রণক্ষেত্র গঙ্গারামপুর, মিছিলে বাধা দেওয়ায় রক্তাক্ত পুলিশ

বিজেপি’র ধন্যবাদ জ্ঞাপন মিছিল ঘিরে পুলিশের সঙ্গে কর্মী-সমর্থকদের খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল গঙ্গারামপুর। শনিবার গঙ্গারামপুরে বিজেপি’র মিছিল আটকাতেই ধুন্ধুমার বেধে যায়।

Written by SNS Balurghat | June 9, 2019 3:38 pm

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র (Photo: IANS)

বিজেপি’র ধন্যবাদ জ্ঞাপন মিছিল ঘিরে পুলিশের সঙ্গে কর্মী-সমর্থকদের খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল গঙ্গারামপুর। শনিবার গঙ্গারামপুরে বিজেপি’র মিছিল আটকাতেই ধুন্ধুমার বেধে যায়। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করা মাত্রই পুলিশের ওপর যথেচ্ছ ইটবৃষ্টি করে উত্তেজিতরা। ইটের ঘায়ে মাথা ফেটে রক্তাক্ত হয়ে যান গঙ্গারামপুর থানার এসআই বিভু ভট্টাচার্য। ঘটনায় মুখ ফেটে যায় ব্রতময় সরকার নামে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে পড়ে যে পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর চালায় বিজেপি’র কর্মী-সমর্থকরা। সব মিলিয়ে জেলাজুড়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ছােড়া হয় টিয়ার সেল।

ঘটনায় আহত গঙ্গারামপুর থানার আইসি গৌতম রায়, এসআই বিভু ভট্টাচার্য, দেবব্রত মিশ্র সহ বেশ কয়েকজন পুলিশ ও সিভিক হাসপাতালে ভর্তি। পাশাপাশি পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত বিজেপির বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থকদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এবারের লােকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছে বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। জেলা সংগঠনের ডাকে এদিন দক্ষিণ দিনাজপুরে নাগরিক অভিনন্দন সভা করতে আসেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষ। এদিন কুশমণ্ডি হয়ে বুনিয়াদপুরে পৌঁছান দিলীপ। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে হেঁটে বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ডে এসে সভা করেন তিনি। দলের জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকার সহ তার সঙ্গে ছিলেন বালুরঘাটের নবনির্বাচিত সাংসদ সুকান্ত মজুমদার এবং অন্যান্য জেলা নেতৃত্ব।

বিজেপি মিছিলের প্রস্তুতি নিলেও আগে থেকে জেলায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় শুরুতেই বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশ আধিকারিকরা ওই নির্দেশের কাগজও দেখান বিজেপি সভাপতিকে। যদিও সেই নির্দেশকে তােয়াক্কা না করেই দলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে হেঁটে বাসস্ট্যান্ডে যান দিলীপবাবু। সেখানে একটি সভা করেন তিনি বুনিয়াদপুবের পর গঙ্গারামপুরেও তাকে আটকায় পুলিশ। ১৪৪ ধারা জারি থাকায় মিছিল করা যাবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের তরফে। নিষেধ সত্ত্বেও বিজেপি’র কর্মী-সমর্থকরা মিছিল করতে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পলিশের ওপর শুরু হয় ইটবৃষ্টি। পুলিশের চারটি গাড়ি ভাঙচুর করে উত্তেজিতরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শূন্যে গুলি চালায় পুলিশ বলে অভিযােগ। যার পর দুপুর ২টো নাগাদ ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। নতুন করে পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষ শুরু হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চার্জ করে পুলিশ শুন্যে চার রাউন্ড গুলিও চালায় বলে অভিযােগ। এই ঘটনায় মােট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিজে উপস্থিত হয়ে পুরাে বিষয়টির ওপর নজর রাখছেন পুলিশ সুপার প্রসূন ব্যানার্জি। জেলা পুলিশসুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মিছিলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হলেও ইট-পাটকেল ছােড়া হয়। ইটের আঘাতে পুলিশের চার কর্মী আহত হয়েছেন। এব্যাপারে এখনও পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে কারা জড়িত।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষ জানিয়েছেন, তৃণমূলে আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই হামলা চালিয়েছে। পুলিশ শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠিচার্জ করে পরিকল্পিতভাবে অশান্তির সৃষ্টি করে বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপানাের চেষ্টা করছে। রাত পােহালেই মিছিল করা যাবে না, এমন ফরমান আমরা মানি না। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘােষ জানিয়েছেন, বিজয় মিছিলের নামে অসভ্যতা শুরু হয়েছে। গঙ্গারামপুরের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দাজনক। রাজ্যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে বিজেপি।