তৃণমূলের বিধায়ক ও এক প্রাক্তন বিধায়ক বিজেপিতে

রাজ্যের তিন বিধায়কের পর বীরভূমের এক বিধায়ক ও এক প্রাক্তন বিধায়ক যােগ দিলেন বিজেপিতে। তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের গড়ে এবার থাবা বসালাে বিজেপি।

Written by SNS Birbhum | May 30, 2019 1:59 pm

অনুব্রত মণ্ডল (Photo: Indrajit Roy/IANS)

রাজ্যের তিন বিধায়কের পর বীরভূমের এক বিধায়ক ও এক প্রাক্তন বিধায়ক যােগ দিলেন বিজেপিতে। তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের গড়ে এবার থাবা বসালাে বিজেপি।

এই ঘটনায় রীতি মতাে শােরগােল পড়ে গেছে জেলার রাজনীতিতে। দলকে সামাল দিতে রীতি মতাে বিড়ম্বনায় তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, বীরভূম জেলা থেকে শুধু দুই বিধায়কই বিজেপির সাথে যােগাযােগ শুরু করেছেন একাধিক তৃণমূল নেতারা।

বিশেষ সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, সাঁইথিয়ার এক হেভি ওয়েট নেতা মঙ্গলবার আসানসােলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র সাথে বৈঠক এবং। বিজেপিতে যােগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। যদিও এখনই তাঁকে নেওয়া হবে কিনা সেই নিয়ে প্রশ্ন জিইয়ে রেখেছে বিজেপি নেতৃত্ব।

দীর্ঘদিনের বিবাদ ছিল নানুরের দুই তৃণমূল নেতা গদাধর হাজরা ও কাজল শেখের লােকসভা নির্বাচনে জেলায় ভরডুবির পর তৃণমুল সুপ্রিমাে নেতাদের সঙ্গে একটি জরুরি বৈঠক করেন গত ২৬ মে। পরের দিন অর্থাৎ ২৭ মে অনুব্রত মন্ডলের বাড়িতে দেখা যায় নানুরের বিক্ষুব্ধ নেতা কাজল শেখকে।

প্রসঙ্গত, এই কাজলের সঙ্গে অনুব্রত মন্ডলের সম্পর্ক ভাল নয়। সেই কারণে নানুরের দুই তৃণমূল নেতার মধ্যে বিবাদ ও এলাকায় সংঘর্ষ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। এক সময় মুখ্যমন্ত্রী বীরভূমে একটি প্রশাসনিক বৈঠকে কাজলকে নিয়ে মুখ খুলে বলেন, কাজলকে নাকি পুলিশ খুঁজছে। তাঁকে দুরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন মুখ্যমন্ত্রী।

কিন্তু তারপরও পরিস্থিতি শােধরায়নি। নানুরের তৃণমূল প্রার্থী প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরাকে হারিয়ে দেওয়ার পিছনে কাজল শেখেরই মুখ্য ভূমিকা ছিল বলে রাজনৈতিক মহলে শােনা যায়।

নানুরে তৃণমুলের এই গােষ্ঠী কোন্দলের জেরে জিতে যায় সিপিএম। এরপর লােকসভা নির্বাচনেও নানুরে ফল খারাপ করে তৃণমূল। তাই এবার সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই ২৭ তারিখ অনুব্রতর বাড়িতে দীর্ঘ দিন পর দেখা গেল কাজল শেখকে।

বৈঠকের পর কাজল, অনুব্রত সম্পর্কে সংবাদ মাধ্যমের কাছে কোনও অসন্তোষ প্রকাশ করেননি। বরং তিনি বলেছিলেন সম্পর্ক খুব ভাল। মুখ্যমন্ত্রীর সাথে তাঁর নিয়মিত যােগাযােগ আছে।

এই ঘটনার একদিন পরই জেলা তৃণমূলের রাজনীতিতে দেখা গেল উলট পুরাণ। অনুব্রত ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন বিধায়ক তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যােগ দিলেন। নির্বাক জেলা নেতৃত্ব।

অন্যদিকে একই সঙ্গে বিজেপিতে যােগ দিলেন লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। সুত্রের খবর মনিরুল অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দলের কোনও কাজে দেখা যায়নি। এমন কি এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজও নিয়ন্ত্রণ করতেন জেলা নেতৃত্ব।

মনিরুল প্রকাশে মুখ না খুললেও ঘনিষ্ঠদের মুখে ক্ষোভ শােনা গেছে। এমনকি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে লাভপুরের প্রার্থী হিসাবে তৃণমূলের সহ সভাপতি রানা সিংহকে দেখা যেতে পারে বলে শােনা যায়। মনিরুল ঘনিষ্ঠদের কথায় তৃণমূলে থেকে প্রায় নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এসেছিল মনিরুলের। তাই এবার সময় থাকতেই বিজেপিতে যােগ দিলেন।

এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সাফ জানিয়ে দেন, আমি এই ব্যাপারে কিছু বলব না। এরপরই ফোন বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।

নানুরের তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরা এবং লাভপুরের তৃণমূল। বিধায়ক মনিরুল ইসলামের বিজেপিতে যােগ দেওয়ার ঘটনায় খুশি নন। বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় সহ তাঁর অনুগামীরা। এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে রামকৃষ্ণ রায় বলেন, যেটাই হল ঠিক হল না। এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি এই টুকুই বলব আজ। বাকি যা বলার শনিবার বলব।

কেন তিনি তৃণমূলের দুই নেতার বিজেপিতে যােগ দান নিয়ে খুশি নন সেই প্রশ্ন উত্তর দিতে এড়িয়ে যান তিনি। তবে শনিবারের মধ্যে বিজেপিতে এমন কি ঘটনা ঘটতে চলেছে যার জন্য তাঁর প্রতিক্রিয়া দিতে তাঁকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে সেই নিয়ে অপেক্ষায় রাজনৈতিক মহল।