কেন্দ্রীয় বাজেট ফেসলেস, বেসলেস, অ্যাকশনলেস : পার্থ চট্টোপাধ্যায়

কেন্দ্রীয় বাজেটকে দিশাহীন, ভিত্তিহীন, কার্যকারিতাহীন বললেন তৃণমূলের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Written by SNS Kolkata | July 7, 2019 10:43 am

পার্থ চট্টোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

কেন্দ্রীয় বাজেটকে দিশাহীন, ভিত্তিহীন, কার্যকারিতাহীন বললেন তৃণমূলের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। লােকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মােদি তরুণ প্রজন্ম, কৃষকদের যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তার কোনও প্রতিফলনই নেই এবারের বাজেটে।

এছাড়া বাজেটে বেশ কিছু ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে, তাই এই বাজেট ভিত্তিহীন। তাছাড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য নতুন নতুন প্রকল্প বাজেটে থাকে, গত পনেরাে বছরের মধ্যে এবারের বাজেটে তার পরিমাণ সবচেয়ে কম। তাই এই বাজেট কার্যকারিতাহীন।

শুক্রবার কেন্দ্রীয় বাজেটকে এভাবেই ব্যাখ্যা করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দ্বিতীয়বার নির্বাচনে জিতে আসার পর মােদি সরকারের বাজেটে তাঁর নির্বাচনী আশ্বাসের ছিটেফোঁটাও নেই সেকথা বলে মােদি সরকারের সমালােচনা করলেন পার্থবাবু। যতটা উৎসাহ নিয়ে ভারতের জনগণ কেন্দ্রীয় সরকারকে জয়ী করেছে, তাদের আশার বেলুন ফুটো হয়ে গিয়েছে।

সব চেয়ে বড় কথায়, এবারের বাজেট সবচেয়ে হতাশ করেছে করদাতা মধ্যবিত্তকে। অনেকেরই আশা ছিল বাজেটে এবার করছাড়ের উধ্বসীমা বাড়ানাে হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি, যদিও গৃহঋণের সুদে ছাড়ের উর্ধ্বসীমা বাড়ানাে হয়েছে। পেট্রোপণ্যের ওপর সেস বসানাের কথা বলা হয়েছে এবারের বাজেটে। যার অর্থ সমস্ত অত্যাবশকীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি।

নির্বাচনের আগে তরুণ প্রজন্মকে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন কর্মসংস্থানের। স্বাধীনতার পর থেকে মােদি সরকারের আমলেও বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি হয়েছিল। তাই অনেকেই আশা করেছিলেন, এবারের বাজেটে কর্মসংস্থানকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

মহারাষ্ট্রে কৃষকদের আত্মহত্যার ঘটনা, কৃষকদের আয়বৃদ্ধি না হওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিধেছিল বিরােধীরা। তাই এবারের বাজেটে কৃষি ও কৃষকদের সুযােগ সুবিধের বিষয় নিয়েও স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ অর্থাৎ তপশিলি জাতি, উপজাতি, সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের বিষয়টিও এই বাজেটে বলা নেই।

পার্থবাবুর মতে, বাজেটে বেশ কিছু অসংগতি লক্ষ করা গিয়েছে। যেমন পরিকাঠামাে উন্নয়নে একশ লক্ষ কোটি টাকা লগ্নির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কোন কোন খাতে সেই টাকা কাজে লাগানাে হবে তার কোনও উল্লেখ নেই।

ব্যাঙ্কগুলিকে উৎসাহিত করা হয়েছে নন ব্যাঙ্কিং ফিনানসিয়াল করপােরেশনগুলিকে অ্যাসেট হিসেবে বিবেচনা করতে। যা আসলে চিট ফান্ডগুলিকে মদত দেওয়ার উদ্দেশে বলেই মনে করা হচ্ছে। একদিকে ব্যাঙ্ককে চাঙ্গা করার জন্য অর্থসাহায্য করা হচ্ছে, অন্যদিকে ব্যাঙ্কগুলিকে নন ব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থাগুলিকে আশ্রয় দিতে বলা হচ্ছে। এই ধরনের বিষয় বাজেটে নানান প্রশ্নচিহ্নের সামনে ফেলে দিয়েছে।

চার চাকা এবং দু চাকার গাড়ির ব্যবসা যথাক্রমে ১৬ শতাংশ এবং ১১ শতাংশ কমছে। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে। যা কোনও স্বাস্থ্যকর বাজেটের লক্ষণ নয়। পাবলিক সেক্টর ইউনিটগুলিকে চাঙ্গা করার কোনও ঘােষণা এবারের বাজেটে নেই।

এছাড়া নতুন কোনও প্রকল্পখাতে বরাদ্দ বাড়ানাে হয়নি এবারের বাজেটে। স্টার্ট আপ প্রকল্পেরও উল্লেখ নেই, এবারের বাজেটে। তাই তৃণমূলের অভিমত, বাজেটে সংস্কারের কোনও সাহসী পদক্ষেপ নেই।

বাজেটের প্রতিক্রিয়া দিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বাজেটে বাংলাকে বঞ্চনাই করা হয়েছে। পেট্রোল ও ডিজেলে সেস বাড়িয়ে এখন থেকে আরও বেশি টাকা আদায় করা হবে রাজ্য থেকে। কিন্তু রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ না বাড়িয়ে, কমানােই হচ্ছে।

ঋণমকুব করার কথাও বলা নেই এবারের বাজেটে। রাজ্যের মেট্রো প্রকল্পগুলি সম্প্রসারণের কোনও উল্লেখ নেই এবারে বাজেটে। মােট কথা, রাজ্য তাে নয়ই, গােটা দেশের মানুষের কাছেই বাজেট কোনও আশার বাণী বয়ে আনেনি বলেই অভিমত পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।