমতাে উত্তল উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগর। পরিবারের অভিযােগ, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কারণেই তাদের মেয়ে এমন মারাত্মক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অপমানে, লাঞ্ছনায়, আত্মঘাতী হয়েছে কিশােরী।

স্থানীয় সুত্রের খবর, আত্মঘাতী ছাত্রীর হোয়াটসঅ্যাপে গত ৮ নভেম্বর বেশ কিছু বিকৃত ছবি এসেছিল। ছবিতে দেখা যাওয়া মেয়েটির সঙ্গে মুখের আদলে হুবুহু মিল ছিল ওই ছাত্রীর। সঙ্গে সঙ্গেই জগদ্দল থানায় যায় ছাত্রীর পরিবার। পুলিশকে কিশােরী বারবার জানায় যে এই মেয়ে সে নয়। কোনওভাবে কম্পিউটারে গ্রাফিক্সের সাহায্যে সুপার ইম্পােজ করে এই ছবি বানানাে হয়েছে। তারপর তা সােশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে অভিযােগ আনেনি ওই কিশােরী বা তার পরিবার। তবে কেউ যে ইচ্ছে করে জেনেবুঝে এমন কাজ করেছে সে কথা পুলিশকে জানায় তারা।

আত্মঘাতী কিশােরীর পরিবারের অভিযােগ, পুলিশ তাদের কথা শুনেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। দায়সারা ভাবে এড়িয়ে গিয়েছিল। কোনও গুরুত্বই দেওয়া হয়নি তাদের অভিযােগে। অপরাধীদের খুঁজে বের করার বদলে পুলিশ কর্তব্যে গাফিলতি করেছে, এমন অভিযােগই এনেছে মৃতার পরিবার। আর পুলিশের এমন আচরণের কারণেই কিশােরী আত্মঘাতী হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার।

জানা গিয়েছে, গারুলিয়া গার্লস স্কুলের ছাত্রী ছিল এই কিশােরী। সােমবার সকালে তার দেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। শেষ পর্যন্ত, সেদিন ডিউটিতে থাকা পুলিশ আধিকারিককে কর্তব্যে গাফিলতির জন্য উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে, প্রয়ােজনে সাসপেন্ড করা হবে, এইসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিশােরীর মৃতদেহ উদ্ধার করে জগদ্দল থানার পুলিশ। এরপরে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানাে হয়।

ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃতার পরিবার এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলছে তারা। এই ঘটনার পিছনে কে বা কারা জড়িত রয়েছে তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকরা।