মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের তরফে নয়া নির্দেশিকা রাজ্য মন্ত্রিসভার সহকর্মীদের জন্য। এবার থেকে মন্ত্রীরা কোন অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন, তা আগে জানাতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরকে। শুধু অগ্রিম জানানোই নয় মন্ত্রীদের অনুষ্ঠানে যোগদানের ছাড়পত্র মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এলে তবেই তাঁরা সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর সূত্রে কড়া নির্দেশিকা, কোন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হবে বা কোথায় তাঁদের উপস্থিতি প্রয়োজন, তা আগে খতিয়ে দেখবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। তার পরে সেই সংক্রান্ত ‘অনুমোদন’ পেলে তবেই অনুষ্ঠানে যোগদান, নচেৎ নয়। নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের শুরু থেকেই এই নির্দেশ কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে মন্ত্রীদের।
নবান্ন সূত্রে খবর, সম্প্রতি এক মন্ত্রীর একটি অনুষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরির পরই এই নির্দেশিকা। জানা গিয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে মন্ত্রীকে মঞ্চে উঠে সংবর্ধনা জানান এক ব্যক্তি। বিতর্ক সেই ব্যক্তিকে ঘিরেই। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক প্রতারণার মামলা থাকায় দলের অন্দরে অনেকেই এই সংবর্ধনা এবং মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে সেই ব্যক্তির উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সেই সংবর্ধনার বেশ কিছু ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী জানতে পেরে বেজায় বিরক্ত। গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করেন ওই মন্ত্রী-সহ তাঁর বাকি সতীর্থদের। সঙ্গে নির্দেশ দেন, কোন মন্ত্রী কোথায় যাচ্ছেন এবং কোন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন, তা আগে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরকে জানাতে হবে। নতুন বছর থেকেই এই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
এই নির্দেশিকার মধ্যে ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচনে দলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখার চেষ্টা বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। নির্বাচনের আগে রাজ্য মন্ত্রিসভার কোনও সদস্য যাতে অযথা কোনও বিতর্কে জড়িয়ে না পড়েন, সে বিষয়ে এখন থেকেই তাঁদের সতর্ক করতে সব রকম চেষ্টা করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তাই নতুন বছরের গোড়া থেকেই দল তথা প্রশাসনকে তিনি শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে চান।
Advertisement
সম্প্রতি তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, দলবিরোধী কোনও কাজ করলে যে কোনও স্তরের নেতাকে শো-কজ করবে দল। শুধু শো-কজ নয়, পর পর তিন বার কোনও নেতা একইভাবে সতর্কবাণীর মুখে পড়লে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করার কথা দ্বিতীয়বার ভাববে না দল।
পাশাপাশি, দলের প্রথম সারির নেতাদের একাংশের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশে আরেকটা দিক স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগে অতীতে যেভাবে দলের প্রথম সারির নেতাদের নাম জড়িয়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে এবার দলনেত্রী সে ব্যাপারে আগে-ভাগেই সজাগ।
Advertisement



